—প্রতীকী চিত্র।
বরফের চাদরের ওপরে শোয়ানো আছে মস্ত সব কাতলা। থার্মোকলের বাক্সের ভিতরে ঝুরো ঝুরো বরফ মাখা ইলিশগুলোকে পরম যত্নে থরে থরে সাজানো।
চিতল, আড়েদের আলাদা জায়গা। আয়োজন সবই রয়েছে। শুধু জলপাইগুড়ির বাজারে ভাইফোঁটার আগের দিনের ভিড়টাই যেন উধাও। সকাল সকাল ফোঁটা-পর্ব শুরু হয় বলে সাধারণত ভাইফোঁটার আগের দিনই বাজার করে রাখেন সকালে। সে ভিড়ে স্টেশন বাজার, দিনবাজার বা বয়েলখানা বাজারে ভাইফোঁটার আগের দিন হাঁটাচলা করাই অসম্ভব হয়ে পড়ে। প্রতি বছর এই ছবিই দেখেছে এই সব বাজার। অথচ, এ বছর ভাইফোঁটার আগের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালের পরে সাইকেল নিয়েও ঢুকে যাওয়া গিয়েছে স্টেশন বাজারে।
স্টেশন বাজারের মাছ ব্যবসায়ী রাজেশ শাহের মন্তব্য, “এখন দিকে দিকে তৈরি খাবারের রেওয়াজ। ভাইফোঁটায় পাত পেড়ে খাওয়ানোর রেওয়াজটাই যেন নষ্ট হতে বসেছে। চিতল, আড়, ইলিশ—সবই এনেছিলাম। কিন্তু বিক্রি হল কই?”
শহরের খোলা মাছের যেটুকু চাহিদা ছিল তাতে এগিয়ে ছিল চিতল। চিতলের পেটি হাজার টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে এ দিন। পাঁচশো টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে আড়। ইলিশ বিক্রি হয়েছে দেড় হাজার টাকায়। শহরের বিভিন্ন রেস্তরাঁয় ভাইফোঁটার মেনু সাজানো হয়েছে ভেটকি মাছ দিয়ে। সে ভেটকি এসেছে কলকাতা থেকে, দার্জিলিং মেলে চেপে।
গত ১৮ বছর ধরে দিনবাজারে ফলের পাইকারি দোকান সামলাচ্ছেন মান্না সরকার। দিনবাজার আনাজ এবং মাছের বাজারের সংযোগস্থলে দোকান তাঁর।
তিনি বলেন, “ভাইফোঁটার আগে এমন ফাঁকা বাজার করোনা আবহেই দেখেছিলাম। গত বছরেও বাজার গমগম করেছে।” মুরগির মাংসের দাম কমতে কমতে একশো টাকা কেজিতে ঠেকেছে। স্টেশন বাজারের মাংস ব্যবসায়ী পিন্টু আলম বলেন, “এখন ছটপুজোর প্রস্তুতিতে অনেকে নিরামিষ খান। তাই দাম কমেছে। ভাইফোঁটার বাজারে চাহিদা বাড়লে দাম বাড়ত। কিন্তু তা-ও হয়নি।”
আনাজ বা মাছ ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, ভাইফোঁটায় নিজেরা বাড়িতে রান্না না করে রেস্তরাঁ বা কেটারার সংস্থাকে বরাত দিচ্ছেন অনেকে। সে ক্ষেত্রেও তো মাছ-মাংস-আনাজের জোগান বাজার থেকেই যাওয়া উচিত, তাতেও চাহিদা থাকে। দিনবাজারের আনাজ ব্যবসায়ী সুরেশ দাস বলেন, “রেস্তরাঁ বা কেটারার এক লপ্তে অনেক জিনিস কেনেন, তাঁদের জোগান আসে সস্তা দরে শহরের আশপাশের বাজার থেকে। তার প্রভাব শহরের বাজারে পড়ে না।” সেই সঙ্গে গড়পড়তা ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ার সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy