nতবুও মানব থেকে যায়: করোনা আবহে জন্ম এই শিশুকন্যার। তাই হাসপাতালের লোকেরা আদর করে তার নাম দিয়েছে করোনা। মায়ের সঙ্গে বাড়ি গেল সে (বাঁ দিকে)।
মাত্র দিন সতেরো হয়েছে সে মায়ের কোলে এসেছে। এখন দিনভর মায়ের কোলেই ঘুমিয়ে কাটে তার সময়। এ হেন খুদে, ছোট্ট ওই শিশুকন্যার নাম হয়ে গিয়েছে ‘করোনা’। বাবা-মা অন্য নাম রেখেছে বটে, কিন্তু বাকি সবাই এখন ওই নামেই ডাকে ওই খুদেকে। কিন্তু হঠাৎ এই নাম কেন?
লকডাউনের মধ্যে শিলিগুড়ি থেকে উত্তরপ্রদেশের বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করছিলেন অবধেশ কুমার এবং তাঁর স্ত্রী অঞ্জলি। তাঁরা মাটিগাড়া থানা এলাকায় ভাড়া থাকতেন। ফেরার সময় রাস্তায় তাঁদের ধরে ফেলে পুলিশ। ওই দম্পতিকে নিয়ে আসা হয় পাতিকলোনির বাণীমন্দির স্কুলের কোয়রান্টিন কেন্দ্রে। তখন অঞ্জলি গর্ভবতী ছিলেন। প্রসবযন্ত্রণা উঠলে তাঁকে শিলিগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে ১৭ দিন আগে সুস্থ শিশুকন্যার জন্ম দেন অঞ্জলি। এমন টালমাটাল সময়ে জন্ম বলেই ওই শিশুকে ‘করোনা’ নামে ডাকছেন কোয়রান্টিন কেন্দ্রের বাসিন্দারা।
অঞ্জলি বলেন, ‘‘মেয়ের নাম আমি রেখেছি অনিতা। ওর আরও একটু যত্ন দরকার। কিন্তু কবে বাড়ি ফিরতে পারব জানি না।’’ মা অনিতা নাম দিলেও ওই নামে কেউ ডাকে না।
কোয়রান্টিন কেন্দ্রের এক বাসিন্দা সকলদেও শর্মা বলেন, ‘‘নাম তো একটা রয়েছে। কিন্তু এরকম একটা বিশেষ পরিস্থিতি জয় করে বাচ্চাটি সুস্থ রয়েছে বলে সকলেই ওকে আদর করে করোনা ডাকে।’’ তবে তাতে অবশ্য অঞ্জলিদেবীর খুব একটা আপত্তি নেই। কোলের মেয়ের নাম রোগের নামে হলেও হাসিমুখেই মেনে নিয়েছেন তিনি।
পাতিকলোনির ওই কেন্দ্রে ৭২ জন আবাসিক রয়েছেন। তার মধ্যে নতুন সদস্য ‘করোনা’কে নিয়ে মোট ৯ জন শিশু রয়েছে। খাওয়া দাওয়ার অসুবিধা তেমন নেই। নিয়মিতভাবে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষাও হচ্ছে বলে জানান স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। তবে শিশু ও বাচ্চার আরও বেশি যত্ন প্রয়োজন। এখন ওই দম্পতির জন্য একটি আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করেছে সেখানকার কর্তৃপক্ষ।
শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক সুমন্ত সহায় বলেন, ‘‘শুনেছি ওই শেল্টার হোমে একটি শিশুকন্যা হয়েছে। নজর রাখছি, যাতে ওর কোনও অসুবিধা না হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy