Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Netaji Birth Anniversary

তৃণমূলের কৃষ্ণেন্দু এবং সিপিএমের সুজন, মালদহে নেতাজি-মঞ্চে একসঙ্গে ‘ইন্ডিয়া’র দুই বি-ভাজন

মঙ্গলবার ইংরেজবাজার পুরসভার সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন পালন হয়। যে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পুরসভার চেয়ারম্যান এবং তৃণমূলের কাউন্সিলররা। সেখানে দেখা যায় সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও।

CPM and TMC Leader

একই মঞ্চে সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী এবং তৃণমূলের কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
ইংরেজবাজার শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১৪:২২
Share: Save:

নেতাজির জন্মদিনে এক মঞ্চে শাসক এবং বিরোধী। রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ভুলে মালদহের শহরে সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিবসে তাঁকে একসঙ্গে শ্রদ্ধা জানাল তৃণমূল সিপিএম নেতৃত্ব। আবার ওই মঞ্চ থেকে ২৩ জানুয়ারি কেন জাতীয় ছুটি ঘোষণা হল না, তাই নিয়ে বিজেপিকে নিশানা করলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। তাতে একমত তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীও।

মঙ্গলবার ইংরেজবাজার পুরসভার উদ্যোগে নেতাজি মোড়ে সুভাষচন্দ্রের জন্মদিন পালনের আয়োজন করা হয়েছিল। যে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ। ছিলেন তৃণমূলের কাউন্সিলররা। সেখানে দেখা গেল সিপিএম নেতা সুজনকেও। যদিও তৃণমূল এবং সিপিএম, দুই তরফই বলছে এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। নেই ‘ইন্ডিয়া’র সম্পর্কও।

সুজনের কথায়, ‘‘মালদহ শহরে যে ভাবে স্কুল, ক্লাব, পুরসভা থেকে বামেরা— সবাই মিলে যে ভাবে প্রোগ্রাম করে সেটা খুবই ভাল। আর আমরা সবাই নেতাজির ভক্ত। দেশপ্রেমিক মানুষ। এখানে বামফ্রন্ট যেমন রয়েছে, ক্লাব এবং পুরসভাও ছিল। তাঁরাই অর্গানাইজ় করেছে। এর সঙ্গে কোনও দলের সম্পর্ক আছে বলে আমার মনে হয় না।’’ এর পর বিজেপিকে নিশানা করেন সুজন। তাঁর কথায়, ‘‘দিল্লিতে যে দল সরকার চালাচ্ছে, তারা ২৩ জানুয়ারি সরকারি ছুটি ঘোষণা করেনি। অথচ, ২২ জানুয়ারি তারা অর্ধদিবস ছুটি ঘোষণা করে (অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষে)।’’

ইংলিশবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা কুষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী জানান, পুরসভার তরফে নেতাজিকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের আয়োজন করা হয়েছিল। তখনই সেখানে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীকে দেখতে পেয়ে আমন্ত্রণ জানান। তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘আমরা পুরসভার পক্ষ থেকে মাল্যদান করছিলাম। ঠিক ওই সময় সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী এখানে আসেন। আমরা তাঁকেও আমন্ত্রণ জানাই মাল্যদান করতে। এটা আমাদের নাগরিক দায়িত্ব।’’

সুজন এবং কৃষ্ণেন্দু কেউই এই মাল্যদানের বিষয়ে রাজনীতিকে যুক্ত করতে নারাজ। সুজন যেমন জানিয়েছেন, এর সঙ্গে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের কোনও সম্পর্ক নেই। বস্তুত, লোকসভা ভোটে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সঙ্গে নিজের মতপার্থক্য সোমবারও প্রকাশ্যে এনেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা ভোটে এ রাজ্যের লড়াইয়ে তৃণমূল এবং বামেদের ‘বিভাজন’ যে মেটার নয়, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ‘ইন্ডিয়া’ নাম দিয়েছি। এখন সেই ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বৈঠক সিপিএম নিয়ন্ত্রণ করে! সিপিএমের কোনও কথা আমি শুনব না। তাই বৈঠকে গেলে আমার কষ্ট হয়।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘৩৪ বছর খুব অসম্মান করেছে আমাকে। ওদের (সিপিএমের ) সঙ্গে অনেক লড়াই করেছি।’’ শুধু তা-ই নয়, রামমন্দির নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনীতির অভিযোগ করে মমতা টেনে আনেন কংগ্রেসের ভূমিকাও। নাম না করে রাহুলকে ইঙ্গিত করেই তিনি বলেন, ‘‘একটা মন্দির দর্শন (ভিজ়িট) করেই হয়ে গেল!’’ অন্য দিকে, তৃণমূল এবং সিপিএমের এক মঞ্চে নেতাজির মূর্তিতে মাল্যদান নিয়ে সুজন বলেন, ‘‘ এখানে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের কোনও সম্পর্ক নেই। এখানে ক্লাব, পুরসভা— সবাই আছে। এটার সঙ্গে ‘ইন্ডিয়া’ মেলাবেন না।’’ সিপিএম নেতার সংযোজন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো নিজেই বলেছেন ‘ইন্ডিয়া’তে তিনি মিসফিট।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE