Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Jairam Ramesh

জয়রামের মন্তব্যে তীব্র অসন্তোষ দলে

জলপাইগুড়িতে স্থানীয় কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের মনোভাব ছিল এর উল্টো। তাঁদের অভিযোগ, একাধিক জায়গায় দলের ফ্লেক্স ছিড়ে দেওয়া হয়েছে।

জয়রাম রমেশ।

জয়রাম রমেশ। —ফাইল চিত্র।

অনির্বাণ রায় , সৌমিত্র কুন্ডু
জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:২৮
Share: Save:

তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জোটের ‘গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ’ বলে জয়রাম রমেশ যে বার্তা দিয়েছেন রবিবার, তা মানতে নারাজ শিলিগুড়ি ও জলপাউগুড়ির অধিকাংশ কংগ্রেস নেতা-কর্মী। প্রদেশ নেতৃত্বের মতোই তাঁরাও বার্তা দেন, তাঁরা তৃণমূলকে নিয়ে জয়রাম-লাইন মানতে নারাজ। জলপাইগুড়িতে এ দিন পরিস্থিতি এমন হয় যে, জয়রামের বৈঠক চলাকালীনই জেলা নেতাদের একাংশ উঠে চলে যান। প্রকাশ্য বৈঠকে তৃণমূল নেত্রীকে নিয়ে জয়রামের সহানুভূতি ও প্রশস্তি নিয়ে নিজেদের অসন্তোষের কথাও তাঁকে বলতে দ্বিধা করেননি তাঁরা।

রবিবার সকালে ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ কর্মসূচির আগে জলপাইগুড়ির কংগ্রেস অফিসে জয়রাম সাংবাদিক বৈঠক করেন। এর কিছু আগে নীতীশ কুমার ‘ইন্ডিয়া’ জোট ছেড়়েছেন। এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ দু’দলের মধ্যে চলতি টানাপড়েন নিয়ে বলেন, “কখনও তৃণমূলের কেউ কোনও কথা বলে দেন, কখনও আমাদের দলের কেউ উত্তর দেন। কখনও আমাদের দলের কেউ বলেন, কখনও তৃণমূলের কেউ উত্তর দেন। গণতন্ত্রে এমনই চলে। ইন্ডিয়া জোটে গণতন্ত্র আছে, এখানে একনায়কতন্ত্র নেই।’’ একই সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একবারও বলেননি তিনি ইন্ডিয়া জোটে নেই। আবার বলছি, মমতা ইন্ডিয়া জোটের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।”

কিন্তু জলপাইগুড়িতে স্থানীয় কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের মনোভাব ছিল এর উল্টো। তাঁদের অভিযোগ, একাধিক জায়গায় দলের ফ্লেক্স ছিড়ে দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় জয়রামের সঙ্গে একমত হতে পারছেন না তাঁরা। রাহুলের ‘ন্যায় যাত্রা’ শিলিগুড়িতে পৌঁছনোর পরে অবশ্য জয়রাম সুর বদলে বলেন, “বিজেপিকে দেশে থেকে সরাতে কংগ্রেসই পারে। এটা শুধু বাংলার নয়। গোটা দেশের বিষয়।”

বস্তুত, গত ২৫ জানুয়ারি কোচবিহারে যখন ‘ন্যায় যাত্রা’ ঢোকে, তখন থেকেই তৃণমূল না না ভাবে কংগ্রেস বিরোধিতা করে আসছে, দাবি স্থানীয়দের। ‘বাংলায় বিজেপিকে আটকাতে দিদিই একাই যথেষ্ট’— এমন লেখা পোস্টার নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। ব্যানার ছেড়া, কালো পতাকা দেখানো— এই সবও হয়েছে বলে দাবি কংগ্রেসের। সে প্রসঙ্গে, জয়রাম বলেন, ‘‘বিজেপিকে ঠেকাতে কংগ্রেসের বড় ভূমিকা বাংলায় এবং দেশেও। কংগ্রেস একমাত্র দল। ইন্ডিয়া জোট, পশ্চিমবঙ্গের জন্য শুধু নয়। গোটা দেশের জন্য।’’

জলপাইগুড়িতে সাংবাদিক বৈঠকের সময়ে জয়রামের পাশে বসেছিলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি পিনাকী সেনগুপ্ত। ছিলেন প্রদেশ নেতারাও। তাঁরা সাংবাদিক বৈঠকের পরে ঘর থেকে বেরিয়ে যান। সাংবাদিক বৈঠক শেষ হওয়ার আগেই জয়রামের পাশ থেকে উঠে যান জেলা কংগ্রেস সভাপতিও। পরে জলপাইগুড়ি পিনাকী বলেন, “এটা (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইন্ডিয়া জোটের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ) কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মতামত হতে পারে। তবে নিচুতলার কংগ্রেস কর্মীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কোনও দিন ক্ষমা করবে না।” একই সুরে দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক এআইসিসির সদস্য জীবন মজুমদার বলেন, ‘‘তিনি (জয়রাম রমেশ) তাঁর মতো করে বলেছেন। কিন্তু বাস্তব সত্য, তৃণমূল অসহযোগিতা করেছে।’’

শিলিগুড়ির মেয়র তথা তৃণমূল নেতা গৌতম দেব পাল্টা বলেন, ‘‘অন্য দলের যাত্রা কর্মসূচি। তৃণমূলের কাছে তারা তো সহযোগিতা চায়নি। তৃণমূলের তরফে ফ্লেক্স দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে বলার নেই।’’ জলপাইগুড়ির জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মহুয়া গোপ বলেন, “জোট নিয়ে যা বলার রাজ্য নেতৃত্বই বলবেন। তবে দিল্লির কংগ্রেস নেতৃত্ব বোধহয় বুঝে গিয়েছেন যে, পশ্চিমবঙ্গের মাটিটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাটি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Jalpaiguri Siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy