প্রতীকী চিত্র।
ভাইরাল জ্বর নিয়ে আরও এক জনের মৃত্যু হল শিলিগুড়িতে। শুক্রবার সকালে খালপাড়ার একটি নার্সিংহোমে মারা যান শ্রবণ যাদব (৪৯)। শিলিগুড়ির ৩ নম্বর ওয়ার্ডে দুর্গানগরের বাসিন্দা শ্রবণ পুরসভার বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মী ছিলেন।
পরিবার সূত্রে জানানো হয়, জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় বুধবার সকালে শিলিগুড়ি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করানো। সেখানে চিকিৎসকরা পরিবারের লোকদের জানান রোগীর ডেঙ্গি হয়েছে। প্লেটলেট কমতে থাকায় বৃহস্পতিবার তাকে রেফার করা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। বাড়ির লোকেরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে না গিয়ে খালপাড়ার ওই নার্সিংহোমে ভর্তি করান। ৩ ইউনিট প্লেটলেটও দেওয়া হয়েছে তাঁকে। জ্বরের সঙ্গে তার যকৃতের সংক্রমণও ধরা পরে। এদিন তিনি মারা যান। ভাইরাল জ্বর এবং বিভিন্ন যন্ত্র অকেজো হয়ে তিনি মারা যান বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।
ডেঙ্গি এবং জ্বরে আক্রান্ত হয়ে শিলিগুড়িতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০ জন। মাস দেড়েক আগে শিবমন্দির এলাকাতেও এক বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। গত তিন মাসে শহরে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে চিকিৎসদের একাংশ মনে করছেন। এদিন জ্বর নিয়ে সেবক রোডের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয় শিলিগুড়ি পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদ জয় চক্রবর্তী। অরেক মেয়র পারিষদ পরিমল মিত্র এবং তাঁর পরিবারের দুই জন ডেঙ্গি নিয়ে খালপাড়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন।
মৃত শ্রবনবাবুর বউদি মমতা যাদব বলেন, ‘‘হাসপাতালের চিকিৎসক জানিয়েছিলেন রোগীর ডেঙ্গি হয়েছে। প্লেটলেট ২০ হাজারে নিয়ে গিয়েছে। সে কারণে তাঁরা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। আমরা তাঁকে নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়েছিলাম।’’ বাড়িতে শ্রবণবাবুর বড় ছেলে মুকেশেরও জ্বর। দুর্গানগর এলাকায় বহু মানুষ গত দুই মাস ধরে জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। এ দিন ছটপুজোর মধ্যে পাড়ায় ওই মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়েও এলাকার বহু মানুষ প্রশ্ন তুলেছেন।
এলাকার বাসিন্দা চন্দ্রকলা শর্মা, সুনিতদেবীদের দাবি, কয়েকজনকে চিকিৎসকরা এমনও বলেছেন কেন তারা ভিড় করে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসছেন। অন্য জায়গায় যাচ্ছেন না কেন? সুনিতাদেবী বলেন, ‘‘জ্বর নিয়ে আমি নিয়ে ভর্তি ছিলাম। আয়াদের প্রতিদিন ২০০ টাকা দিলে তবে তারা স্যালাইন লাগাতে সাহায্য করা, ওষুধ খাওয়ানোর কাজ করেন।’’ মঞ্জনদেবী তাঁর নাতিকে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে নিয়ে গেলে তাঁর অভিজ্ঞতা, ‘‘রোগীদের যত্নের চেয়ে কত তাড়াতাড়ি রোগীকে ছুটি করিয়ে দেবে বা অন্য জায়গায় পাঠানো হবে সেটা করতেই চিকিৎসকদের একাংশ বেশি তৎপর।’’
ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা ডেপুটি মেয়র রামভজন মাহাতো জানান, ভাইরাল জ্বর এবং যকৃতের অসুখে ভুগছিলেন শ্রবনবাবু। এদিন তাঁর মৃত্যু দুঃখজনক। এলাকা পরিষ্কারে জোর দেওয়া হয়েছে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য জানান, কী কারণে শ্রবণবাবু মারা গিয়েছেন তা দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy