টাকার দাবিতে শিক্ষিকার বাড়ির সামনে বিক্ষোভকারীরা। নিজস্ব চিত্র
টাকা ফেরতের দাবি নিয়ে বালুরঘাটের এক স্কুল শিক্ষিকার বাড়িতে বেশ কয়েক জন জড়ো হন। টেট পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়া, প্রাথমিকে চাকরি দেওয়ার নাম করে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তোলেন তাঁরা বালুরঘাট ললিতমোহন আদর্শ স্কুলের শিক্ষিকা সোমা মণ্ডলের বিরুদ্ধে। গন্ডগোল দেখে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর পুলিশ ডাকেন। পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে শিক্ষিকার বাড়ি থেকেই শনিবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, ওই শিক্ষিকা এবং তাঁর স্বামী বিপ্লব মণ্ডল চাকরির ‘টোপ’ দিয়ে টাকা তুলতেন। তবে এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত বিপ্লব গত তিন মাস ধরে বাড়িছাড়া। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহম্মদ নাসিম বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে শিক্ষিকাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।’’
কামারপাড়া পঞ্চায়েতের বাসিন্দা ঋতু সরকার এ দিন সকালে এলাকার কয়েক জনকে নিয়ে যান যোগমায়াপাড়ায় শিক্ষিকার বাড়িতে। ঋতুর অভিযোগ, প্রাথমিকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ২০১৬ সালে তাঁর কাছে সাড়ে চার লক্ষ টাকা নেন সোমা। তিনি বলেন, ‘‘চাকরি করে দেবেন বলে আমার শিক্ষাগত যোগ্যতার সমস্ত নথিও আটকে রেখেছেন উনি।’’ পুলিশ জানায়, সোমার বিরুদ্ধে ঋতু অভিযোগ দায়ের করার পরে, তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিক জেরায় সোমা তাদের জানিয়েছেন, টাকা কলকাতায় কোনও এক ‘প্রভাবশালীর’ কাছে গিয়েছে।
এ দিকে সোমার গ্রেফতারের খবর ছড়াতেই বালুরঘাট থানায় হাজির হন তাঁরই দূর সম্পর্কের আত্মীয়, খাসপুরের গোপাল সরকার। তাঁর দাবি, ‘‘আমার ছেলে রনিকে টেট পাশ করিয়ে দেবে বলে সাড়ে ন’লক্ষ টাকা নেয় বিপ্লব। টেট পাশের নথিও দেয়। কিন্তু ইন্টারভিউ কবে সে কথা জানাচ্ছিল না। এ দিন এসে জানলাম, এই নথিও জাল।’’ যদিও শনিবার রাত পর্যন্ত একটিই লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে।
জেলা তৃণমূল সভাপতি মৃণাল সরকার বলেন, ‘‘বিপ্লব তৃণমূল করতেন কি না, তা আমার জানা নেই। তৃণমূল অনেকেই করতে পারেন। কিন্তু অপরাধ করলে, দল পাশে থাকবে না।’’
স্থানীয় বাসিন্দা তথা এলাকার একটি ক্লাবের সম্পাদক রাজীব মোহান্তের দাবি, ‘‘দীর্ঘ দিন থেকেই পাওনাদারেরা ঘুরছেন। ওই পরিবারের জন্য এলাকায় ঝামেলা হচ্ছে।’’ পুলিশ আসার আগে বারান্দায় দাঁড়িয়ে এ দিন সোমা বলেন, ‘‘জায়গা বিক্রি করে টাকা দেব।’’ স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সুরজিৎ সাহা বলেন, ‘‘বিপদ হতে পারে এই আশঙ্কায় পুলিশকে ডাকি।’’ পুলিশ ওই শিক্ষিকাকে তুলে নিয়ে যায়। বাড়িতে তালা লাগিয়ে বার করে দেওয়া হয় সোমার শাশুড়ি জ্যোৎস্নাকে। প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নেন জ্যোৎস্না। তিনি বলেন, ‘‘আমার ছেলে বিপ্লব আগে এলআইসি এজেন্ট ছিল। পরে, তৃণমূল করত। বৌমা টাকা কলকাতার কাউকে দিয়েছে। প্রয়োজনে, জায়গা-জমি বিক্রি করে টাকা ফেরত দেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy