Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে কি, তরজায় শাসক-বিরোধীরা

ভোটের তিন দিন আগেও, কেন্দ্রীয় বাহিনী আসা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে বাহিনী নিয়ে শাসক-বিরোধীদের মধ্যে চাপানোউতোর চলছেই। তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে পর্দার আড়ালে ‘রফা’ হওয়াতেই রাজ্যের পুরভোটে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী আসেনি বলে অভিযোগ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি মানস ভুঁইয়া। তাঁর দাবি, মাওবাদী এলাকায় নিরাপত্তার কথা বলে কেন্দ্রীয় সরকার পুরভোটে পর্যাপ্ত বাহিনী পাঠাবে না বলে জানিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৩১
Share: Save:

ভোটের তিন দিন আগেও, কেন্দ্রীয় বাহিনী আসা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে বাহিনী নিয়ে শাসক-বিরোধীদের মধ্যে চাপানোউতোর চলছেই। তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে পর্দার আড়ালে ‘রফা’ হওয়াতেই রাজ্যের পুরভোটে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী আসেনি বলে অভিযোগ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি মানস ভুঁইয়া। তাঁর দাবি, মাওবাদী এলাকায় নিরাপত্তার কথা বলে কেন্দ্রীয় সরকার পুরভোটে পর্যাপ্ত বাহিনী পাঠাবে না বলে জানিয়েছে।

অথচ, গত বিধানসভা ভোট, পঞ্চায়েত ভোট এমনকী গত মাসে লোকসভা-বিধানসভা উপ নির্বাচনের সময়েও রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছিল। মানসবাবুর অভিযোগ, মাসখানেকে মাওবাদী এলাকার পরিস্থিতি এমন কিছু বদলায়নি, তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতার কারণেই পুরভোটে বাহিনী পাঠায়নি দিল্লির বিজেপি সরকার। ‘রফা’র অভিযোগ অস্বীকার করে দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ পাল্টা অভিযোগ করেছেন, রাজ্য সরকার যথাযথ প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রকে না জানানোতেই বাহিনী মেলেনি। কংগ্রেস-বিজেপির মধ্যে পাল্টা রামধনু জোটের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূলও।

শিলিগুড়ি প্রশাসন সূত্রের খবর, ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মিলবে বলে কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে। তবে কত বাহিনী মিলবে তার কোনও পরিসংখ্যান পুলিশ প্রশাসনের কাছে এসে পৌঁছোয়নি। সেই বাহিনী কবে আসবে তা নিয়েও কোনও তথ্য নেই শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটে। পুলিশ সূত্রের খবর, ভোটের অন্তত দু’দিন আগে বাহিনী না এলে স্পর্শকাতর এলাকায় পাঠানোয় সমস্যা হয়। গত পঞ্চায়েত ভোটেও ভোটের আগের রাতে বিভিন্ন জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছেছিল বলে অভিযোগ ওঠে। যার জেরে বহু ভোটকেন্দ্রে আগের রাতে বাহিনী পৌঁছে দেওয়া যায়নি বলে অভিযোগ উঠেছিল। পুরভোটের ক্ষেত্রেও একই পরিস্থিতি হলে, কেন্দ্র না রাজ্য কোন পুলিশ বাহিনী পাঠানো হবে তা নিয়ে সমন্বয়ের অভাবে ভোট কেন্দ্র অরক্ষিত থেকে যাবে কিনা সে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। সূত্রের খবর, মঙ্গলবারেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিষয়ে কমিশনারেটের তরফে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা অবশ্য বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে এখনও স্পষ্ট কোনও তথ্য নেই। তবে আমাদের হাতে থাকা বাহিনী দিয়েই ভোটের নিরাপত্তা এবং নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাইরের জেলা থেকেও বাহিনী আসছে।’’

অনিশ্চয়তার মধ্যেই বুধবার শিলিগুড়িতে নতুন করে বাহিনী নিয়ে তরজা শুরু হয়েছে। এ দিন দুপুরে সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেস নেতা মানসবাবু অভিযোগ করেন, ‘‘কেন্দ্র সরকার বলছে মাওবাদী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য বাহিনী পাঠানো যাবে না। যদিও মাসখানেক আগেই উপনির্বাচনে বাহিনী এসেছে। তার আগেও একাধির ভোটে বাহিনী এসেছে। তখনও মাওবাদী সমস্যা ছিল।’’

মানসবাবুর প্রশ্ন, ‘‘তবে কী বিজেপি-তৃণমূলের মধ্যে কোনও রফা হল, যার জন্য মোদী সরকার বাহিনী পাঠাল না।’’ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম দেব পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ‘‘কংগ্রেস-ই বিজেপির সঙ্গে হাত ধরে রামধনু জোট করছে। ভোটে হারার ভয়ে এখন কেন্দ্রীয় বাহিনী আসা বা না আসা নিয়ে নানা মনগড়া তত্ব বলে চলেছে। সাধারণ বাসিন্দারা আমাদের সঙ্গে রয়েছেন।’’

গত সোমবারই শিলিগুড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহ দাবি করেছিলেন, অন্তত ৬ সপ্তাহ আগে বাহিনী চেয়ে চিঠি দিতে হয়। রাজ্য সরকার তা করেনি বলেই বাহিনী মেলেনি। দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার কথায়, ‘‘রাজ্যের বাসিন্দারা স্থির করে ফেলেছেন, আগামী দিনে তৃণমূলকে সরিয়ে বিজেপিকে ক্ষমতায় আনবে। দেশের সর্বত্র কংগ্রেস সাইনবোর্ড হয়ে গিয়েছে। দিল্লিতে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে বিজেপিকে আক্রমণ করছে কংগ্রেস। মানুষকে ভুল বোঝাতেই ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে তারা।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE