মাজিদ আনসারি।ফাইল চিত্র।
জন্ডিসের জন্য কোচবিহার কলেজের গুলিবিদ্ধ ছাত্র মাজিদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাই পরিবার ঝুঁকি না নিয়ে তাকে দিল্লির একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। পরে তাঁর পরিবারের লোকেরা জানান, চিকিৎসক জানিয়েছেন, এই অবস্থায় মাজিদকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া যাবে না। তবে তাঁরা যে এখানে চিকিৎসায় খুশি নন, তা-ও জানিয়েছেন।
পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য সরকারের তরফে পেলে সুবিধা হয়। মাটিগাড়ার ওই হাসপাতাল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ওই ছাত্রের ক্ষুদ্রান্ত্র এবং বৃহদান্ত্র যেভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল, তা দ্রুত মেরামত করেই তাকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছিল। কিন্তু সব রকম চেষ্টার পরেও ছেলেটির সুস্থ হতে শুরুও করেছিল। কিন্তু তার মধ্যে জন্ডিস হওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে।
কিন্তু, গুলিকাণ্ডে কেউ ধরা পড়েনি কেন? পুলিশের একাংশের দাবি, কলকাতার একটি বাড়িতে লুকিয়ে আছে মাজিদ আনসারি গুলিকান্ডে অভিযুক্তরা। এমনকি ২১ জুলাইয়ের দিনও তাঁরা কলকাতাতেই তৃণমূল কর্মীদের ভিড়ে মিশে ছিল বলেও খবর পৌঁছেছে পুলিশের কাছে। ২১ জুলাইয়ের আগে অন্তত তিন দিন হাজার তৃণমূল কর্মী ট্রেনে চেপে কলকাতায় যান। সেই ভিড়ে লুকিয়ে কলাকাতা যাওয়া সহজ ব্যাপার বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “জোরদার তল্লাশি চলছে।”
গত ১১ জুলাই শুক্রবার বিকেল ৪টা নাগাদ কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাজিদ। তিনি কোচবিহারে কলেজে পড়াশোনা করেন। টিএমসিপির ওই কলেজে ইউনিটের আহ্বায়ক মাজিদ। তাঁকে যারা গুলি করেছে বলে অভিযোগ, তাঁরাও ওই কলেজের প্রাক্তন ছাত্র। সেই সঙ্গে তাঁরাও টিএমসিপি কর্মী বলে পরিচিত। এই অবস্থায়, ওই ঘটনায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। কলেজের দখলদারি কার হাতে থাকবে তা নিয়েই দুই পক্ষের মধ্যে বচসা হয় বলে অভিযোগ।
টিমসিপির কোচবিহারের কার্যকরী সভাপতি সায়নদীপ গোস্বামী অভিযোগ করেন, ‘‘অভিযুক্তরা বেআইনি ভাবে স্নাতকবর্ষে ছাত্র ভর্তি করাতে চড়াও হয়েছিলেন কলেজে। মাজিদ সহ কলেজের অনেকেই তাতে বাধা দেন। সেই রাগেই রাস্তায় আটকে মাজিদকে গুলি করা হয়।’’
কোচবিহারের এই খবর পৌঁছে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তার পরেও অবশ্য অভিযুক্তরা এখনও গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ দানা বেঁধেছে।
পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়।
সম্প্রতি অভিযুক্তদের গতিবিধি জানতে পেরেছে পুলিশ। এক পুলিশ কর্তা বলেন, “অভিযুক্তদের মধ্যে কয়েকজনের নাম আগেও একাধিক মামলাও রয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই অভিযুক্তরা পুলিশের চোখকে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু বেশি দিন সম্ভব হবে না। জোরদার তল্লাশি শুরু করেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy