Advertisement
০২ জুলাই ২০২৪
Anit Thapa

‘সমস্যা’ হলে পাহাড়ে বন্ধ পাট্টা-সমীক্ষা, পরামর্শ অনীতের

মাস দেড়েক আগে, উত্তরবঙ্গের জেলাশাসকদের বিস্তারিত সমীক্ষার কথা বলা হয়েছিল। সেখানে বাগানের খালি বা অব্যবহৃত জমি সমীক্ষা করে, তার লিজ় ফেরত নিয়ে পাট্টা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

চা বাগান। রোহিণীতে। 

চা বাগান। রোহিণীতে।  —নিজস্ব চিত্র।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৫০
Share: Save:

পাহাড়ে কোথাও জমির পাট্টার সমীক্ষা করতে সমস্যা দেখা দিলে, সেখানে ভূমি সংস্কার ও প্রশাসনকে কাজ বন্ধ রাখার পরামর্শ দিলেন ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ) প্রধান অনীত থাপা। তাঁর আশঙ্কা, পাট্টার সমীক্ষা, বিতরণকে সামনে রেখে চা বাগানবাসীকে ‘ভুল’ বুঝিয়ে পাহাড়ে নতুন করে অশান্তি তৈরির চক্রান্ত চলছে৷ সোমবার দলের একাংশ তো বটেই জিটিএ অফিসারদের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন জিটিএ প্রধান। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, পাট্টার জমির পরিমাণ, আবেদনকারী ফর্ম, কৃষি পাট্টা, জমি নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়গুলি নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে। তা কাটানোর জন্য কোনও বাগানে সমস্যা হলে, সমীক্ষার কাজ বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছে।

অনীত বলেন, ‘‘বাগানের জমির পাট্টাকে ঘিরে নানা বক্তব্য সামনে আসছে। বিভ্রান্তিকর নানা মন্তব্য করা হচ্ছে। শ্রমিকেরা অনেকেই নানা জায়গায় যোগাযোগ করছেন। বাড়ি-বাড়ি পাট্টার আবেদনপত্র দেওয়া হবে বলেও রটানো হচ্ছে।’’ তিনি জানান, ঝগড়া, অশান্তি বা বিরোধের কোনও ব্যাপার নেই। জমির অধিকার পাওয়াটাই বড় বিষয়। কোথাও কোনও সমস্যা হলে, আপাতত সমীক্ষার কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

জিটিএ সূত্রের খবর, গত লোকসভা বা বিধানসভা ভোটে চা বলয়ে তৃণমূল শাসক দল হলেও খুব একটা ভাল ফল করেনি। পঞ্চায়েত ভোটে কিছুটা আশার আলো দেখেছে তৃণমূল ও পাহাড়ে তাদের সঙ্গীরা। এর পরেই রাজ্যসভায় আলিপুরদুয়ারের আদিবাসী নেতা প্রকাশ চিক বরাইককে মনোনয়ন এবং বাগানে পাট্টা দেওয়ার সিদ্ধান্তের কাজ করা হয়েছে।

মাস দেড়েক আগে, উত্তরবঙ্গের জেলাশাসকদের বিস্তারিত সমীক্ষার কথা বলা হয়েছিল। সেখানে বাগানের খালি বা অব্যবহৃত জমি সমীক্ষা করে, তার লিজ় ফেরত নিয়ে পাট্টা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পরিবারের প্রধান মহিলা সদস্যের নামে এবং তা সম্ভব না হলে পুরুষ ও মহিলা যৌথ নামে পাট্টা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সর্বাধিক পাঁচ ডেসিমেল জমি পরিবারের
মধ্যে হস্তান্তরযোগ্য হলেও, বিক্রি বা অন্য কাউকে দেওয়া যাবে না
বলে ঠিক রয়েছে। প্রশাসনিক অফিসারেরা জানান, বাগান খালি জমিতে চা গাছ লাগানোর (প্ল্যান্টেশন) কথা বলে বাগান মালিকেরা কেউ এক বারে দিতে না চাইলে, ‘সমস্যা’ তৈরি হতে পারে। সেখানে সরকারকেও আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে পাঁচ ডেসিমেল জমি নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে।

দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা থেকে হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড একাধিক বার বাগানের জমি পাট্টা জোর করিয়ে চাপিয়ে দেওযার অভিযোগ করেছেন। তেমনই, কী ধরনের পাট্টা দেওয়া হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, জমিতে শ্রমিকেরা স্বাধীনতার আগে থেকে রয়েছেন। তাই শরণার্থী পাট্টার বিষয়টা এ ক্ষেত্রে প্রয়োজ্য নয়। কৃষি কাজের জমিরও পাট্টা প্রয়োজন। অনীত জানান, সবাইকে বসতি পাট্টা দেওয়া হবে। আর শ্রমিকদের কৃষি জমির পাট্টা দেওয়া নিয়েও কথা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE