ধীরবালা বর্মণ
বাড়ি বাড়ি ভিক্ষে করে পেট চলে বছর বাষট্টির ধীরবালা বর্মণের। গত দু’দিন ধরে জোটেনি খুদকুঁড়েটুকুও। বালুরঘাট ব্লকের বোয়ালদার পঞ্চায়েতের ভেরেন্ডা এলাকার ধীরবালার পরিবারে ৬ জন সদস্য। লকডাউনের জেরে দিনমজুর ছেলে ও ছেলের বউয়ের মাঠের কাজ নেই। তাঁরা রেশনও তুলতে পারেননি। ফলে গত কয়েক দিন ধরে ছেলেপুলে নিয়ে বাড়িতে বসেই কাটছে। বৃহস্পতিবার সকালে বছর এগারোর নাতিকে সঙ্গে নিয়ে ধীরবালা বার হন। এলাকার গৃহস্থ বাড়িতে ঘুরে যদি একমুঠো চাল মেলে। তা-ই ফুটিয়ে ছোট্ট নাতিটার মুখে কিছু তুলে দিতে পারেন। কিন্তু অনেক ঘুরেও কিছু জোটেনি। দুপুরে অবশেষে অসহায় অবস্থায় তাঁদের রাস্তার ধারে বসে থাকতে দেখে এগিয়ে যান এলাকার পঞ্চায়েত প্রতিনিধি অনুকূল দাস। বৃদ্ধার দুরবস্থার কথা জেনে চাল আনাজ কিনে দিয়ে সাহায্য করেন।
করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের জেরে ভিক্ষাবৃত্তির উপরে নির্ভরশীল দক্ষিণ দিনাজপুরের অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা কার্যত চরম সঙ্কটের মুখে। বাড়ি বাড়ি ঘুরেও মিলছে না একমুঠো চাল। ধীরবালা বলেন, “কেউ বাড়ির দরজা খুলছেন না। কাছে এসেও ভিক্ষা দিতে চান না।” মঙ্গলবার থেকে না খেয়ে দিন কাটছে বলে তিনি জানান। স্হানীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান পিন্টু দাস জানান, রেশন দোকান থেকে উপভোক্তাদের গত সপ্তাহে একবারে দু’সপ্তাহের পণ্যসামগ্রী বিলি করা হয়েছে। ফলে চলতি সপ্তাহে এলাকার রেশন দোকানগুলি বন্ধ। না হলে ওই বৃদ্ধাকে চাল দিয়ে সহায়তা করা যেত।
এ দিন অবশ্য বোয়ালদার গ্রামপঞ্চায়েতের শিক্ষা ও জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ অনুকূল ধীরবালাকে দু’কেজি চাল ও মুদি সামগ্রী কিনে সাহায্য করেন। তাতে বিষণ্ণতায় ভরা বৃদ্ধার শুকনো মুখে একটু হাসি ফোটে। অনুকূল জানান, শুধু ধীরবালা নন। ভিক্ষা করে পেট চালানো অনেক অসহায় বয়স্ক মানুষ লকডাউনের ফলে বিপদে পড়েছেন। করোনা আতঙ্কে অধিকাংশ বাড়ি থেকে ভিক্ষা দেওয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যা বেড়েছে। কত জন অভুক্ত হয়ে দিন কাটাচ্ছেন, তাও সবটা এখনও জানা যাচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy