Advertisement
E-Paper

সিভিকদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ দেওয়া উচিত পুলিশের

ব্যতিক্রম নয় মালদহও। বাংলা-বিহার আন্তঃরাজ্য সীমানা হরিশ্চন্দ্রপুর। সীমানায় নজরদারিতে পুলিশের তরফে বসানো হয়েছে নাকা পয়েন্টে।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সুদীপ্ত গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৫ ০৯:০৯
Share
Save

‘জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ’— এই প্রবাদ বাক্য এখন যেন সিভিক কর্মীদের ক্ষেত্রে মানানসই। পুলিশের ‘নাকা চেকিং’ থেকে শুরু করে থানায় কম্পিউটারের যাবতীয় কাজের দায়িত্ব সিভিকদের কাঁধে। পুলিশ ক্রমশ হয়ে উঠছে ‘সিভিক নির্ভর’— এমন কথা শোনা যাচ্ছে পুলিশ মহলেরই একাংশের কথায়।

তাতেই ঘটছে বিপদ। বিতর্কে নাম জড়াচ্ছে হঠাৎ ‘পুলিশ হয়ে ওঠা’ সিভিকদের একাংশের। মালদহ থেকে উত্তর দিনাজপুর বা উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় প্রায়ই শিরোনাম দেখা যায় সিভিকদের। আর জি কর কাণ্ডে‌ তোলপাড় হয়েছে রাজ্য-রাজনীতি। সে ঘটনাতেও গ্রেফতার করা হয় এক সিভিক কর্মীকে। ওই ঘটনার পরেও রাজ্যের বিভিন্ন থানায় বহু বিতর্কিত ঘটনায় নাম জড়ানোয় একাধিক সিভিক কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ব্যতিক্রম নয় মালদহও। বাংলা-বিহার আন্তঃরাজ্য সীমানা হরিশ্চন্দ্রপুর। সীমানায় নজরদারিতে পুলিশের তরফে বসানো হয়েছে নাকা পয়েন্টে। সপ্তাহখানেক আগেই সে নাকা পয়েন্ট থেকে ধরে এক পরিবহনকর্মীকে পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে তিন সিভিকের মারধরের ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়। নিন্দার মুখে পড়তে হয় পুলিশকে। পরে, অভিযুক্ত তিন সিভিক কর্মীকে ক্লোজ় করে পুলিশ।

পরিবহণ কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, একটি ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। রাস্তায় সিভিকের ‘দাদাগিরির’ ছবি পুলিশের নাকা পয়েন্টে মিনিট পাঁচেক দাঁড়ালেই দেখা দেখা যাবে। মাসখানেক আগেই ‌মালদহে ধর্ষণের অভিযোগে‌ নাম জড়িয়ে পুলিশ লাইনে ক্লোজ় করা হয় আরও এক সিভিক কর্মীকে। এ ছাড়া জুয়া, অপহরণের মতো অভিযোগেও জেলায় কয়েক জন সিভিক কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

শুধু তাই নয়, সরকারি কাজে থেকে শাসক দলের পদেও দেখা গিয়েছে সিভিক কর্মীদের একাংশকে। হবিবপুরের ঐতিহ্যবাহী স্কুল আইহো হাই স্কুল। সে স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি এক জন সিভিক। তিনি হাবিবপুরের পুলিশের ডিআইবি পদে কর্মরত। এক জন সিভিক কী ভাবে স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি হন, বছর দুয়েক ধরে সেই প্রশ্নে সরগরম জেলার রাজনীতি। তবুও বহাল তবিয়তে পরিচালন সমিতির সভাপতি পদে রয়েছেন সেই সিভিক।

এত গেল সরকারি পদে থাকার কথা। বছরখানেক আগে যুব তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি পদের নামের তালিকায় দেখা যায় দুই সিভিকের নাম। ঘটনাটি নিয়ে হইচই হতেই নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। যুব তৃণমূলের দাবি ছিল, ভুলবশত তালিকায় নামগুলি জুড়ে গিয়েছিল।

তবে সিভিকের ভাল কাজেরও নজির রয়েছে। কখনও মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর অ্যাডমিট কার্ড বাড়িতে পৌঁছে দেন কর্তব্যরত সিভিক কর্মী, কখনও রাস্তায় পড়ে থাকা অসহায় মহিলার টাকার ব্যাগ খুঁজে দিয়ে মিলেছে পুরস্কার।

কিন্তু বারবার কেন বিতর্কে নাম জড়াচ্ছে সিভিকের? পুলিশের সঙ্গে থাকতে থাকতে অনেকে নিজেকে পুলিশ মনে করছেন। তাতেই বাড়তি কিছু করতে গিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে যেতে হচ্ছে। পুলিশেরও উচিত সিভিক কর্মীদের যথাযথ প্রশিক্ষণ এবং পরামর্শ দেওয়া। কারণ, পুলিশেরও প্রশিক্ষণ হয়। সিভিকের ক্ষেত্রে তা হয় না। এ ছাড়া সিভিকদের দিয়ে কী কাজ করাতে হবে, তা জানতে হবে পুলিশকেও।

আইনজীবী, মালদহ আদালত

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Civic volunteer

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}