এক দিনেই ষষ্ঠী থেকে দশমীর আয়োজন। — সন্দীপ পাল
দুর্গা পুজো শেষ৷ শেষ লক্ষ্মী পুজোও৷ এখন ব্যস্ততা কালীপুজোর প্রস্তুতি ঘিরে৷ ব্যতিক্রমী ছবি জলপাইগুড়ির রংধামালিতে। অকাল শারদোৎসবে মাতলেন এখানকার বাসিন্দারা। বাজার এলাকায় পূজিত হলেন দুর্গা ৷ এক দিনেই হল ষষ্ঠী থেকে দশমীর পুজো৷ তবে পুজো এক দিনের হলেও এই পুজোকে ঘিরে এ দিন থেকেই রংধামালিতে বসেছে মহারাজ মেলা৷ যা চলবে তিন দিন ধরে ৷
১৩৫ বছর ধরে প্রতি বছর লক্ষ্মী পুজোর পরের রংধামালিতে অনুষ্ঠিত হয় এই পুজো৷ অসময়ের দুর্গা আরাধনা নিয়ে অবশ্য এলাকায় নানা কথা প্রচলিত রয়েছে৷ কথিত রয়েছে, পুজোর পর কৈলাশ ফেরার সময় রংধামালিতে তিস্তা নদীর পাড়ে একদিন বিশ্রাম নিয়েছিলেন উমা৷ দিনটা ছিল লক্ষ্মী পুজোর পরের বৃহস্পতিবার৷ তাই তখন থেকে এইদিনে সেখানে দুর্গাপুজোর আয়োজন হয়ে আসছে৷ আবার কেউ কেউ বলেন, একবার দুর্গা পুজোয় স্থানীয় বাসিন্দারা অংশ নিতে পারেননি৷ সেই সময় তারা বৈকুন্ঠপুরের মহারাজার কাছে ফের তাদের ওখানে পুজোর আয়োজনের আর্জি জানান৷ সেইমত সেখানে দুর্গা পুজোর আয়োজন হয়৷ তখন থেকেই তা হয়ে আসছে ৷
এই পুজো ও মেলাকে ঘিরে রীতিমত উৎসবে মেতে ওঠেন স্থানীয়রা৷ পুজোর আরেকটি বিশেষত্ব হল, এলাকার মেয়েদের যেখানেই বিয়ে হোক না কেন, পুজোর সময় তারা প্রত্যেকেই বাবার বাড়িতে আসবেনই৷ স্থানীয় বাসিন্দা অজিত রায়ের কথায়, ‘‘আত্মীয়দের ভিড়ে এলাকার কোন বাড়িতেই তিল ধারণের জায়গা নেই৷ এই সার্বজনীন দুর্গাপুজো ও মহারাজ মেলা কমিটির সভাপতি তথা বারোপাটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কৃষ্ণ দাসের কথায়, ‘‘পুজোর ঠিক পরেরদিন অর্থাৎ শুক্রবার নতুন শাখা পড়লে স্বামীর আয়ু বাড়ে বলে এখানে একটা বিশ্বাস রয়েছে ৷ তাই এখানকার মেয়েরা পুজোর সময় রংধামালিতে বাবার বাড়িতে আসবেনই৷’’
পুজো উপলক্ষে নকশালবাড়ি ও ময়নাগুড়ি থেকে স্বামী-সন্তানদের নিয়ে রংধামালিতে এসেছেন ভানুমতি চৌধুরী, অনিতা মণ্ডলরা৷ তাদের কথায়, “সারা বছরে কবে বাবার বাড়িতে আসব ঠিক না থাকলেও, এই সময়টাতে প্রতিবারই আসি৷ মেলা শেষ হওয়ার পরই শ্বশুরবাড়ি ফিরি৷ আমাদের দুর্গাপুজোর আসল আনন্দটা তো এই সময়েই৷”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy