এ বার রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ অস্থায়ী উপাচার্য দীপককুমার রায়কে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার অনুরোধ করলেন। উপাচার্য আড়াই মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন না। মঙ্গলবার রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় বাংলোয় চা-চক্রের আয়োজন করেন উপাচার্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দশম বর্ষ পূর্তিতে উপাচার্যের আমন্ত্রণে ওই চা-চক্রে স্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক মিলিয়ে ৬০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা হাজির হন। নানা সমস্যা সমাধানে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেন তাঁরা। উপাচার্য ওই অনুরোধে সাড়া দেননি বলে দাবি। তবে তিনি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একতা, লক্ষ্য ও উন্নয়ন বজায় রাখার অনুরোধ করেন। ওই চা-চক্রে রেজিস্ট্রার দুর্লভ সরকার-সহ আধিকারিক ও শিক্ষাকর্মীর একাংশ আমন্ত্রণ না পাওয়ায় বিতর্ক শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও পঠনপাঠন পরিচালনা সংক্রান্ত নানা কাজ করেন রেজিস্ট্রার। সেই রেজিস্ট্রার চা-চক্রে না থাকায় উপাচার্যের পরামর্শ ও অনুরোধ কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রশ্ন উঠেছে।
উপাচার্য ফোন ধরেননি। কবে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন, সে বিষয়ে মোবাইল বার্তায় তাঁর জবাব মেলেনি। রেজিস্ট্রার বলেন, “উপাচার্যের চা-চক্রে আমন্ত্রণ পাইনি। তাই মন্তব্য করব না। কিছুদিন আগে আধিকারিকেরা তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার অনুরোধ করেছিলেন।” শিক্ষকদের একাংশের দাবি, উপাচার্য ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে চা-চক্রের আয়োজন করেছিলেন। আড়াই মাস উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে না আসায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠন, প্রশাসনিক ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নানা কাজে সমস্যার বাড়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে হাজির বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বাবুলাল বালা বলেন, “চা-চক্রের আসরে শিক্ষক ও শিক্ষিকারা উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার অনুরোধ করেছেন। তিনি এ বিষয়ে আমাদের কিছু জানাননি।”
গতবছর অগস্টে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে শিক্ষাকর্মী তথা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি তপন নাগকে ‘সাসপেন্ড’ করেন উপাচার্য। এর পরে তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মীরা অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করায় গত ৫ ডিসেম্বর থেকে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন না। সমিতির বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যবেক্ষক বিজয় দাস বলেছেন, “উপাচার্য কাদের চা-চক্রের আসরে ডাকবেন, তা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। তবে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এলে তাঁর কাছে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের প্রশ্নের জবাব চাওয়া হবে।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)