এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির জন্য জমি দিতে ইচ্ছুক ছিলেন তাঁরা। রায়গঞ্জে হাসপাতাল তৈরির দাবিতে তৎকালীন কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাশমুন্সির নেতৃত্বে পথেও নেমেছিলেন। দিল্লির তখ্তে বদল আসার পর এখন দীপাদেবীর উপর আর কতটা ভরসা রাখা যায় সেই সংশয় থাকলেও মোটের উপর এই আন্দোলনে তাঁর পাশে থাকারই ইঙ্গিত দিলেন রায়গঞ্জের পানিশালার কৃষকরা।
বৃহস্পতিবার উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে দলীয় নেতা কর্মীদের সঙ্গে এইমস নিয়ে ফের বৈঠক করেন দীপাদেবী। রায়গঞ্জে এই হাসপাতাল তৈরির ব্যাপারে তিনি যে হাল ছাড়তে রাজি নন, তাও স্পষ্ট করে দেন। তাঁর দাবি, ২০০৯ সালের কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রায়গঞ্জেই এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরি হওয়া উচিত। বামফ্রন্ট ও পরে তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকার জমি অধিগ্রহণ না করায় হাসপাতাল তৈরির কাজ আটকে গিয়েছে। তিনি বলেন, “দলের তরফে কলকাতা হাইকোর্টে কয়েক মাস আগে একটি জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছে। এবার রায়গঞ্জে ওই হাসপাতাল তৈরির জন্য আইনের পথে গিয়ে আরও কোনও পদক্ষেপ করা যায় কি না, তা জানতে আইনজীবীদের পরামর্শ নিচ্ছি।”
গত বছরের জুলাই মাসে রায়গঞ্জের বদলে কল্যাণীতে দুটি জমি পছন্দ করে রাজ্য। তার মধ্যে যে কোনও একটি জমিতে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির জন্য রাজ্য সরকার কেন্দ্রকে প্রস্তাব দেয়। ওই প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে গত ২৩ মার্চ কেন্দ্র ওই হাসপাতাল তৈরির জন্য কল্যাণীর বসন্তপুরে ১৮০ একর জমি চিহ্নিত করেছে বলে রাজ্যকে জানিয়ে দেয়। জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষিজমি নষ্ট করে হাসপাতাল তৈরির বিরোধী। সেই কারণে, এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির জন্য রায়গঞ্জে জমি অধিগ্রহণ করেনি রাজ্য সরকার।” যদিও স্থানীয় কৃষক রফিক আজম, মহম্মদ আলি ও মোক্তার হোসেনের দাবি, “এলাকায় জমি দিতে অনিচ্ছুক একজন কৃষকেরও খোঁজ মিলবে না। কারণ এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরি নিয়ে এখনও এখানকার মানুষ স্বপ্ন দেখেন।”
এদিকে রায়গঞ্জ বা উত্তরবঙ্গের কোথাও এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির দাবিতে দলের তরফে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন ফরওয়ার্ড ব্লকের উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক তথা করণদিঘির বিধায়ক গোকুল রায়। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অপূর্ব পালের দাবি, “২০১০ সালে পূর্বতন রাজ্য সরকার রায়গঞ্জের পানিশালায় এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির জন্য ১১০ একর জমি চিহ্নিত করেছিল। বামফ্রন্ট ক্ষমতায় থাকলে রায়গঞ্জে এতদিন হাসপাতাল তৈরি হয়ে যেত।”
রাজনীতির এই টানাপড়েনের মধ্যেই স্বপ্ন দেখা জারি রেখেছেন পানিশালার কৃষক রফিক। তাঁর সাফ কথা, “যত দিন অন্য জায়গায় এইমস তৈরি না হয়, তত দিনই আশায় থাকব আমরা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy