দক্ষিণ দিনাজপুরে বিএসএনএলের বেহাল টেলি পরিষেবায় গ্রাহক হয়রানি থেকে প্রশাসনিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়ে পড়ার অভিযোগ উঠল। ছুটির দিনগুলিতে বালুরঘাটে মোবাইল, এসটিডি, ব্রডব্যান্ড এবং ইমেল পরিষেবা মেলে না বল অভিযোগ গ্রাহকদের। ঘটনায় ক্ষুব্ধ দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বালুরঘাটে দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট বিএসএনএলের কর্মীদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে বলে জানিয়েছেন। জেলাশাসক বলেন, এ রকম বেহাল অবস্থা চলতে থাকলে বিএসএনএলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের বিরুদ্ধে থানায় কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করা হবে। বিএসএনএলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সোমনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘জেলাশাসক ক্ষোভ থেকে ওই কথা বলেছেন। তবে সম্প্রতি মালদহে ফাইবার কেবলে গোলযোগের ফলে বালুরঘাটে পরিষেবা ব্যাহত হয়।
গত বৃহস্পতিবার মহাবীর জয়ন্তী থেকে শুক্রবার গুডফ্রাইডের ছুটি এবং শনি ও রবিবার দিনগুলিতে রহস্যজনক ভাবে বিএসএনএলের মোবাইল থেকে ব্রডব্যান্ড পরিষেবা স্তব্ধ ছিল বলে গ্রাহক থেকে প্রশাসনের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে। জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, ‘‘বেশ কিছু দিন থেকে লক্ষ্য করছি ছুটির দিনগুলিতে বালুরঘাটে বিএসএএলের যাবতীয় পরিষেবা অকেজো হয়ে পড়ে।’’ বেসরকারি টেলি সংস্থার সঙ্গে বিএসএনএলের কর্মীদের একাংশের গোপন আঁতাতের ফলে ওই অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে জেলাশাসক অভিযোগ করেন। বেসরকারি টেলি পরিষেবায় এ ধরনের কোনও সমস্যা হয় না বলে সন্দেহ বাড়ছে, জানান জেলাশাসক।
সংশ্লিষ্ট বিএসএনএলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সোমনাথ ঘোষ আতাঁতের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘রাস্তা খোঁড়ার সময়ে মাটির নীচে থাকা টেলিফোনের কেবল কেটে যাওয়ার ফলে সমস্যা হয়। সেই কেবল মেরামতি করতে অনেক সময়ে দেরি হয়।’’
বিএসএনএল পরিষেবা বেহাল হয়ে পড়ার জেরে পুলিশের হান্ড্রেড ডায়াল থেকে দমকল, হাসপাতাল, ব্লক অফিস, ব্যাঙ্ক, এটিএম, ডাকঘর থেকে আর্থিক লেনদেন ও রেলের টিকিট বুকিং-সহ সমস্ত প্রশাসনিক পরিষেবা ও কাজকর্ম বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। ফলে জেলার দূরদূরান্ত থেকে সাধারণ মানুষ চরম হয়রানির মধ্যে পড়েছেন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, টেলি কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় দিনের পর দিন বিএসএনএল পরিষেবা খারাপ হয়ে থাকলেও অন্য বেসরকারি টেলি সংস্থার পরিষেবা দিব্যি চালু থাকে কী করে?
ওই সমস্ত সংস্থার সঙ্গে বিএসএনএল কর্তৃপক্ষের একাংশের অশুভ আঁতাত রয়েছে কিনা পর পর ওই ঘটনায় বাসিন্দাদের তা নিয়ে সন্দেহ বাড়ছে। এ বিষয়ে বিএসএনএলের দক্ষিণ দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার নীতিন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দিনভর তাঁর কল ডাইভার্ট অবস্থায় মেলে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, কেবল কাটার দোহাই দিয়ে কর্তৃপক্ষ সমস্যা পাশ কাটানোর চেষ্টা করছেন।
বালুরঘাট হাসপাতালের সুপার অসিত দেওয়ান বলেন, ‘‘চিকিৎসকদের সঙ্গে প্রয়োজনে ঠিক মতো যোগাযোগ করতে না পারায় বিপাকে পড়তে হয়। থানা কর্তৃপক্ষও চরম নাকাল হন। বিডিও, এসডিও থেকে প্রশাসনের সমস্ত দফতরের আধিকারিকেরা সিম পরিবর্তনের উদ্যোগ নিচ্ছেন। জেলা পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া চরম অস্বস্তিতে পড়ে বিএসএনএলের বদলে অন্য সংস্থার মোবাইল সিমকার্ড ব্যবহার শুরু করছেন বলে জানান।
বালুরঘাটের টেলিফোন এক্সচেঞ্জের ত্রুটির কারণে সমস্যা দিনের পর দিন বাড়ছে বলে দফতরের টেলি কর্মীদের একাংশের অভিযোগ। হামেশাই বালুরঘাটে মোবাইল ফোন থেকে ইন্টারনেট ও এসটিডি ব্যবস্থার সুবিধা ঠিক মতো না মেলায় নাকাল হচ্ছেন গ্রাহকেরা। দিনের বেশির ভাগ সময়ে বিএসএনএলের মোবাইলে টাওয়ার থাকে না। প্রশাসনের তরফে বিষয়টি বার বার টেলি কর্তাদের জানিয়েও কোনও সুরাহা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। বিএসএনএল সূত্রের খবর, রায়গঞ্জে বিএসএনএলের বিভাগীয় প্রধান অফিস। ফলে বালুরঘাটের সমস্যা নিয়ে কর্তৃপক্ষের তেমন হেলদোল নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy