গত ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের ব্যবধান ছিল প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার। সে বার বামফ্রন্টের হেভিওয়েট প্রার্থী তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী কিরণময় নন্দের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই-এ তিনি শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়ে প্রথমবারের জন্য বিধায়ক নির্বাচিত হন। রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক তথা এবারের জোট প্রার্থী মোহিত সেনগুপ্ত এ বারে তাঁর জয়ের ব্যবধান বাড়িয়েছেন প্রায় ১০ গুণ। ৫১ হাজার ২৪৭ ভোটে পরাজিত করেছেন তৃণমূল প্রার্থী পূর্ণেন্দু দে’কে। কংগ্রেসের দাবি, রায়গঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান মোহিতবাবু উত্তরবঙ্গে সব চাইতে বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন। এতে আগামী পুরসভা নির্বাচনে মোহিতবাবুর নেতৃত্বে লড়াই করে পুরসভার ক্ষমতা ফের পুনর্দখল করার কাজ অনেকটাই সহজ হয়ে গেল।
মোহিতবাবুর দাবি, ‘‘রায়গঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র কংগ্রেসের দখলে থাকায় গত পাঁচ বছরে রাজ্য সরকার উন্নয়ন করেনি। সেই তুলনায় কংগ্রেস শহরে রাস্তাঘাট, আলো, নিকাশি, সাফাই সহ বিভিন্ন নাগরিক পরিষেবার উন্নয়নের কাজ চালিয়ে গিয়েছে। তাই শহর ও গ্রামের সাধারণ মানুষ আমাদের রেকর্ড ভোটের ব্যবধানে জয়ী করেছেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আগামী পুরসভা নির্বাচনে বামফ্রন্টের সঙ্গে জোট বজায় রেখে নির্বাচনে লড়ে তৃণমূলকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। তবে হারের আশঙ্কায় রাজ্য সরকার নির্বাচনের উপর স্থগিতাদেশ জারি করলে আমরা আইনের পথে লড়ব।’’
প্রসঙ্গত, রায়গঞ্জের বীরনগর এলাকার বাসিন্দা মোহিতবাবু ১৯৮৬ সাল থেকে কংগ্রেসের কাউন্সিলর। মাঝে ২০০১ থেকে ২০০৩ সাল বাদ দিলে ১৯৯২ সাল থেকে এখনও পুরসভার চেয়ারম্যান। মোহিতবাবু পুরসভা নির্বাচনে বামেদের পাশে পাওয়ার কথা বললেও উত্তর দিনাজপুর জেলা বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান অপূর্ব পালের দাবি, তাঁদের হয়ে রাজ্য নেতৃত্ব সেই সিদ্ধান্ত নেবে।’’ এ দিকে, রায়গঞ্জে দলীয় প্রার্থীর হারে হতাশ হয়ে পড়েছেন তৃণমূলের নেতারা। মোহিতবাবু পুরসভার ২৫টি ওয়ার্ডেই লিড পেয়েছেন, তার মধ্যে ১৩টি ওয়ার্ডেই এক হাজারেরও বেশি করে ভোটে তিনি এগিয়ে রয়েছেন। উল্লেখ্য, ২০১১ সালে কংগ্রেস ও তৃণমূল জোট করে ২৩টি ওয়ার্ড দখল করে। বামেদের দখলে যায় দু’টি ওয়ার্ড। ১৮টি ওয়ার্ডে কংগ্রেস প্রার্থীরা জয়ী হন! পরবর্তীতে অবশ্য কংগ্রেস তৃণমূলকে ভাইস চেয়ারম্যানের পদ না ছাড়ায় তৃণমূল পুরসভার বিরোধী দলের আসনে বসে। এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জ পুর এলাকায় তৃণমূল প্রার্থী পূর্ণেন্দুবাবু ১২ হাজার ৩৬৯টি ভোট পেয়েছেন। সেখানে কংগ্রেসের মোহিতবাবুর ৩৯ হাজার ৬৬৩টি ভোট পেয়েছেন। আগামী ২২ জুলাই কংগ্রেস পরিচালিত পুরসভার মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে। জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন কমিশন পুরসভা নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, পুরসভা নির্বাচনের মুখে রায়গঞ্জে দলের বিপর্যয় নিয়ে বিশ্লেষণ হচ্ছে। সাংগঠনিক দুর্বলতাগুলি খুঁজে বার করে দলকে শক্তিশালী করা হবে। তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে বিধানসভা নির্বাচন ও পুরসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিত আলাদা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy