Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Drinking water

পানীয় জলের সমস্যা কি এ বার মিটবে!

বাম আমলেও এই বিধানসভায় কখনও কংগ্রেস, কখনও বা নির্দল প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন হরিহরপাড়ার মানুষ।

কৃষক বাজার। নিজস্ব চিত্র।

কৃষক বাজার। নিজস্ব চিত্র।

মফিদুল ইসলাম
হরিহরপাড়া শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২১ ০৫:৪৩
Share: Save:

হরিহরপাড়া ব্লকের দশটি ও বহরমপুর ব্লকের দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে হরিহরপাড়া বিধানসভা। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের ইনসার আলি বিশ্বাসকে হারিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী নিয়ামত সেখ। এর আগে ২০০১ সালেও কংগ্রেসের সমর্থনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে ওই আসনে জিতেছিলেন তিনি। ২০১৬ সালে ওই কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী ছিলেন মির আলমগির।

বাম আমলেও এই বিধানসভায় কখনও কংগ্রেস, কখনও বা নির্দল প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন হরিহরপাড়ার মানুষ। গত পাঁচ বছরে এলাকার সার্বিক উন্নয়ন ঘটিয়েছেন বলেই দাবি বিধায়ক নিয়ামতের। বাসিন্দাদের একাংশের কথাতেও সেই সুর। তাঁরা বলছেন, ‘‘পিছিয়ে পড়া হরিহরপাড়ার রাস্তাঘাটের আমূল পরিবর্তন ঘটেছে গত পাঁচ বছরে।’’ নিয়ামত বলছেন, ‘‘গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে আমি মানুষকে বলেছিলাম, আমায় জেতালে আমি আপনাদের জন্য কাজ করব। আমি তাই করে যাচ্ছি। প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে।’’

ব্লক তৃণমূল সভাপতি সামসুজ্জোহা বিশ্বাসেরও দাবি, ‘‘গত কয়েক বছরে বিধায়কের সুপারিশে ছ’টি গ্রামীণ সড়ক যোজনার আওতায় ৫৩ কিমি পিচের রাস্তা তৈরি হয়েছে। প্রায় ১৩০ কিমি ঢালাই রাস্তা, নর্দমা তৈরি হয়েছে।’’ সামসুজ্জোহা জানান, রাজ্য সরকারের ‘রূপশ্রী’, ‘কন্যাশ্রী’, ‘কৃষকবন্ধু’-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের সহায়তা পাচ্ছেন সমস্তস্তরের উপভোক্তারা। আবাস যোজনায় চলতি অর্থবছরে প্রায় পাঁচ হাজার ও ‘গীতাঞ্জলি’ প্রকল্পে প্রায় ১৩০০ জন উপভোক্তা ঘর পেয়েছেন বলে দাবি তাঁর। এছাড়া, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতির মাধ্যমে নারেগা প্রকল্প-সহ একাধিক প্রকল্পে ছোট-বড় কাজ হয়েছে। তৈরি হয়েছে একাধিক কর্মতীর্থ, জানান তিনি। তাঁর আরও দাবি, ২০১৯ সালে মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফরে এলে তাঁর কাছে ভাকুড়ি থেকে হরিহরপাড়া পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিমি রাজ্য সড়ক সংস্কার ও সম্প্রসারণের জন্য তদ্বির করেছিলেন বিধায়ক। তাতে কাজ হয়। ওই বছরের শেষের দিক থেকে সেই রাস্তা সংস্কার ও সম্প্রসারণের কাজ শুরু করেছে
পূর্ত দফতর।

যদিও রাস্তাঘাট হলেও তা নিম্নমানের হয়েছে বলে দাবি বিরোধীদের। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই অধিকাংশ রাস্তা বেহাল হয়ে গিয়েছে সেই কারণেই, দাবি বাম-কংগ্রেসের। হরিহরপাড়া ব্লক কংগ্রেস সভাপতি মির আলমগির বলেন, ‘‘রাজ্য সড়ক সম্প্রসারিত হলেও সেই কাজ নিম্নমানের হচ্ছে। রাস্তা তৈরির কাজ শেষ হওয়ার আগেই তিন বার করে তাপ্পি দিতে হল। এসব শাসকদলের নেতাদের কাটমানি খাওয়ার জন্যই হয়েছে।’’ এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, হরিহরপাড়ার প্রধান সমস্যা পানীয় জলে আর্সেনিকের আধিক্য। এখনও অধিকাংশ এলাকায় পৌঁছয়নি পরিস্রুত পানীয় জলের পরিষেবা। যদিও বিধায়কের দাবি, ‘‘আমাদের উদ্যোগেই বহরমপুরের হরিদাসমাটি এলাকায় গঙ্গার জল পরিস্রুত করে তা পাইপলাইনের মাধ্যমে ঘরে ঘরে পৌঁছনোর কাজ শুরু হয়েছে।’’ প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক তথা দলের এরিয়া সম্পাদক ইনসার আলি বিশ্বাস যা শুনে কটাক্ষ করেন, ‘‘ঘরে ঘরে জল পৌঁছনো তো দূরের কথা, জলের ট্যাঙ্ক চালু হওয়ার আগেই ভেঙে পড়েছে।’’ তবে ওই বামনেতার সুরেই সুর মিলিয়েছেন এক গ্রামবাসীও। হরিহরপাড়ার ডল্টনপুরের বাসিন্দা সাইদুল ইসলামের ক্ষোভ, ‘‘আমাদের ব্লকে আর্সেনিকের সমস্যা রয়েছে। ফলে নলকূপের জল সরাসরি পান করা বিপজ্জনক। দীর্ঘদিন ধরেই শুনছি, প্রতিটি বাড়িতে নাকি বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেবে প্রশাসন। কিন্তু কোথায় কী! আমাদের এলাকার অনেক মানুষেরই জল কিনে খাওয়ার ক্ষমতা নেই। তাই জেনেশুনেও তাঁরা বিষ-জলই পান করছেন।’’

বিরোধীদের অভিযোগকে ‘সস্তা রাজনীতি’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন হরিহরপাড়ার বিধায়ক। নিয়ামত ফের দাবি করেন, ‘‘মানুষ উন্নয়ন কী তা দেখেছেন আমাদের আমলেই। গত কয়েক বছরে দুয়ারে সরকার পৌঁছেছে। ফলে ফের তাঁরা আমাদেরই ভোট দেবেন। এই বিশ্বাস আমাদের।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy