দুর্দশা: সেই ভাঙা স্কুল। জলপাইগুড়ির বালাপাড়ায়। ছবি: সন্দীপ পাল।
কোনও অনুমতির তোয়াক্কা না করে ভেঙে দেওয়া হয়েছে স্কুলের ক্লাসঘর, পুরনো ঘর ভেঙে ইট খুলে তা দিয়ে তৈরি হচ্ছে মন্দির— এমন অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে স্থানীয় কয়েক জনের বিরুদ্ধে। তাঁদের নির্দেশেই স্কুলের চারটি ঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে সেই ইঁট দিয়ে পাশেই একটি মন্দির তৈরির কাজ চলছে বলে অভিযোগ জলপাইগুড়ির বালাপাড়ায়। ঘর থেকে লোহা, কাঠও সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে দাবি।
স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, কিছু দিন আগে স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েতের তরফে তাঁদের কাছে ঘরগুলি ভেঙে নতুন করে তৈরি করার প্রস্তাব এসেছিল। কর্তৃপক্ষ রাজি হননি। তার পরে গরমের ছুটি শুরু হয়। ছুটির সময়ে ঘরগুলি ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে তাঁদের দাবি। চারটি ঘরের মধ্যে দু’টির আর কোনও চিহ্ন নেই, বাকি দু’টি ঘর ভাঙা চলছে বলে তাঁদের একাংশ জানিয়েছে।
জলপাইগুড়ির বালাপাড়ায় তিস্তার চর স্টেট প্ল্যান প্রাথমিক স্কুলের ক্লাস হয় ধর্মুদেব হাইস্কুলের চত্বরে। বর্তমান ক্লাসঘরের উল্টো দিকে প্রাথমিক স্কুলের পুরোনো চারটি ক্লাসঘর ছিল। সেগুলি ষাটের দশকে তৈরি। ইঁট দিয়ে তৈরি মোটা দেওয়ালের ক্লাসঘর। সেখানে এখন স্কুল না বসলেও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চলত। ঘর ভেঙে ফেলায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাজও সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় সরকার বলেন, “কিছু দিন আগে পঞ্চায়েত সদস্য আমাদের পুরনো ঘর ভেঙে ফেলে নতুন তৈরি করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ওই ঘরগুলোতে আমাদের ক্লাস হয় না এখন। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে বলেছিলাম। তার পরে কী হয়েছে জানি না, গরমের ছুটি ছিল।” স্কুলের পার্শ্বশিক্ষক বিকাশ শাখারি বলেন, “হঠাৎ একদিন দেখলাম স্কুলের ঘরগুলি ভেঙে ফেলা হচ্ছে।”
স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একাংশ এ দিন দাবি করেছে, “বিডিও অফিসে সব জানানো হয়েছে।” যদিও জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বিডিও সুমন্ত দেবনাথ বলেন, “আমরা অনুমতি দেওয়ার কেউ নই। দেওয়ার প্রশ্নও ওঠে না। যে দফতরের ঘর, তারাই অনুমতি দেবে।” জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক শ্যামলচন্দ্র রায় বলেন, “ওই স্কুলের ঘর ভাঙতে আমরা কাউকে অনুমতি দিইনি। কোনও ঘর ভাঙতে হলে আগে আমাদের বাস্তুকরেরা পরিদর্শন করেন, তার পরে সরকারি ভাবে নিলাম হয়।”
তাহলে সরকারি ঘর ভাঙার অনুমতি দিল কে? ঘরগুলি ভেঙে নতুন ঘর বানানোর টাকা দেবে কে?
স্থানীয় খড়িয়া অঞ্চলের উপপ্রধান সুভাষ চন্দ বলেন, “আমাদের তো এমন কোনও পরিকল্পনা নেই। বিষয়টি জানিও না।” স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত অমিত মণ্ডল বলেন, “কে কী বলছে, তা নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। আমার কথা লিখতে হলে সামসামনি কথা বলবেন। আমি এখন বাড়িতে নেই। তিন-চার দিন পরে ফিরব। ফোন করবেন না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy