কাতারের স্টেডিয়ামে সুমন্ত ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
বিশ্বকাপ ফুটবলের মহা রণাঙ্গন কাতারের সঙ্গে এক সূত্রে বাধা পড়ল কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরের কোচবিহার! তা-ও আবার এক বাঙালি ইঞ্জিনিয়ারের হাত ধরে। তিনি সুমন্ত ঘোষ। কাতার বিশ্বকাপের চারটি স্টেডিয়ামে সুষ্ঠু ভাবে যাতায়াতের জন্য রাস্তার মানচিত্র তৈরির অন্যতম নেপথ্য কারিগর। সুমন্তের ছাত্র জীবনের অনেকটা সময় কেটেছে কোচবিহারের জেনকিন্স স্কুলে। কোচবিহারে রয়েছেন তাঁর অনেক আত্মীয়-পরিজন। গোটা কোচবিহারই এখন তাঁকে নিয়ে গর্ব করছে। পরিচিতদের দু’-এক জন তো বলেই দিচ্ছেন, ‘সব খেলার সেরা বাঙালির তুমি ফুটবল’— যেন ফের প্রমাণ করলেন সুমন্ত।
এ বারের বিশ্বকাপ ফুটবলে কাতারের মোট আটটি স্টেডিয়ামে বিশ্বের তাবড় তারকা খেলোয়াড়েরা মাঠে নামবেন। মহারণের ডঙ্কাও বেজে গিয়েছে। দেশ-বিদেশের ফুটবলপ্রেমীদের ওই সব স্টেডিয়ামে যাতায়াতে যাতে অসুবিধা না হয়, সে জন্য কাতার সরকার আগাম পরিকল্পনা করে। সে সূত্রে তৈরি হয় ‘রোডম্যাপ’। একটি বেসরকারি সংস্থার প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসাবে তার মধ্যে চারটি স্টেডিয়ামে যানজটহীন ভাবে যাতায়াতের রূপরেখা তৈরির দায়িত্ব সামলেছেন সুমন্ত। কাতার থেকে মোবাইলে তিনি বলেন, “সবে বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে। তবে আমি নিশ্চিত, দর্শকদের নিরাপদ, সুষ্ঠু যাতায়াতের অভিজ্ঞতা হবে।”
কোচবিহারের নতুন বাজার লাগোয়া এলাকায় সুমন্তের পৈতৃক বাড়ি। তৃতীয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শহরের জেনকিন্স স্কুলে পড়াশোনা করেন। সেখান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে শিবপুরে বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে আর্কিটেকচার নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। পরিকল্পনা ও পরিবহণ বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেন। পরে, লন্ডনেও একটি ডিপ্লোমা করেছেন। দেড় দশকের বেশি সময় ধরে তিনি কর্মসূত্রে দেশের বাইরে। সপরিবার কাতারে রয়েছেন প্রায় আট বছর।
যে চারটি স্টেডিয়ামে যাতায়াতে রোড ম্যাপ তৈরির অন্যতম কারিগর সুমন্ত, সেই তালিকায় রয়েছে খলিফা, আল থুমামা, লুসাইল ও আল জ্যানিয়ুব স্টেডিয়াম। সুমন্ত যে সংস্থার সঙ্গে যুক্ত, তারা এই কাজের বরাত পেয়েছিল। তার পরেই প্রকল্প রূপায়ণের কাজ শুরু হয়। সুমন্তের কথায়, “প্রতিটি প্রকল্পই কঠিন, চ্যালেঞ্জিং ছিল। ফিফা, স্থানীয় ক্রীড়া, পুর, পরিবহণ, পূর্ত ও বিভিন্ন মন্ত্রক, আয়োজক কমিটি— সকলের সহযোগিতা পেয়েছি। আমাদের টিমের প্রত্যেকে এক সঙ্গে কাজ করেন।” সুমন্তের আত্মীয়, কোচবিহারের বাসিন্দা কৃষ্ণেন্দু পাল বলেন, “দাদার ওই কাজের জন্য গর্ব হচ্ছে।” জেনকিন্স স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রিয়তোষ সরকার বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক মঞ্চে স্কুলের প্রাক্তনীর এমন উপস্থিতি দারুণ আনন্দ ও গর্বের।’’
বিশ্বকাপ ফুটবলের ‘রোড ম্যাপ’ তৈরির অন্যতম কারিগর খবর রাখেন বাংলার ফুটবলেরও। ইস্টবেঙ্গল না মোহনবাগান? সুমন্তের জবাব, “মোহনবাগান, কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের জয় দেখতেও ভালবাসি। বাস্তবে খুব একটা পার্থক্য নেই। তবে আমি বিদেশে থাকি বলে ভারতীয় দলের বেশি ভক্ত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy