ফাইল চিত্র।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সম্পর্কে রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরির মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করলেন আর এক মন্ত্রী বুলুচিক বরাইক। অখিলের মন্তব্যের বিরোধিতা করে বুলুচিকের বক্তব্য, ‘‘সব জাতিকে সম্মান করা উচিত। উনি আমাদের ভারতবর্ষের রাষ্ট্রপতি। উনি যে কোনও জনজাতিরই হতে পারেন। আমাদের দায়িত্ব ওঁকে সম্মান জানানো।’’ রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে মন্তব্যের জেরে বিতর্ক তৈরি হতেই অখিলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছে শাসকদল তৃণমূল। আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, দল ওই মন্তব্যকে সমর্থন করে না। প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন অখিলও। এ দিকে, বিজেপিও এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে তৃণমূলকে ‘আদিবাসী বিরোধী’ আখ্যা দিতে শুরু করেছে বিজেপি। তার প্রেক্ষিতে বুলুচিকের প্রতিক্রিয়া তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকে, কারণ তিনি রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতর এবং আদিবাসি উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী।
শনিবার শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ফাঁসিদেওয়া ব্লকের হাঁসখোয়াতে ধামসা, মাদল বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আদিবাসী উন্নয়ন বিভাগ। সেখানে যান বুলুচিক। অখিলের মন্তব্য নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘উনি কেন এ ধরনের কথা বলেছেন, সেটা ওঁকেই জিজ্ঞেস করুন। আমি বলতে পারব না। তবে, এ ধরনের মন্তব্য ঠিক নয়। সব জাতিকেই সম্মান জানানো উচিত। সব থেকে বড় কথা হল, উনি আমাদের রাষ্ট্রপতি। উনি কোন জাতির, সেটা বড় কথা নয়। সম্প্রতি উনি সিকিম ঘুরে গেছেন। ওঁকে স্বাগত জানানোর দায়িত্ব ছিল আমার। আমি তা করেছি। আবার ফেরার সময়েও ওঁকে আমিই বিদায় জানিয়েছি। সকল শ্রেণির মানুষকেই সম্মান করা আমাদের কর্তব্য।’’
শুক্রবার নন্দীগ্রামে গিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছ অখিলের বিরুদ্ধে। অখিলের ওই সভার একটি ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে। সেটির সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি। ফুটেজে দেখা গিয়েছে, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষও ওই সভায় হাজির রয়েছেন। তাঁর সামনেই অখিলকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমরা রূপের বিচার করি না। তোমার রাষ্ট্রপতির চেয়ারকে আমরা সম্মান করি। তোমার রাষ্ট্রপতিকে কেমন দেখতে বাবা?’’
ওই ভিডিয়োকে হাতিয়ার করে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং দলের সর্বভারতীয় আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয় টুইটারে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হন। সুকান্তের অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ‘আদিবাসী বিরোধী’। মন্ত্রীর ওই বক্তৃতার ভিডিয়ো পোস্ট করে মালবীয় টুইটারে লেখেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য অখিল গিরি বলছেন, ‘আমরা রূপের বিচার করি না। কিন্তু তোমাদের রাষ্ট্রপতি কেমন দেখতে? মুখ্যমন্ত্রী (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) সব সময়েই জনজাতি বিরোধী। তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থন করেননি। এর পর এমন ঘটনা, লজ্জাজনক!”
মন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে স্বাভাবিক ভাবেই বেজায় অস্বস্তিতে পড়ে তৃণমূল। শাসকদলের পক্ষ থেকে একটি টুইট করে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করা হয়েছে। লেখা হয়েছে, ‘‘ভারতের মাননীয় রাষ্ট্রপতি, শ্রীমতি দ্রৌপদী মুর্মুকে আমাদের পরম শ্রদ্ধা। আমাদের দলের বিধায়কের করা দুর্ভাগ্যজনক মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করি এবং স্পষ্ট করে জানাতে চাই যে, অখিল গিরির মন্তব্যের আমরা তীব্র বিরোধিতাও করি।’’
পরে দুঃখপ্রকাশ করেন অখিলও। তিনি বলেন, ‘‘এক মাস আগে থেকে শুভেন্দু অধিকারী বিভিন্ন জায়গায় আমার সম্পর্কে কটূক্তি করেছেন। আমি বয়স্ক মানুষ। আমার মনে ক্রোধ জন্মেছিল। রাষ্ট্রপতি মহোদয়াকে আমি কোনও অসম্মান করিনি। তাঁর প্রতি আমার অগাধ শ্রদ্ধা রয়েছে। যে কথা আমার মুখ থেকে বেরিয়েছে, তা ক্রোধের বশে বেরিয়ে এসেছে। আমি অনুতপ্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy