সাবিত্রীর দেহ নিয়ে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে যায় বাপের বাড়ির লোক। কিন্তু বাড়িতে কেউ উপস্থিত না থাকায় গেট ভেঙে দেহ নিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করেন। —নিজস্ব চিত্র।
বধূর রহস্যমৃত্যু ঘিরে তীব্র উত্তেজনা শিলিগুড়ির ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের চম্পাশরীতে। বধূর দেহ নিয়ে শ্বশুরবাড়ির সামনে বিক্ষোভ বাপেরবাড়ির লোকজন। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর দুই আগে শিলিগুড়ির চম্পাশরী এলাকার বাসিন্দা বিজয় প্রসাদের সঙ্গে আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা সাবিত্রী শাহের বিয়ে হয়। সাবিত্রীর বাপেরবাড়ির লোকজনের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তাঁদের মেয়ের উপর শারীরিক অত্যাচার করতেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। অভিযোগ, সাবিত্রী এবং বিজয়ের ১বছরের একটি সন্তান আছে। তবে পণের দাবি নিয়ে অশান্তি লেগেই থাকত সংসারে। তার মধ্যে বিজয়ের বিবাহবহির্ভূত একাধিক সম্পর্ক রয়েছে। যা নিয়ে অশান্তি চরমে পৌঁছয়। এর পর সাবিত্রীকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
রবিবার রাতে রক্তাক্ত অবস্থায় সাবিত্রীকে মাটিগাড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বিজয়ের পরিবারের দাবি, গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছিলেন সাবিত্রী। পরে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্তের পর জানা যায় ফাঁসি নিয়ে নয়, শরীরে একাধিক আঘাতের জেরে মৃত্যু হয় সাবিত্রীর।
এর পরই সাবিত্রীর দেহ নিয়ে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে যায় বাপের বাড়ির লোকেরা। কিন্তু বাড়িতে কেউ উপস্থিত না থাকায় গেট ভেঙে দেহ নিয়ে বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করেন তাঁরা। শুরু হয় বাড়ি ভাঙচুর। আগুন লাগিয়ে দেওয়ার উপক্রম হলে প্রধাননগর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিয়ন্ত্রণে আনে পরিস্থিতি।
অন্য দিকে, পুলিশি অসহযোগিতার অভিযোগ করে মৃতের ভাই দীপক শাহ বলেন, ‘‘ময়নাতদন্তে জানা গিয়েছে আমার বোনকে খুন করা হয়েছে। ওর শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলছে আত্মহত্যা করেছে। আমরা দোষীদের শাস্তি চাই এবং বোনের সন্তানের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করার দাবি জানাই। কিন্তু পুলিশ কোনও তদন্ত করেনি।’’ মৃতার মা মিঠু শাহের অভিযোগ, ‘‘মাঝে মধ্যেই ১ লক্ষ থেকে ২ লক্ষ টাকা চেয়ে মারধর করত। জামাইয়ের অনেক সম্পর্ক ছিল। তা নিয়েও অশান্তি চলত। পুলিশ কোনও তদন্ত করছে না। আমারা এই খুনের বিচার চাই।’’
তবে মৃতের পরিবার চম্পাশরী প্রধান সড়ক অবরোধ করলে লাঠি চার্জ করে তাঁদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। এই ঘটনা প্রসঙ্গে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। আমরা বিষয়টি দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy