সমাবর্তনের মঞ্চে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শনিবার কোচবিহারের পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচন হিংসাশ্রয়ী হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন বিজেপির কোচবিহার জেলা নেতারা। পঞ্চায়েত নির্বাচন সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েনের দাবিও জানান তাঁরা। তৃণমূল অবশ্য বলছে, লোকসভা, বিধানসভা ভোটের পরে, বিজেপির জন প্রতিনিধিদের মানুষ পাশে পাননি। বিজেপি পঞ্চায়েত ভোটে নিশ্চিত পরাজয়ের আশঙ্কায় অপপ্রচারের চেষ্টা করছে। এ নিয়ে দুই শিবিরের তরজা প্রকাশ্যে এসেছে।
শনিবার কোচবিহারের পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যোগ দেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। পরে, সার্কিট হাউজ়ে বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায়, দুই বিধায়ক—নিখিলরঞ্জন দে, মালতী রাভা-সহ এক প্রতিনিধি দল তাঁর সঙ্গে দেখা করে। বিজেপির অভিযোগ, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোচবিহারে ভোটের নামে শাসক দল প্রহসন করেছে। ফল প্রকাশের পরেও, তৃণমূলের রোষের মুখে পড়তে হয় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক দল তেমন বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা করবে। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, “বিগত দিনে শাসক দলের হিংসার তথ্য রাজ্যপালকে জানান হয়। এ বার সুষ্ঠু পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে হলে যে আধা সামরিক বাহিনী প্রয়োজন, সে কথাও জানানো হয়।” এই প্রসঙ্গে বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে-র দাবি, “গত পঞ্চায়েত ভোটের পরে, জেলা জুড়ে আমাদের বারোশো’র বেশি কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর হয়। ৪০০ কর্মী জেলার পার্টি অফিসে আশ্রয় নেন। এ বারও তেমন হিংসার চেষ্টা হবে। তাই আধা সামরিক বাহিনীর দাবি করা হয়।”
অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের পাল্টা দাবি, “ওদের (বিজেপি) জনপ্রতিনিধিদের মানুষের পাশে দেখা যায় না। সভায় লোক হচ্ছে না। আগামী পঞ্চায়েতে নিশ্চিত পরাজয় বুঝেই আগাম কাঁদুনি গাইছেন। হিংসা ছড়ানোর লোক বিজেপিতেই আছে, সবাই জানে।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, “আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস সাংবিধানিক দৃষ্টিভঙ্গিতেই বর্তমান রাজ্যপাল গোটা বিষয়টি দেখবেন। কোনও দলের দৃষ্টিতে নয়। শান্তিপূর্ণ ভাবেই আগামী পঞ্চায়েত ভোট হবে।” তাঁর সংযোজন, “সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিরীহ বাসিন্দাদের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। বিজেপি নেতারা রাজ্যপালকে তা জানালে খুশি হতাম।” বিজেপি নেতা নিখিলরঞ্জন দে-র পাল্টা তোপ, “সীমান্তে চোরাচালান, অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে জওয়ানদের উপরে হামলা হলে আত্মরক্ষা না করে তাঁরা কি ফুল ছুড়বেন? দেশের সুরক্ষা সবার আগে।” দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এ দিন অভিযোগ করেন, ‘‘কোচবিহারে বেশ কয়েক জন প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক গরু পাচারে সরাসরি জড়িত। বিএসএফ পাচার আটকানোর প্রাণপণ চেষ্টা করছে। কিন্তু রাজ্য পুলিশের সহযোগিতা পাচ্ছে না।’’ তৃণমূলের কোচবিহার জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণের পাল্টা মন্তব্য, ‘‘পুরোপুরি মিথ্যে কথা। মিথ্যার উপরে রাজনীতি করতে চাইছে বিজেপি। তৃণমূলের কেউ গরু পাচারের সঙ্গে যুক্ত নয়। এটা বিজেপির মধ্যেই আছে।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতির অভিযোগের প্রসঙ্গে কোচবিহার জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘এমন রাজনৈতিক বক্তব্যের কোনও উত্তর হয় না। বিএসএফ কিছু বললে, নিশ্চয়ই উত্তর দেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy