Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Jalpaiguri

সৈকতের ‘রাজনৈতিক স্বস্তি’, বিক্ষোভে অনড় বিজেপি

 সৈকত এ দিন বলেছেন, “প্রথম থেকেই বলছি, এটা রাজনৈতিক চক্রান্ত। পঞ্চায়েত ভোট থেকে আমাকে সরিয়ে রাখার জন্য বিজেপি চক্রান্ত করছে। আমার বিশ্বাস দলও তাই মনে করে।”

সভায় অভিষেককে উত্তরীয় পরাচ্ছেন সৈকত। নিজস্ব চিত্র

সভায় অভিষেককে উত্তরীয় পরাচ্ছেন সৈকত। নিজস্ব চিত্র

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:২৬
Share: Save:

দম্পতিকে আত্মহত্যায় ‘প্ররোচনা’ দেওয়ার অভিযোগ ওঠার ঠিক এক সপ্তাহের মাথায়, কিছুটা ‘রাজনৈতিক স্বস্তি’ পেলেন জলপাইগুড়ির তৃণমূল নেতা সৈকত চট্টোপাধ্যায়। শনিবার আলিপুরদুয়ারে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মঞ্চে ডাক পেলেন সৈকত। সভায় অভিষেককে উত্তরীয় পরিয়ে দেন তিনি। সভার শেষে মঞ্চের পাশে, অস্থায়ী ঘরে সৈকতের সঙ্গে আলাদা করে কথাও বলেন অভিষেক। সৈকতের ‘অনুগামীদের’ দাবি, দল যদি পাশে না থাকত, তবে মঞ্চে ডাকই পেতেন না সৈকত। এ দিন আলিপুরদুয়ারের মঞ্চে অভিষেকের পাশে দাঁড়ানো, মালা পরানোর দৃশ্যের পরে, তৃণমূলের একটা অংশের দাবি, দল সৈকতের পাশে নেই, এমন আর কেউ বলতে পারবেন না। যদিও অভিষেকের সভামঞ্চে সৈকতের উপস্থিতি নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা।

সৈকত এ দিন বলেছেন, “প্রথম থেকেই বলছি, এটা রাজনৈতিক চক্রান্ত। পঞ্চায়েত ভোট থেকে আমাকে সরিয়ে রাখার জন্য বিজেপি চক্রান্ত করছে। আমার বিশ্বাস দলও তাই মনে করে।” যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর মন্তব্য, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের এই ছবি দেখার পরে, রাজ্য সরকারের আর কোনও তদন্তকারী সংস্থা কী পদক্ষেপ করবে তা অনুমান করতে বিজ্ঞান জানার প্রয়োজন হয় না, ইতিহাস জানলেই হয়।” ধূপগুড়িতে সিপিএম নেত্রী মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চোরে চোরে মাসতুতো ভাই। ওঁর (অভিষেক) চোখে বোধহয় ঠুলি পরানো আছে, তাই পাশের জনকে দেখতে পাচ্ছেন না। তবে আমাদের প্রশ্ন অন্য, এ রাজ্যে তৃণমূলের কোনও এক জন জেলা যুব সভাপতিকে দেখাতে পারবেন যার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই?’’

দম্পতিকে আত্মহত্যায় ‘প্ররোচনা’য় অভিযুক্ত হওয়ার পরে দলের মধ্যে একঘরে হতে শুরু করেছিলেন সৈকত। জেলা তৃণমূলের সভাপতি মহুয়া গোপ জানিয়ে দিয়েছিলেন, সৈকতের অভিযোগে জড়ানো ‘ব্যক্তিগত বিষয়’, রাজনৈতিক নয়। ডাক পাননি সংখ্যালঘু সেলের জেলার বৈঠকেও।

ওই আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় সৈকত-সহ বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে এ দিন জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে বসে বিজেপি। থানার সামনেই রাস্তার এক ধারে চেয়ার পেতে জেলা বিজেপি সভাপতি-সহ জেলা এবং শহর ব্লকের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বিক্ষোভ-সভাও করেছে বিজেপি। গত ১ এপ্রিল জলপাইগুড়ির পান্ডাপাড়ার বাসিন্দা পুরসভার প্রাক্তন উপ পুরপ্রধান অপর্ণা ভট্টাচার্য এবং তাঁর স্বামী জেলা শিশুকল্যাণ সমিতির প্রাক্তন সদস্য সুবোধ ভট্টাচার্য আত্মহত্যা করেন বলে পরিবারের দাবি। উদ্ধার হয় একটি ‘সুইসাইড নোট’, যাতে সৈকত চট্টোপাধ্যায়, দলের পুরপ্রতিনিধি সন্দীপ ঘোষ-সহ চার জনকে অভিযুক্ত করা হয়।

গত রবিবার বিজেপির বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায় সৈকত-সহ চার জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের করেন। বিজেপির অভিযোগ, জেলা যুব তৃণমূল পার্টি অফিসে অপর্ণা ভট্টাচার্যকে ডেকে সালিশি সভা বসিয়েছিলেন সৈকত। যদিও সৈকতের পাল্টা দাবি, “পাওনা নিয়ে বিবাদের জেরে ওই দম্পতি এবং পাওনাদারেরা আমার কাছে এসেছিলেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজও আছে। সেখানে ওই দম্পতির একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে পাওনাদাররা যাতে বাধা না দেন, মানবিক কারণে সে অনুরোধ করেছিলাম। এখন বিজেপি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy