বার্তা: মিছিলে মন্ত্রী উদয়ন ঘোষ। সোমবার শিলিগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রের দুই প্রতিমন্ত্রীকে ‘বাংলা-ভাগে’র ‘মূল চক্রান্তকারী’ বলে অভিযোগ করলেন রাজ্যের উত্তরবঙ্গের উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। সোমবার ‘বাংলা ভাগে’র বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে রাজ্যের শাসক দল। শিলিগুড়িতে এ দিন আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ির দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে মিছিল হয়। তার আগে সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক এবং সংখ্যালঘু প্রতিমন্ত্রী জন বার্লার নাম করে উদয়ন দাবি করেন, উত্তরবঙ্গের মানুষকে ‘উস্কানি’ দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন বিজেপির এই দুই প্রতিমন্ত্রী। উদয়নের বক্তব্য, ‘‘যখনই ভোট আসে, বিজেপি পিছন থেকে মদত দেয় আলাদা রাজ্যের। এটা বাংলার লজ্জা। এই ভাগের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে লড়াই হবে।’’
এখানেই থেমে থাকেননি উদয়ন। তাঁর অভিযোগ, উত্তবঙ্গের বঞ্চনা, অবহেলার কথা বলানো হচ্ছে কয়েকজনকে দিয়ে। বিজেপির নেতারা উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছেন না। উদয়ন বলেন, ‘‘আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম, এঁদের চোখের ছানি অপারেশন করলে হয়তো উন্নয়নটা দেখতে পারবেন। এখন বুঝতে পাচ্ছি ছানি অপারেশন করে হবে না।’’ এর পরেই উদয়নের দাওয়াই, প্রতি রাতে শোওয়ার সময় দু’চোখে শৌচালয় পরিষ্কার করার রাসায়নিকের ড্রপ দিলে পরের দিন তাঁরা উন্নয়নটা দেখতে পাবেন।
উদয়নের এ হেন মন্তব্য নিয়ে দুই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন। জন বার্লার বক্তব্য, ‘‘এ নিয়ে আমি কিছু বলব না।’’ নিশীথ প্রামাণিকও কিছু বলবেন না বলে জানান।
তবে শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি আনন্দময় বর্মণ বলেন, ‘‘বাংলা ভাগের কথা কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেনি। তৃণমূল তাদের দুর্নীতি ঢাকতে বাংলা ভাগের অভিযোগ তুলে রাজনীতি করছে। আমরা মানুষের দাবিকে প্রাধান্য দিয়েই এগোচ্ছি।’’
এ দিন মিছিলের শেষে হাসমি চকে সভা করে তৃণমূল। সেখানে রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী বুলু চিকবরাইক, রাজ্য যুব সভানেত্রী সায়নী ঘোষ, শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। তাঁদের অভিযোগ, ২০০৯ সালে জন বার্লা নির্বাচন কমিশনের আইন অমান্য করে মিছিল করেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। সমন উপেক্ষা করে কোর্টেও হাজির হননি। অন্য দিকে, ২০০৯ সালে আলিপুরদুয়ারের একটি সোনার দোকানে ডাকাতি মামলায় অভিযুক্ত নিশীথ প্রামাণিক। অবিলম্বে তাঁদের গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন শাসক দলের নেতারা।
সম্প্রতি বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার শিলিগুড়িতে জানিয়েছিলেন, রাজ্য-ভাগ বিজেপির ‘এজেন্ডা’ নয়। তার পরেও কোচবিহারের গ্রেটার নেতা অনন্ত রায়ই (মহারাজ) শুধু কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি তোলেননি, জলপাইগুড়ি বিজেপির সভাপতিও একই দাবি তোলেন। পঞ্চায়েত ভোটের আগে সেটাকেই কাজে লাগিয়ে আসরে নেমেছে শাসক দল তৃণমূল।
তবে এ দিনের মিছিলে ভিড় নিয়ে দলের মধ্যেই উঠছে নানা প্রশ্ন। শিলিগুড়ির সঙ্গে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ির জেলা থেকে লোক এলেও মিছিল একেবারেই আশানুরূপ হয়নি বলে দলের অন্দরের খবর। মিছিলে ২০-২৫ হাজারের বেশি লোক যোগ দেন বলে তৃণমূলের একাংশ দাবি করলেও পুলিশের হিসাবে মেরেকেটে ৬-৭ হাজার লোক হয়েছে। প্রথমে সবাই থাকলেও মিছিল শেষে সভামঞ্চ অবধি আবার অনেকেই যাননি। তাতে মিছিল আরও হালকা হয়ে যায় বলে জানা গিয়েছে।
আদতে সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন, তার উপরে অল্প সময়ে ঘোষণা করা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী জেলাগুলির সব পোড়খাওয়া নেতাদের নিয়ে সমন্বয় বৈঠক হয়নি। তাতে কর্মসূচি আশানুরূপ সাফল্য পায়নি বলে শাসকদলের নেতারাই মনে করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy