Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

পরপর হানা, দুষ্কৃতী কবে ধরা পড়বে

শহরের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে মন্তব্য করতে চাননি পুলিশ কমিশনার অর্থব ত্রিপুরারি। পুলিশের একটি অংশ বলছে, সম্প্রতি কিছুটা হলেও তৎপরতার অভাব চোখে পড়ছে পুলিশ বাহিনীর মধ্যে।

ডাকাতির পরে:  নাকা চেকিং চলছে শিলিগুড়িতে। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।

ডাকাতির পরে: নাকা চেকিং চলছে শিলিগুড়িতে। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৫২
Share: Save:

গত দু’সপ্তাহ ধরে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় ঘটছে একের পর এক অপরাধ। দিনেদুপুরে সোনার বদলে ঋণদানকারী সংস্থায় কয়েক কোটি টাকার সোনা লুট হয়ে গেল কিছু দিন আগে। তার পরে দুষ্কৃতীরা অবশ্য এখানেই থেমে যায়নি। তাদের হাত পড়ে গণেশ পুজোর মণ্ডপে দানবাক্সতেও। এর মধ্যে গৃহস্থের বাড়িতে পরপর ডাকাতি, মোবাইল ছিনতাই, এটিএমে হানা তো আছেই। এখনও অবধি ধরা পড়েনি এক জনও। পুলিশের ভূমিকা, নজরদারি, নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সব মহলে। অনেকেই বলছেন, ‘‘শিলিগুড়ি পুলিশ একসময় জঙ্গি ধরা থেকে একাধিক খুন, জটিল অপরাধের সমাধান করেছে। তা হলে হঠাৎ করে গত কয়েক মাসে শিলিগুড়ি পুলিশের হল কী! নজরদারির গাফিলতি বা দক্ষ অফিসার-কর্মীর অভাবে এমনটা হচ্ছে বলেই তো মনে হচ্ছে।’’

শহরের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে মন্তব্য করতে চাননি পুলিশ কমিশনার অর্থব ত্রিপুরারি। পুলিশের একটি অংশ বলছে, সম্প্রতি কিছুটা হলেও তৎপরতার অভাব চোখে পড়ছে পুলিশ বাহিনীর মধ্যে। মনোজ বর্মা, জয়রামন, সিএস লেপচা বা জাভেদ শামিমের সময়ে যেন তারা তুলনায় বেশি সক্রিয় ছিল। যদিও অন্য একটি অংশের দাবি, চুরি-ডাকাতি তখনও ছিল। কিন্তু পুলিশ বাহিনীর অনেকেই মেনে নিচ্ছেন, গত মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে এতগুলি ছোটবড় অপরাধমূলক ঘটনা আগে কখনও ঘটেছে কিনা সন্দেহ। ওই অংশের মতে, ডিসিদের অনেকের তৎপরতাও আগে ছিল চোখে পড়ার মতো। যা এখন অনেকটাই কমে এসেছে বলে অভিযোগ।

কমিশনারেটের কয়েক জন পুরনো অফিসার জানান, প্রথম সারির অফিসারেরা সব সময় সক্রিয়ভাবে মাঠে নামলে থানা-ফাঁড়ির অফিসার-কর্মীরাও তৎপর, সর্তক হতে বাধ্য। এতে শহরে দিনরাতের নজরদারির কাজ ভাল হয়। এখন তা কিছুটা হলেও কমেছে বলেই মনে করছেন ওই পুরনো অফিসারেরা। দিনগত ডিউটি করার মানসিকতা নিয়ে কাজ ছাড়া কিছুই হচ্ছে কি, প্রশ্ন তুলেছেন শিলিগুড়িবাসীর একাংশ।

গোয়েন্দা সূত্রে বলা হচ্ছে, বিভিন্ন সীমান্তের ফোর্স, পাশের রাজ্য, জেলাগুলির সঙ্গে সমন্বয় রাখাটা শহরের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত জরুরি। তা ঠিক না হলে নিরাপত্তার খামতি দেখা দেয়। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন তদন্তে দেখা গিয়েছে, বিহার, ঝাড়খণ্ডের দল শহরে ঢুকে অপরাধ ঘটিয়ে নিকটবর্তী ভিন দেশি সীমান্ত বা ভিন রাজ্যের সীমানা টপকে পালাচ্ছে।

কোনও ঘটনা ঘটলে, শুধু দক্ষ অফিসারদের বাছাই না করে থানা-ফাঁড়ির দলদল অফিসারদের নিয়ে বিরাট স্পেশ্যাল টিম হচ্ছে। সোনা লুটের তদন্তে ৩০ জনের টিম তৈরি হয়েছে। তাতে যে তদন্তের বদলে সমন্বয়ে খামতি হচ্ছে, তা দলের একাংশ অফিসারেরাই স্বীকার করেছেন। একদলের চেষ্টায় মোবাইল, গাঁজা, অস্ত্র বা বাইকের মতো কিছু উদ্ধার, গ্রেফতার ছাড়া ঘটে যাওয়া অপরাধের কোনও কিনারা হচ্ছে না বলে অভিযোগ।

পুলিশের একাংশ অবশ্য মনে করছে, শিলিগুড়ি কমি‌শনারেট গঠনের পর থেকে ধীরে ধীরে তা মাথা ভারী প্রশাসনের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। একাধিক ডিসি, এসিপি বা ইন্সপেক্টর স্তরের অফিসার কমিশনারেটে এলেও মাঠে-ময়দানে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ এসআই, এএসআই বা কনস্টেবলদের সংখ্যা বাড়েনি। অনেকে বদলি হয়েছেন। দায়িত্বে থাকা অনেকেরই সরাসরি থানায় ‘অপরাধ’ নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা কম। এ সবের ফলে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ফাঁক দেখা যাচ্ছে বলে পুলিশের দাবি।

অন্য বিষয়গুলি:

Siliguri Crime Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy