Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Malda Murder

মালদহের মানিকচকে খুন কংগ্রেস নেতা! সকালে বাজারে বোমাবাজি, তার পরেই উদ্ধার দেহ, চাঞ্চল্য

মালদহের মানিকচকে রবিবার সকালে এক কংগ্রেস নেতাকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সকালে বাজারে বোমাবাজি করে দুষ্কৃতীরা। তার পরেই উদ্ধার হয় কংগ্রেস নেতার দেহ।

রবিবার সকালে মানিকচকের ধরমপুর বাজার এলাকায় আতঙ্ক।

রবিবার সকালে মানিকচকের ধরমপুর বাজার এলাকায় আতঙ্ক। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
মানিকচক শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:১০
Share: Save:

মালদহের মানিকচকে সাতসকালে বোমাবাজি। এলাকার কংগ্রেস নেতার মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ, কেউ বা কারা তাঁকে খুন করেছে। জনবহুল চৌকি ধরমপুর বাজার এলাকায় সকালে বোমাবাজির ফলে এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। বোমা পড়ার পর বাজার ফাঁকা হয়ে যায়। পরে মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ দেখান এলাকার মানুষ। ঘটনাস্থলে গিয়েছে মানিকচক থানার পুলিশ। তাদের ঘিরেও বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। প্রাক্তন সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী মৃতদেহের সামনে অবস্থানে বসেছিলেন। প্রায় ছ’ঘণ্টা পর বিক্ষোভ ওঠে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেফতারির আশ্বাস দিয়ে অবরোধ তুলতে সক্ষম হয় পুলিশ। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত কংগ্রেস নেতার নাম মহম্মদ সইফুদ্দিন। তিনি এলাকার প্রাক্তন প্রধান ছিলেন। দীর্ঘ দিন ধরেই কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত। বাজারে তাঁকে লক্ষ্য করেই বোমা মারা হয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারা এই হামলা চালাল, জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

মৃতের পরিবারের অভিযোগ, এই হামলার নেপথ্যে তৃণমূলের হাত রয়েছে। আগেও সইফুদ্দিনের পরিবারের এক জনকে দুষ্কৃতীরা খুন করেছে বলে অভিযোগ। পুরনো শত্রুতার জেরে খুন বলে মনে করা হচ্ছে। কী কারণে হামলা, তা স্পষ্ট করেনি মৃতের পরিবার। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

মৃতের এক আত্মীয় বলেন, ‘‘উনি বাজারে এসেছিলেন। পিছন দিক থেকে পিঠে দুটো বোমা মেরেছে দুষ্কৃতীরা। রক্তে ভেসে গিয়েছে রাস্তা। ওদের শাস্তি চাই।’’ হামলার নেপথ্যে নাসির নামক এক জনের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। দাবি, তিনি তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত।

মানিকচকের এই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা দীর্ঘ দিন ধরেই তৃণমূল এবং কংগ্রেসের সংঘর্ষে উত্তপ্ত। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় তৃণমূলের এক নেতা সেখানে খুন হয়েছিলেন। সে সময় অভিযোগ উঠেছিল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। এ বার কংগ্রেস নেতা খুন হলেন।

এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সিপিএম নেতা দেবজ্যোতি সিংহ বলেন, ‘‘আমি এই মাত্র ঘটনার খবর পেলাম। গোপালপুরের কংগ্রেস নেতা সইফুদ্দিনকে কিছু দুষ্কৃতী বোমা মেরে খুন করেছে। আরও দু’জন গুরুতর জখম। ওই এলাকার পাঁচটি বুথে তৃণমূল দুষ্কৃতীরাজ চালাচ্ছে। শাসকদল এদের প্রশ্রয় দিচ্ছে। পুলিশের সহযোগিতা নিয়েই শাসকদল এই ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। মানুষ আতঙ্কিত। অবিলম্বে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনুক পুলিশ।’’

অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। স্থানীয় তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি দুলালচন্দ্র সরকার বলেন, ‘‘মানিকচকে যে ঘটনা ঘটেছে, তার সঙ্গে তৃণমূল কোনও ভাবে জড়িত নয়। এটা দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলা। ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে হামলা। যে কোনও মৃত্যু দুঃখের। আমরা দুঃখিত।’’

তৃণমূল বিধায়ক সাবিত্রি মৈত্র বলেন, ‘‘কোনও খুনকেই আমরা সমর্থন করি না। আমাদের সঙ্গে সইফউদ্দীন অনেক দিন ছিলেন। একসঙ্গে কাজ করেছি। ব্যক্তিগত ভাবে আমার সঙ্গে ভাল সম্পর্ক ছিল। কিছু দিন আগেও কথা হয়েছে। আমাদের রাজনৈতিক দল আলাদা হতে পারে। আমরা মিলেমিশেই থাকতাম। এখনও ভাবতে পারছি না উনি নেই। আমাদের দলের কেউ এটা করেনি। এটা রাজনৈতিক বচসা নয়, ব্যক্তিগত অশান্তি। আমি চাই পুলিশ সঠিক বিচার করুক, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Case Malda Crime News Congress Leader
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE