প্রতীকী ছবি।
শবযাত্রার ‘হরিধ্বনি’ শুনতে পেলেই ভয়ে কাঁটা হয়ে যাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। খাওয়া দাওয়া লাটে উঠছে। ছেলেপুলে নিয়ে ঘর ছেড়ে পালিয়ে অপেক্ষাকৃত দূরে চলে যাচ্ছেন বাড়ির লোকজন। ভুতের ভয়ে নয়—মৃতদেহ পোড়ানোর দুর্গন্ধে।
উদ্বোধনের সাত দিনের মধ্যেই বৈদ্যুতিক চুল্লি অকেজো হয়ে পড়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের খিদিরপুর মহাশ্মশানে। ১৫ নভেম্বর বালুরঘাট পুরসভা পরিচালিত নবনির্মিত ওই বৈদ্যুতিক চুল্লির উদ্বোধন করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা। তার দফতর থেকে চুল্লিটি তৈরির জন্য প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে।
চালুর পরেই ওই বৈদ্যুতিক চুল্লি দিয়ে অল্প পরিমাণে ধোঁয়া বের হচ্ছিল বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। তাতেই শ্মশান লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা চরম নাকাল হচ্ছিলেন। বুধবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ খিদিরপুর মহাশ্মশানে দাহ করার জন্য একটি মরদেহ চুল্লিতে ঢোকানোর পরই পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। নবনির্মিত চুল্লিভবন থেকে প্রচণ্ড ধোঁয়া বের হতে থাকে। ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারপাশ। শবপোড়ার দুর্গন্ধে বাসিন্দাদের তখন প্রায় নাভিশ্বাস অবস্থা। বেশি রাতে আবার একটি দেহ এলে কাঠ দিয়ে দাহ করার ব্যবস্থা করতে হয়।
এ দিন সকাল হতেই এলাকার বাসিন্দারা শ্মশানের সামনে জড়ো হয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, চালুর পরই ওই চুল্লি থেকে শব পোড়ার ধোঁয়া বের হয়ে বাইরে ছড়িয়ে পড়ছে। দুর্গন্ধের বাড়িতে খাওয়া দাওয়া মাথায় উঠেছে। শবযাত্রার ধ্বনি শুনলেই তাই আতঙ্কে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে হচ্ছে তাঁদের। রাতের দিকে সমস্যা আরও বেশি হচ্ছে। এলাকার বধূ ববিতা রায়, করবী সরকারেরা বলেন, ‘‘হরিধ্বনি শুনতে পেলেই দুশ্চিন্তা ও দুর্ভোগে খাওয়া ঘুম সব উবে যাচ্ছে। এ ভাবে কী করে বাঁচবো আমরা?’’ দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরকর্মী এ দিন জানান, চুল্লির যন্ত্র সম্পূর্ণ খারাপ হয়ে গিয়েছে। পুরকর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পুরপ্রধান রাজেন শীল বলেন, ‘‘বাইরের টেকনিশিয়ানকে খবর দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই চুল্লির অকেজো যন্ত্র মেরামত করা হবে।’’
পুরসভা সূত্রে খবর, এই ক’দিনে ওই চুল্লিতে সাকুল্যে সাতটি মরদেহ দাহ হয়েছে। আর তাতেই শ্মশান লাগোয়া বাসিন্দাদের নাভিশ্বাস অবস্থা। এ দিন বিভাগীয় মন্ত্রী বাচ্চুবাবু বলেন, ‘‘দোতলা ভবনটিতে দূষণ নিয়ন্ত্রণের আধুনিক ব্যবস্থা করেই চুল্লিটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছিল। কেন এমন হলো, খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy