কঠোর অবস্থানে: দল শো কজ় করলেও অনড় গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। দিনভর গেলেন না আলিপুরদুয়ারে দলীয় কার্যালয়ে (ডান দিকে)। তবে যোগ দিলেন দলীয় কর্মসূচিতে (বাঁ দিকে)। পলাশবাড়িতে, বিধায়ক মনোজ টিগ্গার পাশে। ছবি: নারায়ণ দে।
শো-কজ়ের চিঠি পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গেরুয়া শিবিরে আসতে চাওয়া তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের নিশানা করলেন বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। তাঁদের উদ্দেশ্যে তাঁর স্পষ্ট হুঁশিয়ারি— ‘‘তৃণমূলে থেকে বিজেপির উপর কোনও অন্যায় করে থাকলে, পালাবদলের পরেও দলের কর্মীরা ছেড়ে কথা বলবেন না।’’ দলীয় সূত্রে খবর, শো-কজ়ের উত্তর কী লিখবেন তা ঠিক করতে বৃহস্পতিবার দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠকে বসার কথা গঙ্গাপ্রসাদের। তার আগে তাঁর এই মন্তব্যে গুঞ্জন শুরু হয়েছে বিজেপির অন্দরে। যদিও গঙ্গাপ্রসাদের সাফাই, দলের নেতা-কর্মীদের ভরসা জোগাতেই তাঁর এই মন্তব্য।
মঙ্গলবার গঙ্গাপ্রসাদকে শো-কজ় করেন বিজেপির রাজ্য শীর্ষ নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে খবর, তার জেরে আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন এলাকায় বিজেপির নেতা-কর্মীদের একাংশ ক্ষুব্ধ। ‘পাশে থাকার’ বার্তা দিয়ে মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত জয়গাঁওয়ে গঙ্গাপ্রসাদের বাড়ির সামনে ভিড় করেন অনেক নেতা-কর্মী। বুধবারও দলের নেতা-কর্মীদের অনেকে তাঁর বাড়িতে যান।
অন্য দিকে এ দিন বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা অফিস ছিল একেবারেই সুনসান। পার্টি অফিসে গঙ্গাপ্রসাদের ঘরও দিনভর তালাবন্ধ ছিল। প্রথমে শোনা গিয়েছিল, এ দিন দলের কোনও কর্মসূচিতেও যাবেন না জেলা বিজেপি সভাপতি। কিন্তু দুপুরে পলাশবাড়িতে কর্মিসভায় যান তিনি। সেখানে নিজের বক্তব্যে অবশ্য তৃণমূলের কোনও নেতার নাম করেননি।
এ দিন ওই সভায় গঙ্গাপ্রসাদ বলেন, ‘‘দিদির সরকার মানুষের দুয়ারে যাচ্ছে। আর দিদির ভাইয়েরা যাচ্ছেন বিজেপির দুয়ারে। এতে আমাদের কার্যকর্তারা হয়তো কিছুটা হতাশ হচ্ছেন। কিন্তু আমাদের হজমশক্তি অনেক বেশি।’’ দলের নেতা-কর্মীদের চিন্তা করতে বারণ করে গঙ্গাপ্রসাদ বলেন, ‘‘আমরা সবাইকে আপন করে নেব। কিন্তু আমাদের কাছে আসলে ভাল কাজ করতে হবে। যাঁরা তৃণমূলে থেকে পাপ করেছেন, তাঁদের সেই পাপের দায়িত্ব বিজেপি নেবে না।’’ এর পরেই তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘বিজেপির নেতা-কর্মীদের অত্যাচার করে বা মিথ্যা মামলা দিয়ে এখন যতই পালাবদল বা গুণগান করুন না কেন, যদি আপনি অন্যায়-অত্যাচার করে থাকেন, আমাদের কর্মীরা আপনাকে ছেড়ে কথা বলবে না।’’
দিন কয়েক আগে আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন সাংসদ দশরথ তিরকে বিজেপিতে যোগ দেন। তা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন জেলা বিজেপি নেতা-কর্মীদের অনেকেই। তার পর আচমকাই মঙ্গলবার গঙ্গাপ্রসাদকে শো-কজ় করে দল। তার পরেও এত কড়া বার্তা কেন? গঙ্গাপ্রসাদ বলেন, ‘‘দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্তে যাঁরা ইতিমধ্যেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তাঁদের স্বাগত। তাঁদের সঙ্গে আমার কথাও হয়েছে। আমরা একসঙ্গে কাজ করব। কিন্তু আগামী দিনে তৃণমূলের খারাপ লোকেরা বিজেপিতে চলে আসেন কিনা, তা নিয়ে আমাদের কর্মীরা আশঙ্কায় রয়েছেন। তাঁদের ভরসা জোগাতেই আমার এই মন্তব্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy