—প্রতীকী ছবি
এ যেন সিনেমার দৃশ্য। অভিযানে বেরনোর ঠিক আগে ফোনে দুষ্টচক্রের কাছে বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন কোনও পুলিশকর্মী। পুলিশ পৌঁছনোর আগেই তা-ই বেপাত্তা অপরাধীরা।
অভিযোগ, কোচবিহার পুলিশের ‘ক্রাইম ব্রাঞ্চ’-এ খোঁজ মিলেছে তেমনই এক কনস্টেবলের। অন্তত পক্ষে দশটি অভিযান ব্যর্থ হওয়ার পরে, ‘ক্রাইম ব্রাঞ্চ’ বুঝতে পারে, তাদের দফতরের গোপন তথ্য বাইরে পাচার হয়ে যাচ্ছে। তথ্য ফাঁসের পিছনে কে রয়েছে, সেই খোঁজে নেমে ব্রাউন সুগার-সহ হাতেনাতে ওই কনস্টেবলকে পাকড়াও করা হল। সোমবার সন্ধ্যায় কোচবিহার কোতোয়ালি থানার আশ্রম ঘাট থেকে ওই কনস্টেবল-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃত কনস্টেবলের নাম শেখ আজিজুল। অন্য জনের নাম শেখ শাহবাজ। দু’জনের বাড়ি মালদহের রতুয়ার বাহারাল-সাহাপুরে। শাহবাজ সম্পর্কে আজিজুলের শ্যালক। পুলিশের দাবি, ধৃতদের কাছ থেকে একশো গ্রামের বেশি ব্রাউন সুগার উদ্ধার করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য দেড় লক্ষ টাকার মতো।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, টাকার লোভে ব্রাউন সুগার পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন ওই কনস্টেবল। অভিযুক্তদের বুধবার আদালতে পেশ করে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য জানান, ধৃতদের তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাগরাজ দেবরাকোন্ডা বলেন, “ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাতে আরও নতুন তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শেখ আজিজুল বছর তিরিশের যুবক। বছর চারেক আগে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি পান তিনি। এক বছর আগে, কোচবিহার ক্রাইম ব্রাঞ্চের সদস্য করা হয় তাঁকে। অভিযোগ, তার পর থেকেই একাধিক অভিযান ব্যর্থ হতে শুরু করে ক্রাইম ব্রাঞ্চের। তার মধ্যে সবগুলিই ‘ব্রাউন সুগার’ সম্পর্কিত ঘটনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্রাইম ব্রাঞ্চের এক অফিসার জানান, বেশ কয়েকটি ঘটনায় নির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়ে অভিযান শুরু করা হয়। ওই অভিযানের প্রত্যেকটিতে শামিল ছিলেন আজিজুল। কিন্তু নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছনোর আগেই দেখা যায়, দুষ্কৃতীরা পালিয়ে গিয়েছে। তাদের মোবাইলও বন্ধ। ওই অফিসার বলেন, “অনেক ক্ষেত্রে আমরা গ্রাহক সেজে অভিযান করি। কিন্তু দেখা যায়, আগে থেকেই সব জেনে যাচ্ছে দুষ্কৃতীরা।” তখনই সন্দেহ দানা বাঁধে, পুলিশকর্মীদের মধ্যে থেকেই পাচার করে দেওয়া হচ্ছে অভিযানের তথ্য।
পুলিশ সূত্রের দাবি, ‘ব্রাউন সুগারের’ কারবারের কথা ভাবতেই প্রথম নাম আসে মালদহের। আর তাতেই সন্দেহের ঘেরাটোপে পড়ে যান আজিজুল। তাঁর মোবাইলে ফাঁদ পাততেই উঠে আসে একের পরে এক তথ্য। সে সূত্রেই ওই দিন রাতে আশ্রমঘাটে ফাঁদ পাতে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। ব্রাউন সুগার-সহ গ্রেফতার করা হয় দু’জনকে। রতুয়ায় বেশ অবস্থাপন্ন আজিজুলের পরিবার। বেশ কিছু জমিজমাও রয়েছে তাঁদের। কিন্ত আজিজুল ব্রাউন সুগারের কারবারের সঙ্গে জড়িত তা বিশ্বাস করতে পারছেন না গ্রামবাসীরা।
তথ্য সহায়তা: বাপি মজুমদার
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy