বামনগোলার বিডিওর তরফে দেওয়া সেই লিখিত মুচলেকা। —নিজস্ব চিত্র।
গ্রামের বেহাল রাস্তায় ঢুকতে পারেনি অ্যাম্বুল্যান্স। অগত্যা খাটিয়ায় চাপিয়ে রোগিণীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর। মালদহের বামনগোলা থানার এই ঘটনা নিয়ে যখন রাজ্য তোলপাড়, তখন গ্রামে গিয়ে রাস্তার কাজ শুরু হওয়ার আশ্বাস দিতে দেখা গেল বামনগোলার বিডিও রাজু কুন্ডুকে। গ্রামবাসীদের সামনে সাদা কাগজে একটি মুচলেকাও লিখে দেন তিনি। ওই মুচলেকাতে তিন মাসের মধ্যে রাস্তার কাজ শুরু হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
রাস্তা সংস্কারের দাবিতে শনিবার সকাল থেকেই মালদহের নালাগোলা রাজ্য সড়কের কলোনি এলাকায় রাস্তা অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। তবে বিডিও রাস্তা তৈরি করার আশ্বাস দেওয়ায় প্রায় তিন ঘণ্টা পর এই অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। বিডিওর লেখা মুচলেকায় বলা হয়েছে, “আগামী তিন মাসের মধ্যে গঙ্গাপ্রসাদ কলোনি থেকে মালডাঙা গ্রাম পর্যন্ত যে রাস্তা খারাপ অবস্থায় রয়েছে, তার কাজ শুরু হবে।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং গ্রামবাসীদের তরফে জানা গিয়েছে, মালডাঙা গ্রামের বাসিন্দা, বছর পঁচিশের তরুণী মামণি রায় গত দু’তিন দিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন। শুক্রবার দুপুরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য তরুণীর পরিজনেরা অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে পাঠান। কিন্তু বেহাল রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্স দূরস্থান, গ্রামে কোনও যানবাহনই ঢোকে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এই অবস্থায় কোনও উপায় না দেখে ওই তরুণীকে খাটিয়ায় তুলে গ্রামের মেঠো পথ পেরিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়। গন্তব্য ছিল বামনগোলার গ্রামীণ হাসপাতাল। কিন্তু বেহাল রাস্তা পেরিয়ে হাসপাতালে পৌঁছতে অনেকটা দেরি হয়ে যায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তরুণীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ইতিমধ্যেই এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। বেহাল রাস্তা নিয়ে রাজ্য এবং স্থানীয় প্রশাসনকে কার্যত তুলোধনা করেছেন স্থানীয় বিজেপি নেত্রী বীণা সরকার কীর্তনিয়া। রাজ্য সরকার ‘পথশ্রী’র মতো প্রকল্প হাতে নেওয়ার পরেও কেন গ্রামীণ রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকতে পারবে না, সেই প্রশ্নই তুলেছে বিজেপি। আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম মালডাঙা হবিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত। হবিবপুরের বিজেপি বিধায়ক জুয়েল মুর্মু এই প্রসঙ্গে বলেন, “আজকে ওই গ্রামের রাস্তা ভাল থাকলে অ্যাম্বুল্যান্স যেতে পারত। তা হলে ওই তরুণীকে হয়তো বাঁচানো যেত। আমরা রাস্তা সংস্কারের দাবি বার বার প্রশাসনকে জানিয়ে এসেছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।”
সমালোচনার জবাবে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী জানান, এই ঘটনা ভীষণ দুঃখজনক। এর পাশাপাশি, বিজেপিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “ওই এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে বিজেপি বিধায়ক রয়েছেন। সাংসদও বিজেপির। তার পরেও রাস্তা হল না কেন? সব দোষ তৃণমূলের ঘাড়ে চাপিয়ে দিলে তো হয় না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy