Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

চিকিৎসক হতে চায় দিলরুবা

দার্জিলিং জেলার তথা শিলিগুড়ির একটি গ্রামের স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে মেধা তালিকায় দশম স্থান পেয়ে নডর কাড়ল কাজি দিলরুবা খানম। শিলিগুড়ির বিধাননগরে মুরলিগঞ্জ হাই স্কুলের বিজ্ঞানের ওই ছাত্রী ৪৮০ পেয়েছেন।

মিষ্টিমুখ: দিলরুবাকে আদর পরিজনদের। নিজস্ব চিত্র

মিষ্টিমুখ: দিলরুবাকে আদর পরিজনদের। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৭ ০২:৩৬
Share: Save:

গ্রামের বাড়ি থেকে ১২৫ কিলোমিটার দূরে স্কুলে এসে এদিন রেজাল্ট নেওয়া এবং বন্ধুদের সঙ্গে খুশিতে সামিল হওয়া হয়ে ওঠেনি বটে। তবে ফল ঘোষণা হতেই বাড়িতেই পড়শি থেকে চেনাপচিরিতদের ভিড়, মোবাইলে ঘনঘন অভিনন্দন জানানো, মিষ্টি মুখ করানোর পালাতে মেতে ওঠে গোটা পরিবার।

দার্জিলিং জেলার তথা শিলিগুড়ির একটি গ্রামের স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে মেধা তালিকায় দশম স্থান পেয়ে নডর কাড়ল কাজি দিলরুবা খানম। শিলিগুড়ির বিধাননগরে মুরলিগঞ্জ হাই স্কুলের বিজ্ঞানের ওই ছাত্রী ৪৮০ পেয়েছেন। দিলরুবার বাড়ি অবশ্য আলিপুরদুয়ারের রাঙালিবাজনার দক্ষিণ খয়েরবাড়ি গ্রামে। মা তানজিয়া খাতুন শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের সহায়িকা। বাবা কাজি নুরুন নবী খয়েরবাড়ি হাই মাদ্রাসার করণীক। আর বিঘে পাঁচেক জমি রয়েছে। তাতে সামান্য চাষ আবাদ করেন। তা দিয়েই তিন মেয়েকে পড়াশোনা করিয়ে বিয়ে দিয়েছেন। ছোট মেয়ে দিলরুবাকেও কষ্ট করেই পড়াশোনা চালাতে হয়েছে।

মাধ্যমিকে মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে রাজ্যে তৃতীয় হয়ে দিলরুবা নজর কেড়েছিলেন বাবা যেখানে চাকরি করেন সেই স্কুল থেকেই। এর পর রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক পর্যদের অধীনে পড়াশোনা শুরু। মুরলিগঞ্জ হাই স্কুলে ভর্তি হন একাদশ শ্রেণিতে। থাকতেন শিলিগুড়ির ইস্কনমন্দির রোড়ে আল আমিন মিশনে। প্রতিমাসে অন্তত হাজার ছয়েক টাকা খরচ। মিশনের উদ্যোগে গৃহ শিক্ষকরা সেখানে পড়াশোনা করান। বিজ্ঞানের প্রাকটিক্যাল এবং অন্যান্য ক্লাস করতে স্কুলে মাঝেমধ্যে যেতেন।

মুরলিগঞ্জ ওই স্কুলের নাম ইতিমধ্যেই পরিচিতি লাভ করেছে। ২০১৩ সালে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলের মান বিচার করে তাদের যামিনী রায় পুরস্কার দেওয়া হয়। স্কুলের পরিবেশ, পড়াশোনার পদ্ধতি নিয়ে তৈরি হয়েছিল তথ্যচিত্র। দিলরুবার ফলাফলে ফের সেই স্কুলের নাম উঠে আসায় খুশি শিক্ষক-পড়ুয়ারা সকলেই। প্রধান শিক্ষক সামসুল হক বলেন, ‘‘যে দিন ভর্তি হতে এসেছিল সে দিন দিলরুবা এবং তার পরিবার জানিয়েছিল পড়াশোনাকে নিয়েই তার জীবন যুদ্ধ।’’ বাংলা, ইংরেজিতে দিলরুবা পেয়েছে ৯১ এবং ৯৭। রসায়নে ৯৩, অঙ্কে ৯৯, ফিজিক্সে ৯২, বায়োলজিতে ৯৯।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE