Advertisement
E-Paper

এসএসসি: অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করে কি আইন ভেঙেছিল মমতার মন্ত্রিসভা? মঙ্গলবার মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে

এসএসসির প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় গত সপ্তাহেই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এ বার অতিরিক্ত পদ সংক্রান্ত মামলায় রাজ্যের বক্তব্য শুনবেন শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি।

এসএসসিতে অতিরিক্ত শূন্যপদ সংক্রান্ত মামলা মঙ্গলবার শুনবে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চ।

এসএসসিতে অতিরিক্ত শূন্যপদ সংক্রান্ত মামলা মঙ্গলবার শুনবে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৫ ২২:৩০
Share
Save

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার এজলাসে মঙ্গলবার রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগের সুপারনিউমেরারি (অতিরিক্ত) পদ সংক্রান্ত মামলার শুনানি রয়েছে। এত দিন এসএসসির প্রায় ২৬ হাজার চাকরি সংক্রান্ত মামলার সঙ্গেই এই মামলাটি চলেছে। গত বৃহস্পতিবার ২৬ হাজার চাকরি সংক্রান্ত মামলায় রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। ওই সময়েই জানিয়ে দেওয়া হয়, মঙ্গলবার সুপারনিউমেরারি পদের বিষয়ে রাজ্যের বক্তব্য শোনা হবে।

এসএসসিতে নিয়োগের জন্য প্রায় ছ’ হাজার সুপারনিউমেরারি পদ তৈরি হয়েছিল, যার উপর বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ রয়েছে। এই মামলায় কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়েছিল সিবিআই চাইলে রাজ্যের মন্ত্রিসভার সদস্যদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। সেই নির্দেশের উপরও স্থগিতাদেশ রয়েছে। মঙ্গলবার সুপারনিউমেরারি পদের বিষয়ে রাজ্য কী জানায় প্রধান বিচারপতির এজলাসে, সে দিকে নজর রয়েছে সকলের। হাই কোর্টের এক আইনজীবী অবশ্য বলছেন, “আইন অনুসারে সুপারনিউমেরারি পদ যেমন খুশি তৈরি করা যায় না। এক মাত্র বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি হলেই এটি তৈরি করতে হয়।”

কোন কোন ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পদ তৈরি করা যায়? ওই আইনজীবীর মতে, আদালতের নির্দেশের প্রেক্ষিতে এটি করা যেতে পারে। আবার রাজ্যও বিশেষ পরিস্থিতিতে তা করতে পারে। এই ব্যাখ্যা দেওয়ার সময়ে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। আইনজীবী জানান, রায়ের একটি অনুচ্ছেদে আদালত লিখেছে, যাঁরা অন্য জায়গায় সরকারি চাকরি করতেন এবং সেখানে ইস্তফা দিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছেন। চাকরি বাতিলের পরে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ওই চাকরিহারাদের পুরনো জায়গায় নিয়োগ দিতে হবে। আইনজীবীর মতে, এ ক্ষেত্রে যদি দেখা যায় পুরনো চাকরির ক্ষেত্রে শূন্যপদ নেই, সেই সময় প্রয়োজনে সুপারনিউমেরারি পদ তৈরি করা যেতে পারে। আদালতের নির্দেশমতো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে পুরনো জায়গায় চাকরি দিতে হবে। এ দিকে ওই ব্যক্তির জায়গায় সেখানে যিনি কাজ করতেন, তাঁকেও ছাঁটাই করা যাবে না। সে ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তিকে পুরনো কর্মক্ষেত্রে বহাল করার জন্য যাঁকে সরানো হচ্ছে, তাঁর জন্য সুপারনিউমেরারি পদ তৈরি করা যেতে পারে।

আবার রাজ্যও কোনও বিশেষ পরিস্থিতিতে সুপারনিউমেরারি পদ তৈরি করতে পারে। কোন বিশেষ পরিস্থিতি সেটিরও ব্যাখ্যা দিয়েছেন হাই কোর্টের আইনজীবী। তিনি জানান, কারও কাজের জন্য দফতরে অনেক উন্নতি ঘটলে এবং সরকার যদি মনে করে দফতরের জন্য তাঁকে আরও কিছুদিন প্রয়োজন, সে ক্ষেত্রে বিশেষ পরিস্থিতিতে এই অতিরিক্ত পদ তৈরি করা যেতে পারে। আইনজীবীর মতে, “এমন কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতেই কেবল সুপারনিউমেরারি পদ তৈরি করা যায় এবং তা-ও খুব সীমিত সংখ্যায়। ২০০-৫০০ পদ তৈরি করা যায় না।” তিনি আরও জানান, বিশেষ পরিস্থিতিতে কোনও সুপারনিউমেরারি পদ তৈরি করা হলেও, সেই চাকরির মেয়াদ সাধারণত স্বাভাবিক চাকরির মতো হতে পারে না। স্বল্পমেয়াদের জন্য তৈরি করা যায় এই ধরনের পদ।

এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআই তদন্তের প্রেক্ষিতে কিছু ‘অযোগ্যে’র চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন। ওই সময়েই প্রায় ছ’হাজারের কাছাকাছি সুপারনিউমেরারি পদ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা দফতর। এই মর্মে বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয়। রাজ্য মন্ত্রিসভাতেও ওই সিদ্ধান্তে অনুমোদন দেওয়া হয়। মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের অভিযোগ, বেআইনি নিয়োগ বাঁচানোর জন্যই সুপারনিউমেরারি বা অতিরিক্ত পদ তৈরি করা হয়েছিল। ওই মামলার শুনানিতে তৎকালীন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্যের মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন।

পরে এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চে যায়। গত বছরের ২২ এপ্রিল বিশেষ বেঞ্চও জানায়, সুপারনিউমেরারি পদ তৈরির সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। সিবিআই প্রয়োজনে মন্ত্রিসভার সদস্যদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে বলেও জানিয়েছিল হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ সুপারনিউমেরারি পদ তৈরি নিয়ে মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়। ওই স্থগিতাদেশ এখনও রয়েছে।

SSC CJI Sanjiv Khanna West Bengal School West Bengal School Service Commission

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}