চাঁচলে তৃণমূলের দফতরের অদূরে বোমা।
মালদহের চাঁচলে তৃণমূল পার্টি অফিসের সামনে ৬টি বোমা উদ্ধারের পরে তা নিয়েও চাপানউতোর শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার ওই এলাকায় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ হয়। তারপরে রাতেই সেখান থেকে বোমা উদ্ধার হয়েছে। অফিসের উল্টো দিকে সার্কিট হাউস যাওয়ার রাস্তার কালভার্টের নীচে ওই বোমাগুলি রাখা ছিল। রাতেই পুলিশ গিয়ে জলে ফেলে রাখা ওই বোমাগুলি উদ্ধার করে। বোমাগুলি কারা রেখে গিয়েছিল, তা নিয়ে দুই গোষ্ঠী পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে।
মঙ্গলবার রাতে দু’তরফেই অভিযোগ জানানো হলেও বুধবারেও নির্দিষ্ট কোনও ধারায় মামলা শুরু হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে বুধবার প্রকাশ্যে জাতীয় সড়কের উপর দুই গোষ্ঠীর নেতারা যে ভাবে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন, তাতে অস্বস্তিতে পড়েছেন দলীয় নেতৃত্ব। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “দু’পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তৃণমূলের এই দুই গোষ্ঠীর একটি ব্লক সভাপতি মজিবর রহমানের অনুগত। অন্য গোষ্ঠীটি ব্লকের কার্যকরী সভাপতি দেবজিত্ রায়চৌধুরীর অনুগামী। মজিবর রহমান মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র ও দেবজিতবাবু মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। জেলা তৃণমূল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন অবশ্য বলেছেন, “দু’পক্ষকেই পুলিশে অভিযোগ করতে বারণ করেছিলাম। কিন্তু ওরা অভিযোগ করেছে। এবার ওদের ডেকে সমস্যা মেটানো হবে। দলের নির্দেশ কেউ না মানলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বুধবার বিকালে পার্টি অফিসের সামনে ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে পুলিশের সামনেই প্রকাশ্যে তৃণমূলের এই দুই গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এক কর্মীর মাথা ফেটে যাওয়া সহ আহত হন বেশ কিছু কর্মী। গন্ডগোলের সময় পার্টি অফিসে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। দলের মহিলাকর্মীদের শ্লীলতাহানি করারও অভিযোগ ওঠে। সংঘর্ষের সময় দুই গোষ্ঠীর কর্মী-সমর্থকরা একে অন্যের উপরে বাঁশ, লাঠি, লোহার রড ছাড়াও বোমা ও পিস্তল নিয়ে হামলা করে বলে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়।
মজিবর এ দিন বলেন, “পার্টি অফিসে ঢুকে যারা দলনেত্রীর ছবি ছিঁড়বে, বোমা, পিস্তল নিয়ে হামলা করে পার্টি অফিস দখল করতে চাইবে। তাদের সঙ্গে আপসের প্রশ্নই আসে না। আমরা অভিযোগ করেছি। বাকিটা পুলিশের ব্যাপার।” তিনি জানান, রাজ্য নেতৃত্বকে তাঁরা সব কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “পুলিশ মামলা না করলে তা-ও নেতৃত্বকে জানাব।” তাঁর দাবি, “পার্টি অফিসের উল্টো দিকে বোমাগুলো ওরাই ফেলে গিয়েছিল। কারা ওই ঘটনায় জড়িত তা পুলিশই তদন্ত করে দেখুক।”
দেবজিত্বাবুর অবশ্য পাল্টা বক্তব্য, “পার্টি অফিস দখল করতে যাব কেন? দলীয় কিছু বিষয়ে আলোচনার জন্য গিয়েছিলাম। কিন্তু সভাপতি আমাকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন। তার পর তাঁর মদতে আমাদের বোমা, পিস্তল দেখিয়ে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি লোহার রড, লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। বোমা ওরাই রেখেছিল। ওরা আগে মামলা না করলে আমরাও করতাম না। এ বার জেলা নেতৃত্ব যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy