ফাইল চিত্র।
কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর পরে এ বার নীহাররঞ্জন ঘোষ। মাত্র আড়াই বছরের মধ্যেই ইংরেজবাজার পুরসভার পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন দলেরই ১৫ জন কাউন্সিলর। বুধবার বিকেলে মালদহ মহাকুমাশাসক (সদর) সুরেশচন্দ্র রানোর কাছে অনাস্থার চিঠি দিলেন তাঁরা। তবে শহরে বিজেপির বাড়বাড়ন্তের মধ্যে দলীয় কাউন্সিলরদের অনাস্থার বিষয়ে অস্বস্তিতে তৃণমূল শিবির। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৌসম নূর বলেন, “অনাস্থার বিষয়টি শুনেছি। দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা করে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হবে।”
মালদহের রাজনীতি সম্পর্কে যাঁরা ওয়াকিবহাল, তাঁদের বক্তব্য, এই লড়াই এক দিনের নয়। কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী এবং নীহাররঞ্জন ঘোষের সম্পর্কের মতোই পুরনো এই দ্বন্দ্ব। এক সময়ে মালদহের এই দুই নেতাই পরস্পরের বন্ধু বলে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন কারণে দু’জনের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে কৃষ্ণেন্দুর বিরুদ্ধে সিপিএম এবং কংগ্রেসের সমর্থনে নির্দল প্রার্থী হন নীহার। এই যুদ্ধে নীহারই জেতেন। এর কয়েক মাস পরে নীহার যোগ দেন তৃণমূলে। সেই বছরই নভেম্বরে কৃষ্ণেন্দুকে সরিয়ে নীহারকে পুরপ্রধান করা হয়।
ওয়াকিবহাল শিবির মনে করছে, এ বারে সেই চালই ফিরিয়ে দিলেন কৃষ্ণেন্দু। যে ১৫ জন কাউন্সিলর নীহারের বিরুদ্ধে অনাস্থায় সই করেছেন, সেই দলে প্রথম নাম কৃষ্ণেন্দুর। তার পরেই রয়েছেন উপপুরপ্রধান দুলাল সরকার। আছেন প্রাক্তন পুরপ্রধান নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি, আশিস কুণ্ডুর মতো জেলা তৃণমূলের প্রথম সারির নেতা। আশিস, দুলালেরাই কৃষ্ণেন্দুকে সরিয়েছিলেন পুরপ্রধানের পদ থেকে। এ বার নীহারের বিরুদ্ধে অনাস্থাতেও তাঁদের নাম থাকায় নানান জল্পনা শুরু হয়েছে শাসকদলের অন্দরে।
একটি অংশ মনে করছে, কৃষ্ণেন্দু তাঁর বিরোধীদেরই কাজে লাগালেন নীহারের বিরুদ্ধে। এখানে ‘শত্রুর শত্রু আসলে বন্ধু’ এই তত্ত্বই কাজে লাগানো হয়েছে বলে দাবি ওই মহলের। নীহারের বিরুদ্ধে উষ্মার কারণ হিসেবে ওই মহল থেকে বলা হচ্ছে— প্রথমত, দিদিকে বলোর পর থেকে কাটমানি নেওয়া কার্যত বন্ধ করে দিয়েছিলেন নীহার। দ্বিতীয়ত, তাঁর আমলে উন্নয়নমূলক কাজও তুলনায় কম হয়েছে। যদিও দু’পক্ষই এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কৃষ্ণেন্দু বলেন, “দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলর অনাস্থায় স্বাক্ষর করেছেন। শহরের উন্নয়নের স্বার্থে সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলরদের সঙ্গে শামিল হয়েছি।” আশিস বলেন, “নীহার নিয়ম মেনে পুরসভায় কোনও কাজ করছিলেন না। পুরসভায় নিয়মিত বোর্ড মিটিং হয়নি। শহরের টাওয়ার লাইট বসানো হয়েছে। সেই বাতিস্তম্ভ বসানোর ক্ষেত্রেও কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে। নোংরা আবর্জনায় ছেয়ে গিয়েছে শহর। মানুষ নীহারের কাজে ক্ষুব্ধ। তাই আমরা তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছি।”
নীহার বলেন, “দল আমাকে পুরপ্রধান করেছিল। আমি দলের ঊর্ধ্বে নই। দলকে সব জানানো হয়েছে। দল যা বলবে তা-ই মেনে নেব।” মহাকুমাশাসক সুরেশ চন্দ্র বলেন, “অনাস্থার চিঠি পেয়েছি। পুর-আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy