দিন দুয়েক আগে বাঁশবোঝাই গাড়ির ধাক্কায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েন পাঞ্জিপাড়ার বাসিন্দা শোভা। একটি বাঁশ তাঁর বুকের বামদিক দিয়ে ঢুকে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়। আক্ষরিক অর্থেই এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে গিয়েছিল তাঁর বুক।
চার ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার।
প্রৌঢ়ার বুক এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়েছিল বাঁশ। দুর্ঘটনার কবলে পড়ে জীবনমরণ সঙ্কটে পড়েছিলেন উত্তর দিনাজপুরের পাঞ্জিপাড়ার বাসিন্দা শোভা দেবী (৫৫)। তাঁকে সঙ্কটমুক্ত করলেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এমন জটিল অস্ত্রোপচারে সাফল্য পাওয়ায় খুশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
দিন দুয়েক আগে বাঁশবোঝাই গাড়ির ধাক্কায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েন পাঞ্জিপাড়ার বাসিন্দা শোভা। একটি বাঁশ তাঁর বুকের বামদিক দিয়ে ঢুকে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়। আক্ষরিক অর্থেই এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে গিয়েছিল তাঁর বুক। গুরুতর জখম শোভাকে প্রথমে বিহারের পুর্ণিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। তার পর সেখান থেকে কিসানগঞ্জে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখান থেকে অবশ্য উন্নত চিকিৎসার জন্য শোভাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় এ রাজ্যেই। তাঁকে ফের স্থানান্তরিত করা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। রবিবার রাতে তাঁকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। এর পরই পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নেয়।
শোভার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাতেই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেয় উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগীর শারীরিক পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকায় জরুরিকালীন ভিত্তিতে রাতেই সাত সদস্যের একটি বোর্ড গঠন করে শুরু হয় অস্ত্রোপচার। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের শল্যবিভাগের প্রধান অমরেন্দ্র সরকারের নেতৃত্বে হয় অস্ত্রোপচার। বোর্ডে ছিলেন আদর্শ বল্লভ নামে আরও এক চিকিৎসক। অস্ত্রোপচারে সাফল্য মেলে। শোভার বুক থেকে বার করা হয়েছে বাঁশের ওই খণ্ডটি। তা ফরেনসিক পরীক্ষার জন্যও পাঠিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার জেরে শোভার ফুসফুসে আঘাত লাগেনি। তবে চিকিৎসকদের আশঙ্কা ছিল হৃৎপিণ্ডের পরিস্থিতি নিয়ে। সেই পরীক্ষাতেও উতরে গিয়েছেন শোভা। তাঁর পাঁজরেও আঘাত রয়েছে। তা ধীরে ধীরে সারানো সম্ভব বলে আশাবাদী চিকিৎসকরা। হাসপাতালের অ্যানাস্থেসিয়া বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অভিষেক গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘রবিবার মেডিক্যাল কলেজে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি হন রোগী। সোমবার অস্ত্রোপচার করার কথা থাকলেও, রবিবার রাতেই জরুরি ভিত্তিতে সাত সদস্যের দল গঠন করে অস্ত্রোপচার হয়। ভোর তিনটে থেকে শুরু হয় অস্ত্রোপচার। প্রায় চার ঘন্টা ধরে চলে ওই প্রক্রিয়া। এর পর রোগীকে ভেন্টিলেশনে স্থানান্তরিত করা হয়। রোগী আগের তুলনায় খানিকটা উন্নতি করেছে। আশা রাখছি, খুব দ্রুত তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। তবে এ ধরনের জটিল অস্ত্রোপচার আগে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হয়নি।’’
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডিন সন্দীপ সেনগুপ্তের কথায়, ‘‘আমরাও এই ধরনের পরিস্থিতির জন্য তৈরি। সেটা এই ঘটনা প্রমাণ করছে। রাতে ওই মহিলাকে আনা হয়েছিল। তখনই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যদিও রোগীর অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy