Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Bhutan

Chamurchi: ১৬ মাস বন্ধ ভুটান সীমান্ত, মাছি উড়ছে চামুর্চি বাজারে, সরকারি হস্তক্ষেপের দাবি ব্যবসায়ীদের

স্থানীদের অভিযোগ,টানা ১৬ মাস ধরে বন্ধ ভুটান সীমান্ত। তার জেরে তিন বেলার খাবার জোটানোই দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নেই আগের সেই ব্যস্ততা, খাঁ খাঁ করছে ভুটান সীমান্ত।

নেই আগের সেই ব্যস্ততা, খাঁ খাঁ করছে ভুটান সীমান্ত। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ধূপগুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২১ ২১:৪৭
Share: Save:

বিক্রিবাটা যা হতো, হেসে খেলে সংসার চলে যেত তাতে। কিন্তু অতিমারিতে কেড়ে নিয়েছে সর্বস্ব। এখন কার্যত নিঃস্ব হওয়ার পথে তাঁরা। তা নিয়ে হতাশা উগরে দিলেন ভুটান সীমান্তবর্তী চামুর্চির ব্যবসায়ীরা। তাঁদের অভিযোগ, দেশে প্রথম করোনা রোগীর হদিশ মিলতেই সীমান্ত বন্ধ করে দেয় ভুটান সরকার। সে প্রায় ১৬ মাস আগের কথা। সেই থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য সব বন্ধ। উপায় না দেখে ইতিমধ্যেই ব্যবসার ঝাঁপ ফেলে দিয়েছেন অনেকে। স্বাধীন ভাবে রোজগারের বদলে কাজের সন্ধানে পাড়ি দিয়েছেন ভিন্ রাজ্যে। এখনও আশা নিয়ে বসে রয়েছেন কয়েক জন। কিন্তু তীর্থের কাকের মতো সারাদিন বসে থাকলেও কেনাবেচা নেই। ক্রেতার অভাবে জিনিসপত্র পড়ে থেকে মেয়াদই পেরিয়ে গিয়েছে। ফলে বস্তা বস্তা মালপত্র ফেলে দিতে হয়েছে। তাতে কোটি কোটি টাকার লোকসান হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি ব্লকের অন্তর্গত চামুর্চি এলাকায়, ভূটান ঢোকার যে প্রবেশ পথ, এত দিন সেখান দিয়েই বাংলায় ব্যবসা-বাণিজ্য হতো। রাজ্যে এমনকি গোটা দেশের তুলনায়, চামুর্চি বাজার ভুটানের উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। কিন্তু করোনার প্রকোপে সেই চামুর্চি বাজারে বসে এখন মাছি তাড়াচ্ছেন প্রায় ১৫০ জন ব্যবসায়ী। চামুর্চিতে এখনও সম্পূর্ণ লকডাউন চলছে। তার উপর ভূটান সরকার সীমান্ত বন্ধ রাখায়, সে দেশের মানুষের আনাগোনা সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। শুধু ব্যবসায়ীরাই নন, সমস্যায় পড়েছেন গাড়িচালকরাও। যাত্রীভাড়া বাবদ যে আয় থেকে সংসার চলত, তা বন্ধ। এখন কাজের সন্ধানে তাঁরাও অন্য উপায় খুঁজছেন। ৭০ শতাংশ ব্যবসায়ী ইতিমধ্যেই অন্যত্র কাজের সন্ধানে চলে গিয়েছেন।

দৈনিক সংক্রমণ এবং মৃত্যু নিম্নমুখী হতেই রাজ্যে কোভিড বিধিনিষেধে ছাড় ঘোষণা করেছে নবান্ন। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দোকান-বাজার খোলা রাখায় অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভুটান সরকার এখনই সীমান্ত খুলে দেওয়ার পক্ষপাতী নয়। তাতেই পেটে টান পড়ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের মতে, চামুরচি বাজারকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হলে সরকারকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করে সমস্যা সমধানের রাস্তা বার করতে হবে। এ ভাবে উপার্জনহীন হয়ে বেশি দিন চলতে পারে না।

স্থানীয় ব্যাবসায়ী ইবতেখার আনসারি বলেন, ‘‘অন্য জায়গায় তিন-চার মাস পর লকডাউন খুলে গেলেও চামুর্চি চেকপোস্ট দীর্ঘ ১৬ মাস ধরে বন্ধ। এখানে সম্পূর্ণ লকডাউন চলছে, যার জন্য ব্যবসা বাণিজ্য সম্পূর্ণ বন্ধ।’’ কায়ুম আনসারি নামের অন্য এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘ লকডাউন এর প্রভাবে দীর্ঘদিন বন্ধ ভুটান সীমান্ত। যে কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যও বন্ধ। গাড়ি চলাচলও সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। তার ফলে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি গাড়িচালকরাও মার খাচ্ছেন। এখানকার মানুষ ঠিকমতো খেতেও পাচ্ছেন না। প্রশাসন যদি কোন সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করেন তাহলে নিষ্কৃতী মেলে।’’ বিধান সরকার নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘ভুটান সীমান্ত বন্ধ রাখায়। অনেকেই ভিন্ রাজ্যে কাজের সন্ধানে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। তিনবেলা পেট ভরে খাবার জোটানো মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে মানুষ বাঁচবেন না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE