কোনও বিল নিয়ে তিন মাসের মধ্যে রাষ্ট্রপতিকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে সাম্প্রতিক একটি রায়ে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়ে সেই রায়ের পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানোর তোড়জোড় শুরু করেছে কেন্দ্র। মোদী সরকারের শীর্ষ মহলে এ নিয়ে আলোচনা চলছে। মনে করা হচ্ছে, সুপ্রিম কোর্ট রাষ্ট্রপতির বক্তব্য না শুনেই রাষ্ট্রপতিকে নির্দেশ দিয়েছে, এই যুক্তিতে রিভিউ পিটিশনটি দায়ের করা হতে পারে।
তামিলনাড়ু সরকার সর্বোচ্চ আদালতে অভিযোগ জানিয়েছিল, সে রাজ্যের আইনসভায় পাশ হওয়া ১০টি বিল রাজ্যপাল আর এন রবি আটকে রেখেছেন। বিলগুলি ২০২৩ সালের নভেম্বরে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের জন্য পাঠিয়ে দেন তিনি। সেই থেকে সেগুলি ঝুলেই রয়েছে। রাজ্যপালের আচরণকে ‘বেআইনি’ বলে
উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতিকে তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দেয়। বৃহস্পতিবার সেই রায় নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘‘কোন পথে এগোচ্ছি আমরা? কী চলছে দেশে? রাষ্ট্রপতিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হচ্ছে!... এখন থেকে বিচারপতিরাই তা হলে আইন প্রণয়ন ও সংসদীয় দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁদের উপরে আইন প্রযোজ্য হবে না বলে তাঁদের কোনও জবাবদিহিও করতে হবে না। ’’
এই সূত্রেই পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল ধনখড় কার্যত বিচার ব্যবস্থাকেই পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল্লি হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাড়ি থেকে পোড়া নোট উদ্ধারের ঘটনাটি টেনে এনেছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ১৪-১৫ মার্চ রাতের ওই অগ্নিকাণ্ডের কথা সাত দিন
বাদে প্রকাশ্যে এসেছিল কেন? বিচারপতি বর্মা প্রসঙ্গে ধনখড় বলেন, ‘‘সংবিধান শুধু রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালদের আইনি প্রক্রিয়া থেকে রক্ষাকবচ দিয়েছে। তা হলে তিনি (বিচারপতি বর্মা) তা কী ভাবে পাচ্ছেন?’’ উপরাষ্ট্রপতির বক্তব্য, সংবিধানের ১৪২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ ক্ষমতা অবশ্যই আছে। কিন্তু সেই ক্ষমতাকে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ‘পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের মতো’ ব্যবহার করা হচ্ছে।
সংবাদ সংস্থা
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)