হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সেই রোগিণী। —নিজস্ব চিত্র।
শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিলেন। কিন্তু নেশার টান এমনই যে হাসপাতালের শয্যায় বসে অক্সিজেন মাস্ক খুলে বিড়ি ধরিয়ে ফেললেন সেই রোগিণী। তাতে আগুন লাগল হাসপাতালের শয্যায়। মুখ পুড়ে গেল সেই রোগিণীর। উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ার সরকারি হাসপাতালে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া হাটথুবা ঘোষপাড়া এলাকার মাঝবয়সি অরুণা অধিকারী। তাঁকে ভর্তি করাতে হয় হাবড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতালে। কিন্তু রবিবার গভীর রাতে হাবড়া হাসপাতালে বেডে বসে ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটান তিনি। নেশা এমনই পেয়ে বসে তাঁকে যে মুখ থেকে অক্সিজেন মাস্ক খুলে বিড়ি ধরিয়ে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গে হুস্ করে আগুন ধরে যায় আশপাশে। তাতে ভয় পেয়ে পাশের বেডের রোগীরা চিৎকার শুরু করেন। চিৎকার-চেঁচামেচিতে কর্তব্যরত নার্সরা ছুটে আসেন। কিন্তু তত ক্ষণে মুখ পুড়ে গিয়েছে ওই মহিলার। কোনও রকম আগুন নিভিয়ে শুরু হয় চিকিৎসা। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সোমবার বারাসাত স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়
মহিলার অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় সোমবার তাকে বারাসত হাসপাতালে রেফার করা হয়। অ্যাম্বুল্যান্সে শুয়ে অরুণা কাটা কাটা কথায় স্বীকার করেন তাঁর ভুল হয়েছে। হাসপাতালে অক্সিজেন মাস্ক খুলে বিড়ি ধরিয়েছিলেন তিনি। পাশে বসা মহিলার আত্মীয় তখন মাস্ক তুলে মুখ ঢাকেন।
অন্য দিকে, এই ঘটনায় সরকারি হাসপাতালের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কী ভাবে হাসপাতালের শয্যায় থেকে এক জন রোগী ধূমপান করলেন, কী ভাবে তাঁর কাছে দেশলাই কাঠির মতো দাহ্য জিনিস ছিল, সেটাও কৌতূহলের। অন্যান্য রোগীর পরিজন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনেছেন। তাঁদের প্রশ্ন, “ওই রোগী যখন এই কাজ করলেন তখন ওই ওয়ার্ডের চিকিৎসক এবং নার্সরা কী করছিলেন? তাঁদের কারও নজরে পড়ল না?’’ এতে অন্যান্য রোগীরও ভয়ঙ্কর বিপদের সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এই ঘটনা প্রসঙ্গে হাবড়া পুররসভার চেয়ারম্যান তথা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান নারায়ণ সাহা বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ ঘটনাটি শুনেছি। খোঁজখবর নেওয়া হবে। কী ভাবে হাসপাতালের ভিতরে ধূমপান করার ‘জিনিসপত্র’ গেল তদন্ত করে দেখা হবে।’’
বস্তুত, কিছু দিন আগে হাবড়ার সরকারি হাসপাতালের মতো একটি ঘটনা ঘটে গুজরাতে। বেসরকারি হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট-এ চিকিৎসাধীন এক রোগী সুখটান দিয়ে হাসপাতালের যন্ত্রাংশ পুড়িয়ে দেন। পুড়ে যায় তাঁর নিজের মুখও। পরে পুলিশ সেখান থেকে দেশলাই বাক্স পায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy