ফের গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ও জিএনএলএফ সরব হতেই আসরে নেমে পড়ল পাহাড়ের অন্য দলগুলিও। মোর্চার উপরে চাপ বাড়াতে জিটিএ ছেড়ে সমমনোভাবাপন্ন সব দলকে নিয়ে বড় মাপের আন্দোলনের প্রস্তাবও দিল সিপিআরএম। পাহাড়ের চা বলয়ে যে দলের শক্তি অনেকটাই অটুট।
সিপিআরএমের মুখপাত্র গোবিন্দ ছেত্রীর বক্তব্য, ‘‘জিএনএলএপ ফের গোর্খাল্যান্ডের দাবি করছে। মোর্চা জাতীয় পর্যায়ের সেমিনার করল। সেখানে আমরা ছিলাম। সম মনোভাবাপন্নদের নিয়ে আন্দোলনের সিদ্ধান্তও হয়েছে। আমরা চাই পাহাড়ের শাসক দল হিসেবে মোর্চা ওই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিক। আমরা সাহায্য করব।’’ এর পরেই তাঁর আহ্বান, ‘‘পূর্ণ শক্তি নিয়ে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য মোর্চাকে জিটিএ ছেড়ে ঝাঁপাতে হবে। আমরা মনে করি, এখনই জিটিএ ছেড়ে মোর্চা আলাদা রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনের রাশ ধরুক।’’
এই ঘটনায় মোর্চার অন্দরে আলোড়ন পড়েছে। কারণ, সম্প্রতি দু’দিন ধরে পাহাড়ে জাতীয় পর্যায়ের আলোচনা সভায় দিল্লিতে চাপ বাড়িয়ে পৃথক গোর্খাল্যান্ড আদায়ের চেষ্টা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার কদিন আগে জিএনএলএফ পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনের কথা ঘোষণা করেছে। অতীতে পৃথক রাজ্যের দাবি আদায়ের কথা বলার জন্যই পাহাড়ের সিপিএমের বড় অংশ দল ছেড়ে কমিউনিস্ট পার্টি অব রেভ্যুলেশনারি মার্কসিস্ট (সিপিআরএম) গড়েন। সেই সিপিআরএম নেতারাও ওই সেমিনারে ছিলেন। ফলে, আলোচনাসভা শেষ হতেই মোর্চার উপরে চাপ বাড়ানোর পথে হাঁটছেন সিপিআরএম নেতৃত্ব।
সিপিআরএম সূত্রের খবর, এ দিন দার্জিলিঙে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভা হয়। সেখানেই সিপিআরএম নেতারা সিদ্ধান্ত নেন, মোর্চা যে ভাবে দিল্লিতে চাপ বাড়িয়ে আলাদা রাজ্য আদায় করার কথা বলছে তা সমর্থন করা হবে। সেই সঙ্গে মোর্চাকে জিটিএ ছেড়ে দিয়ে পুরোপুরি পৃথক রাজ্যের আন্দোলনে নামার জন্য অনুরোধ করা হবে বলেও ওই সভায় ঠিক হয়। এর পরেই সাংবাদিক বৈঠকে সিপিআরএমের মুখপাত্র ওই সিদ্ধান্ত জানান। যা শোনার পরে মোচার্র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা জিটিএ সদস্য বিনয় তামাঙ্গ বলেন, ‘‘আমরা পাহাড়ের সব দলকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। কিন্তু, এতদিন ষষ্ঠ তফসিলের কথা বলে জিএনএলএফ হঠাৎ করে গোর্খাল্যান্ডের দাবি করছে কেন সেটা বুঝতে হবে। কিছুটা সময় গেলে ওদের আসল উদ্দেশ্য বোঝা যাবে।’’ সিপিআরএমও তো জিটিএ ছেড়ে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার আহ্বান করছে? জবাবে বিনয় বলেন, ‘‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) আদায় করেছি। তাতে রাজ্যের কাছ থেকে গোর্খাল্যান্ড শব্দটি আদায় করা গিয়েছে। জিটিএ ছাড়লে সেই নামটাও চলে যাবে। তাই জিটিএ-এর মত অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা বজায় রেখেই আন্দোলন হবে।’’
জিএনএলএফ নেতাদের অনেকেই জানান, জিটিএ চালানোর সঙ্গে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত পরস্পরবিরোধী। আগামী বছর বিধানসভা ভোট রয়েছে বলেই মোর্চা আলাদা রাজ্যের দাবিকে সামনে রেখে ফের পাহাড়ে সংগঠন চাঙ্গা করতে আসরে নেমেছে বলে জিএনএলএফ নেতাদের কয়েকজনের ধারনা। তাঁরা জানান, আলাদা রাজ্যের দাবিকে সামনে রেখে কারা রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে আর কারা প্রকৃত আন্দোলন করতে চায় তা সময়ই বলে দেবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy