দেবাশিস প্রামাণিকের বাড়ি। ছবি: স্বরূপ সরকার
শিলিগুড়ি কর্মাস কলেজে পড়ার সময় থেকেই টুকটাক ব্যবসায় হাতেখড়ি। তার পরে, তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের শুরুতে ঠিকাদারিতে হাত পাকানোর পর থেকে আর বিশেষ পিছন ফিরে তাকাননি জমি দখলের চেষ্টার মামলায় ধৃত তৃণমূলের ‘দাপুটে’ নেতা দেবাশিস প্রামাণিক। বরাবর কংগ্রেসি ঘরানায় থেকেও বাম আমলেও তিনি সব মহলে স্বাভাবিক ছন্দে ব্যবসা চালিয়ে গিয়েছেন। বেড়েছে সম্পত্তি এবং দলে প্রভাবও। কংগ্রেস বা তৃণমূলের ব্লক সভাপতি থেকে পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি হয়ে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ অবধি হয়েছেন দেবাশিস।
বুধবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে গ্রেফতারের আগেও ফুলবাড়ির বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া প্রাসাদসম বাড়ি ‘প্রামাণিক ভিলা’য় বসে ‘মানুষ দরবার’ চালিয়ে গিয়েছেন দেবাশিস। কিন্তু এ বার দেবাশিসের তৈরি সাম্রাজ্যের কী হবে, তা নিয়ে দলে শুরু হয়ে জোর আলোচনা। দলের নেতাদের একাংশ দাবি করছেন, শতাধিক কোটি টাকার মালিক দেবাশিস। রাজ্য স্তরের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ। কংগ্রেসে থাকার সময় কেন্দ্রীয় নেতারা উত্তরবঙ্গে এলে তাঁর বাড়িতে খেতে যেতেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, তিস্তা ব্যারাজের পরে ফুলবাড়ি জল প্রকল্প ঘিরে কাজকর্ম, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে একচেটিয়া ঠিকাদারি করে বেড়ে ওঠেন দেবাশিস। ফুলবাড়ি টোলগেটের বরাতের পরে পূর্ত এবং অন্য দফতরের ঠিকাদারির ব্যবসা ফুলেফেঁপে ওঠে। বর্তমানে ‘মহাদেব কনস্ট্রাকশন’ নামের তাঁর ঠিকাদার সংস্থা সেবক রোডের প্রায় ১৪ কোটি টাকার সম্প্রসারণের কাজ করছে।
বাইপাসের দিকে রাস্তা নিম্ন মানের হয়েছে অভিযোগে ২০১৬ সালে মুখ্যমন্ত্রী ‘উত্তরকন্যা’য় বসে তৎকালীন এক রাজ্য পুলিশের কর্তাকে দেবাশিসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন। দল সূত্রের দাবি, সে যাত্রায় বিভিন্ন স্তরে ধরাধরি করে রেহাই পান এই নেতা। মিটিং-মিছিলে লোক আনা, বিভিন্ন খরচ বহন থেকে দলের কাজকর্ম একা হাতেই করতেন।
সূত্রের দাবি, দলে দেবাশিস শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে বরাবর পরিচিত। যদিও গ্রেফতারের পর থেকে দেবাশিসকে নিয়ে কিছু বলতে চাননি তিনি। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘গত বিধানসভা ভোটে এলাকার আসনে হারের পর থেকে ওর সময় ভাল যাচ্ছিল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy