প্রতীকী ছবি
জায়গার নাম নকশালবাড়ি। সেখানেই শুরু হয়েছে ‘কমিউনিটি কিচেন’।
লকডাউনের ৬০ দিন অতিক্রান্ত। রুজি রোজগার টানা বন্ধ, হাতে টাকাকড়ি নেই অনেক দিন-আনি-দিন-খাই মানুষের। রেশন জুটছে ঠিকই, কিন্তু অনেকেই বলছেন, শুধু চাল-ডাল আর সয়াবিনে সব সময় চলে না। এই অবস্থায় নকশালবাড়ির ছোট্ট গ্রাম বেঙাইজোতে তৈরি করা হয়েছে গণরান্নাঘর বা কমিউনিটি কিচেন। কারা আছেন এই দলে? নদী থেকে বালি-পাথর তুলে ৭ জনের সংসার টানতেন দীনেশ বর্মণ। লকডাউনের প্রথম দিকে দিশাহারা হয়ে পড়েছিলেন। পরে সামলে ওঠেন। তিনি রয়েছেন এই কিচেনের সঙ্গে। দীনেশের মতোই আর বহু খেটে খাওয়া মানুষ যুক্ত হয়েছেন এই কমিউনিটি কিচেনে। দার্জিলিং জেলা সিটুর সভাপতি গৌতম ঘোষ রয়েছেন এই রান্নাঘরের দায়িত্বে। রোজ প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের খাবার জোগাচ্ছেন তাঁরা সবাই মিলে। অনেকেই বলছেন, রাজনৈতিক আন্দোলনের ধাত্রীভূমি নকশালবাড়ি এলাকায় এমন রান্নাঘর গড়ে ওঠায় তার তাৎপর্যই আলাদা। শুধু নকশালবাড়ি নয়, দার্জিলিংয়ের গ্রামীণ সমতলে সব ক’টি ব্লকেই ঠিক একই রকম কিচেনে রান্না করা খাবার বিলির কাজ করছেন বাম ছাত্র, যুব, মহিলা এবং শ্রমিক শাখার কর্মীরা।
এমন একাধিক গণরান্নাঘর গড়ে উঠেছে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের নির্বাচনী কেন্দ্র ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির ৪টি পঞ্চায়েতে। একাধিক কমিউনিটি কিচেন থেকে খাবার পাচ্ছেন বহু মানুষ। দলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘এখন পর্যন্ত দার্জিলিং জেলায় যেমন ৫০ টন খাদ্যশস্য বিলি করা হয়েছে, তেমনই দলের সদস্যদের এলাকাভিত্তিক ভাবে দায়িত্ব ভাগ করে দিয়ে কমিউনিটি কিচেনও চলছে।’’
রাজনৈতিক রং গায়ে লেগে নেই, এমন অনেকেও আছেন মানুষের পাশে। শহরের ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী মিলে ১৮ জনের একটি দল গত ৫ এপ্রিল থেকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় কমিউনিটি কিচেন এবং বাচ্চাদের দুধ বিলির কাজ করছে। সংস্থার অন্যতম কর্মকর্তা শম্পা দাস জানান, প্রবল ইচ্ছেশক্তিই তাঁদের সাফল্যের চাবিকাঠি। সংগঠনের আরও দুই সদস্য শরৎ মুখুটি এবং অমর সাহা জানালেন, তাঁরা এ পর্যন্ত হাতিয়াডাঙা, ফাড়াবাড়ি, আমবাড়ি, আশিঘর মিলে অন্তত ৩০ হাজার মানুষকে রান্না করা খাবার খাইয়েছেন। এবং এখনও খাওয়াচ্ছেন।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিও এখন মানুষের পাশে। শহরের প্রাচীনতম আনন্দময়ী কালীবাড়ি কমিটির তরফে গত একমাস ধরে কমিউনিটি কিচেন চালানো হয়েছে। ঠাকুরের রান্নাঘরে তৈরি হয়েছে সাধারণ দরিদ্রদের খাবার। মন্দির কমিটির সম্পাদক ভাস্কর বিশ্বাস বলেন, ‘‘ভক্তরা ছাড়াও বেশ কিছু মানুষ ও সংগঠন সাহায্য করে এই কাজে। রোজ অন্তত দেড় হাজার মানুষের জন্য রান্না করা খাবার তৈরি করে সেগুলি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে বিলি-বণ্টন করার জন্য।’’
মন্দির কর্তৃপক্ষের দাবি, লকডাউনে মন্দিরের আয় যেমন কমেছে। তাই ৭ মে তাঁদের কমিউনিটি কিচেন বন্ধ করতে হয়েছে। তবে এরই মধ্যে শক্তিগড়ের কিছু যুবক একই ভাবে কাজ করে চলেছেন। তাই শিলিগুড়িতে অন্নপূর্ণার ভাঁড়ারে এখনও টান পড়েনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy