গানে-গানে। নিজস্ব চিত্র
চিকিৎসকের ভূমিকায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। হারমোনিয়াম ও মাইক্রোফোন হাতে গায়ক দুই থানার আইসি। করোনা-আবহে এমন ভাবেই দেখা মিলল তিন জনের। অফিসার, পুলিশকর্মীদের মনোবল বাড়াতে গানই হাতিয়ার করলেন মালদহের ইংরেজবাজার ও বৈষ্ণবনগর থানার আইসি মদনমোহন রায় ও ত্রিদীপ প্রামাণিক। ডাক্তারি ডিগ্রি থাকায় করোনা-কালে কর্মী, অফিসারদের নানা পরামর্শ দিচ্ছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেদি হোসেন রহমান।
গত ফেব্রুয়ারিতে মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) পদে যোগ দেন উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দা মেহেদি হোসেন রহমান। ২০১৪ সালে কমিউনিটি মেডিসিন বিষয়ে এমডি করেন তিনি। তবে চিকিৎসকের পেশা ছেড়ে ২০১৬ সালে পুলিশে যোগ দেন। করোনা আবহে পুলিশকর্মীদের মুশকিল আসান হয়ে উঠেছেন তিনি। কখনও স্টেথো দিয়ে পরীক্ষা করছেন পুলিশকর্মীদের, কখনও দিচ্ছেন পরামর্শ। তিনি বলেন, “জ্বর, সর্দি, কাশি হলে কী করবেন, আর কী করবেন না তা নিয়ে পরামর্শ দিচ্ছি।”
তাঁর মতোই করোনা-আবহে অন্য ভুমিকায় দেখা গিয়েছে জেলার আরও দুই পুলিশকর্তাকে। ইংরেজবাজার থানার আইসি মদনমোহন রায়। সম্প্রতি ইংরেজবাজার থানায় অনুষ্ঠিত হয় রবীন্দ্রস্মরণ অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানে হারমোনিয়ামে সুর তোলেন মদনমোহন। রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলগীতি এবং আধুনিক বাংলা গান শোনান। মদনমোহন বলেন, “ছোট থেকেই সংস্কৃতি নিয়ে আগ্রহ। সেই ইচ্ছা থেকেই হারমোনিয়াম বাজানো শেখা। তবে ডিউটির জন্য ঠিকমতো বাজানো হয় না।”
সিভিককর্মী, কনস্টেবলদের নিয়ে গানের দল তৈরি করেছেন বৈষ্ণবনগর থানার আইসি ত্রিদীপ প্রামাণিক। নিয়ম করে না হলেও সপ্তাহে অবসর সময়ে বসে গানের আসর। মাইক্রোফোন হাতে গায়ক ত্রিদীপ। তিনি বলেন, “লাভপুর থানায় ওসি থাকার সময় বাউল গান শিখেছিলাম। রাজ্যের একের পর এক থানায় ডিউটি করতে গিয়ে বিভিন্ন লোকসঙ্গীত শিখেছি।”
করোনা-আবহে পুলিশ আধিকারিকদের এমন ভূমিকার প্রশংসা করছেন শীর্ষস্তরের কর্তারা। পুলিশ জানিয়েছে, করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন জেলার প্রায় ২৬০ জন পুলিশকর্মী ও অফিসার। অধিকাংশ সুস্থ হয়ে কাজে ফিরলেও এখনও অনেকে চিকিৎসাধীন। এমন পরিস্থিতিতে সহকর্মীদের মানসিক ভাবে চাঙ্গা রাখতে তাঁদের উদ্যোগ অনেকটাই কর্মীদের সাহস জোগাবে বলে মত পুলিশকর্তাদের।
ত্রিদীপ বলেন, করোনা-আবহে মানসিক প্রভাব পড়ছে পুলিশকর্মীদের উপরেও। মানসিক চাপ কাটাতেই গানের চর্চা। মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, কাজ করার পাশাপাশি আমাদের মানসিক ভাবেও সুস্থ থাকতে হবে। কর্মীদের মনোবল বাড়াতে ওঁদের এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy