দগ্ধ: এনজেপিতে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া ট্যাঙ্কার। নিজস্ব চিত্র
এনজেপি-র ইন্ডিয়ান অয়েলের টার্মিনালের সামনে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের তদন্তভার গোয়েন্দা শাখার (ডিডি) হাতে তুলে দেওয়া নির্দেশ দিলেন শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার। তেমনই, কলকাতার ফরেন্সিক টিমও ঘটনাস্থলে আসছে। শনিবার রাতে টার্মিনালের সামনের রাস্তায় সারি দিয়ে দাঁড় করানো ট্যাঙ্কারগুলি থেকে আগুন ছড়ায়। ছ’টি ট্যাঙ্কার আগুনে পুড়ে যাওয়া ছাড়াও লাগোয়া বস্তিতেও আগুন ছড়ায়। ইন্ডিয়ান অয়েলের টার্মিনাল, পাইপলাইনের কথা ভেবে শহরের একাংশে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল।
পুলিশ সূত্রের খবর, চোরাই তেলের কারবার করতে গিয়েই যে আগুন লেগে গিয়েছিল, তা প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ ও দমকলের কাছে পরিষ্কার হয়েছে। রাতেই বস্তির ভিতর থেকে একাধিক ড্রামে চোরাই তেলের হদিশ মেলে। সামনের রাস্তায় ট্যাঙ্কারগুলি দাঁড়িয়ে ছিল। কুপি, বিড়ি বা রান্নার স্টোভ থেকে আগুন ছড়ায় বলে অনুমান। রাতেই ইন্ডিয়ান অয়েল এবং দমকলের তরফে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। গভীর রাতে কমিশনার তদন্তভার ডিডি-কে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
পুলিশ কমিশনার নীরজকুমার সিংহ বলেন, ‘‘বেআইনি কিছু কাজকর্ম তো হয়েছেই। দু’টি অভিযোগ জমা পড়েছে। ওই এলাকায় তেলের বেআইনি কারবারের একটা অভিযোগ দীর্ঘ দিন ধরে রয়েছে। আমরা বিষয়টি দেখছি।’’ তিনি জানান, আগুনের ঘটনার তদন্ত গোয়েন্দা শাখা করবে। ফরেন্সিক টিমও আসছে। এই বিভিন্ন সংস্থার রিপোর্টে কেউ দোষী বলে চিহ্নিত হলে, তাঁর বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: মসুলের জেলে ৩৯ ভারতীয়, ধারণা সুষমার
ইন্ডিয়ান অয়েল এবং পুলিশ সূত্রের খবর, যে ছয়টি ট্যাঙ্কারে আগুন ধরে তার একটি ভুটানের, একটি অসমের। বাকি চারটি স্থানীয় হলেও বর্তমানে ইন্ডিয়ান অয়েলের তালিকাভুক্ত নয়। ভুটানের ট্যাঙ্কার রাঙাপানি এবং অসমের ট্যাঙ্কার গুয়াহাটি থেকে এসেছিল। কিন্তু ওই এলাকায় তাদের আসার কথা নয়। আর একটি ট্যাঙ্কারে পেট্রোল থাকলেও সেটি কোথা থেকে তেল এনেছিল, তা পরিষ্কার নয়। ঘটনার পর থেকে চালকদের খোঁজ শুরু করা হয়েছে। বাকি ট্যাঙ্কারগুলি প্রায় ফাঁকাই ছিল।
তদন্তকারীরা জানান, চারটি দমকলের ইঞ্জিন, ইন্ডিয়াল অয়েলের জলের একাধিক পাম্প ও ৪ হাজার লিটার ফোম দিয়ে ঘন্টা চারেক লাগে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে। ঘটনার আগে ট্যাঙ্কারগুলির আশেপাশে থাকতে এক দল যুবককে দেখা গেলেও ঘটনার পর থেকে তাদের খোঁজ নেই। রাতেই পুলিশ এলাকাটি ঘিরে ফেলে। এ দিন সকাল থেকে এলাকা পুরোপুরি পুলিশের দখলে। দু’পাশে ব্যারিকেড করে রাস্তাও বন্ধ করা হয়। ইন্ডিয়ান অয়েলের টার্মিনালের বাইরে পার্কিং করার নিয়ম না থাকলেও তেলের কারবারের জন্য কিছু ট্যাঙ্কার সেখানে দাঁড়ায় বলে অভিযোগ। সংস্থার তরফেও পুলিশ-প্রশাসনের কাছে বাইরের রাস্তায় ট্যাঙ্কার দাঁড়ানো বন্ধ করতে ফের অনুরোধ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy