Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Threat Culture

শাস্তিমূলক ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ কী হবে, ‘ধন্দ’ কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে

আর জি করের ঘটনার পরে কোচবিহার মেডিক্যালেও ‘হুমকি-প্রথা’ নিয়ে অভিযোগে সরব হন ছাত্রছাত্রীরা।

কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।

কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৩৪
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের বৈঠকে কলেজের তরফে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠেছিল। সেখানে কলেজ কাউন্সিলের মাধ্যমে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা যে প্রক্রিয়ায় নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার জেরে ‘হুমকি-প্রথার’ (থ্রেট কালচার) তদন্তের ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুটা ‘ধন্দ’ দেখা দিয়েছে পড়ুয়াদের একাংশে। তবে কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ নির্মলকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘পুজোর জন্য হুমকি-প্রথার অভিযোগের তদন্তে কিছুটা দেরি হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত কমিটিকে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। সে রিপোর্টের ভিত্তিতে কলেজ কাউন্সিলে আলোচনা করা হবে। রাজ্য সরকারকে তা জানানো হবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্র বলেন, ‘‘যাঁরা হুমকি-প্রথার সঙ্গে জড়িত, তাঁরা আর জি করের ঘটনার পরে অনেকটাই চুপসে গিয়েছিলেন। আমরা অনেকেই লিখিত ভাবে তাঁদের নাম কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছিলাম। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কলেজ কর্তৃপক্ষ সরাসরি নিতে পারবেন না। এটা জানার পরে, তাঁরা আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। তদন্ত করে তা হলে কী লাভ হবে, তা নিয়েই আলোচনা হচ্ছে।’’

আর জি করের ঘটনার পরে কোচবিহার মেডিক্যালেও ‘হুমকি-প্রথা’ নিয়ে অভিযোগে সরব হন ছাত্রছাত্রীরা। লিখিত ভাবে অভিযোগের পাশাপাশি, কলেজ চত্বরে বিক্ষোভে সামিল হন ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই। অভিযোগ ছিল, বহিরাগতদের মদতে কলেজের কিছু ছাত্র হুমকি-প্রথার আমদানি করেছেন। তাঁদের কথা শুনে না চললে পরীক্ষায় ভাল নম্বর পাওয়া যাবে না বলে হুমকি জুটত। হস্টেলে কোন ঘরে কে থাকবেন, তা-ও ঠিক করে দিতেন ওই ছাত্ররা।

কলেজের অধ্যক্ষও দাবি করেছিলেন, তাঁকেও এমন অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হয়েছিল। এই অবস্থায় অধ্যক্ষ কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক করে একাধিক সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অনুমতি ছাড়া, দুই বহিরাগত চিকিৎসকের কলেজ চত্বরে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। ওই দুই বহিরাগত চিকিৎসকের এক জন কোচবিহারের একটি ব্লকের বিএমওএইচ এবং অন্য জন ওই ব্লকেরই এক চিকিৎসক। তাঁদের ‘মাথায়’ রাজ্য স্বাস্থ্য-শিক্ষায় ‘প্রভাবশালী’ চিকিৎসক গোষ্ঠী বলে পরিচিত ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র অভীক দে ও বিরুপাক্ষ বিশ্বাসের হাত রয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে।

অভিযোগের তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গড়া হয়। একটি ‘ইন্টারনাল কমিটিও’ তৈরি করা হয়। সে কমিটি তদন্তের পরে রিপোর্ট জমা দেবে অধ্যক্ষের কাছে। এর পরেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে কলেজ সূত্রে খবর। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের বৈঠকে কলেজ কাউন্সিলের নেওয়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তার পরেই কলেজের তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে ‘ধন্দ’ তৈরি হয়েছে।

অন্য দিকে, বহিরাগতদের যাতায়াতে নজরদারির জন্য কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে আরও ৬০টি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘কলেজে আগে থেকেই একশোটির মতো সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল। সেগুলি বিভিন্ন বিভাগ, গ্রন্থাগারে রয়েছে। এ বার ক্যাম্পাস ও হস্টেল চত্বরে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হল।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Cooch Behar Medical College Cooch Behar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy