Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Farakka

কী ভাবে ভাঙল সেতু, এখনও ধোঁয়াশা

মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থলে যান রাজ্যের তিন সদস্যের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদল। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ঘটনাস্থল থেকে লোহার রড, নির্মাণ সামগ্রীর নমুনা সংগ্রহের পাশাপাশি সেতুর ভাঙা অংশের ছবিও তোলেন তাঁরা।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বৈষ্ণবনগর শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৪৭
Share: Save:

মালদহের বৈষ্ণবনগরে নির্মীয়মাণ সেতু বিপর্যয়-কাণ্ডের তদন্ত শুরু করল প্রশাসন।

মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থলে যান রাজ্যের তিন সদস্যের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদল। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ঘটনাস্থল থেকে লোহার রড, নির্মাণ সামগ্রীর নমুনা সংগ্রহের পাশাপাশি সেতুর ভাঙা অংশের ছবিও তোলেন তাঁরা। ফরেন্সিক দলের সদস্য চিত্রাক্ষ সরকার বলেন, ‘‘নির্মীয়মাণ সেতুর ৪১ নম্বর স্তম্ভের কয়েকটি অংশ সরে গিয়ে লঞ্চিং গার্ডার পড়ে থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই নমুনা পরীক্ষা করে দেখা হবে। তার পরেই নির্মাণ সামগ্রীর মানের বিষয়টি স্পষ্ট হবে।’’

ঘটনার পর ৪৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও এখনও সেতু ভেঙে পড়ার কারণ স্পষ্ট হয়নি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছেও। সেতুর নকশায় গলদ, নাকি যান্ত্রিক কোনও ত্রুটিতে ওই ঘটনা ঘটে তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। এ দিন ঘটনাস্থলে যান জাতীয় সড়কের পূর্বাঞ্চলীয় শাখার চিফ জেনারেল ম্যানেজার আর পি সিংহ। যান কেন্দ্রীয় লেবার কমিশনের আধিকারিক বাবুলি নায়েক। তিনি বলেন, ‘‘শ্রমিক ও দুর্ঘটনার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

এ দিনই দুপুরে ঘটনাস্থলে যান তৃণমূল ও কংগ্রেসের নেতানেত্রীরা। তৃণমূলের মৌসম নূর অভিযোগ করে বলেন, ‘‘বিজেপি ঘনিষ্ঠ হওয়ায় সেতুনির্মাণে ঠিকাদার সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছে। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে গঙ্গার উপরে গুরুত্বপূর্ণ ওই সেতু তৈরি করা হচ্ছে। আমরা চাই ওই সংস্থাকে কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক।’’ সেতুর নির্মাণকাজ নিয়ে বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলেছেন কংগ্রেস বিধায়ক ইশা খান চৌধুরীও। তিনি বলেন, ‘‘ওই ঘটনার তদন্ত গুরুত্ব দিয়ে করা উচিত।’’

ওই দুর্ঘটনা নিয়ে তৃণমূল ও কংগ্রেস রাজনীতি করছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন মালদহের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত অবশ্যই করা হবে। গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। তৃণমূল ও কংগ্রেস রাজনীতি করতে দুর্ঘটনার দু’দিন পরে সেখানে যাচ্ছে।’’

গত রবিবার সন্ধ্যায় বৈষ্ণবনগরের নিউ খেজুরিয়া গ্রামে ভেঙে পড়ে নির্মীয়মাণ সেতুর একাংশ। ওই ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু এবং তিন জন আহত হন। আহতদের মধ্যে দু’জন কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। সহকর্মীরা জানান, তাঁদের অবস্থা এখনও সঙ্কটজনক।

প্রশ্ন উঠেছে, রাতের অন্ধকারে কেন সেতু নির্মাণের কাজ চলছিল। সেতুর নকশায় গলদ রয়েছে বলে দাবি করেছেন ওই ঠিকাদার সংস্থার কর্মী, দুর্ঘটনায় মৃত সচিন প্রতাপের বাবা উদয়বীর সিংহ। শ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ, তাড়াহুড়ো করে সেতু নির্মাণের কাজ চলছিল।

এমন পরিস্থিতিতে সেতু তৈরির বরাতপ্রাপ্ত দু’টি ঠিকাদার সংস্থার কর্তাদের ডেকে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। জাতীয় সড়কের পূর্বাঞ্চলীয় শাখার চিফ জেনারেল ম্যানেজার আর পি সিংহ বলেন, ‘‘নির্মাণ সামগ্রীর মান নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। ঠিকমতোই সেতু নির্মাণের কাজ চলছিল। কী ভাবে বিপর্যয় হল তা খতিয়ে দেখছি। এখনই কোনও ত্রুটির কথা বলা যাবে না।’’

অন্য দিকে, মালদহের বৈষ্ণবনগরে নির্মীয়মাণ সেতু ভেঙে গুরুতর জখম রঞ্জন কুমার অস্ত্রোপচারের পরে ভাল আছেন। তবে সঙ্কট কাটেনি। এ দিকে মুকেশ পাণ্ডের অস্ত্রোপচার মঙ্গলবারও হয়নি। মুকেশের দু’টি পায়ের হাড় ভেঙে গিয়েছে। কলকাতার পার্ক সার্কাসের বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রের খবর, এদিন সকালে কলকাতার অন্য কোনও হাসপাতালে মুকেশকে ভর্তি করানোর জন্য নিয়ে যান তাঁর পরিজনেরা। একাধিক হাসপাতাল ঘুরে বিকালে আবার তাঁরা পার্ক সার্কাসের বেসরকারি হাসপাতালে ফিরে আসেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Farakka Bridge Collapse
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy