Advertisement
০৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Mamata Banerjee

দার্জিলিঙে উন্নয়ন বোর্ডের কার্যকলাপে রাশ টানলেন মমতা, কর্মসংস্থানের জন্য নয়া ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধিতে পাহাড়ে চারটি প্রতিষ্ঠান খোলার কথা ঘোষণা করেছেন মমতা। ওই সব প্রতিষ্ঠানে পাহাড়ের যুবক-যুবতীরা তিন মাসের কারিগরি শিক্ষা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চাকরির সুযোগ পাবেন।

Mamata Banerjee

রিচমন্ড হিলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:২৬
Share: Save:

দার্জিলিংবাসীর সামগ্রিক উন্নয়নে একগুচ্ছ প্রকল্পের ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তরুণ প্রজন্মকে বিভিন্ন কাজের উপযোগী করে তুলতে চারটি ‘স্কিল সেন্টার’ চালু করার কথাও জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার রিচমন্ড হিলে পাহাড় সফরের দ্বিতীয় দিনে মমতা জিটিএ, দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলা প্রশাসন এবং বিভিন্ন উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের সঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠক করেন। আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে সমস্ত উন্নয়ন বোর্ড পুনর্গঠন করার পাশাপাশি ওই সমস্ত বোর্ডের অডিট, প্রকল্পের অগ্রগতির উপর নজরদারির জন্য ‘মনিটরিং সেল’ তৈরি করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।

সেলের চেয়ারম্যান করা হবে জিটিএ-র চিফ এগ্‌জ়িকিউটিভ অনিত থাপাকে। ভাইস চেয়ারম্যান করা হবে মিরিক পুরসভার প্রশাসক তথা হিল তৃণমূলের চেয়ারম্যান এলবি রাইকে। এ ছাড়া মনিটরিং কমিটিতে রাখা হবে দুই জেলার জেলাশাসকদের। মমতা বলেন, ‘‘ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের পুনর্নির্মাণ করা হবে। এর জন্য জিটিএ চেয়ারম্যান-সহ চিফ এগ্‌জ়িকিউটিভ-সহ বিভিন্ন ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের সদস্যদের কাছে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে। আগামী দেড় মাসের মধ্যেই সেই কাজ সম্পূর্ণ হবে। তত দিন পর্যন্ত যে ভাবে কাজ চলছিল, সে ভাবেই চলবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কাজের সুবিধার জন্য একটি মনিটরিং সেল করা হবে। অনিত (থাপা) যে হেতু জিটিএ-র নির্বাচিত প্রতিনিধি, তাঁকেই ওই সেলের চেয়ারম্যান করা হবে। আর এলবি রাই হবেন ভাইস চেয়ারম্যান।’’

পাহাড়ের উন্নয়নে একাধিক উদ্যোগের কথাও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ট্র্যাফিকের সমস্যা সমাধানে অত্যাধুনিক পার্কিংয়ের ব্যবস্থার পাশাপাশি একটি মার্কেট কমপ্লেক্স নির্মাণের ছাড়পত্র দিয়েছেন তিনি। ওই কমপ্লেক্সের দুটো তলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ করা হবে। কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধিতে পাহাড়ে চারটি প্রতিষ্ঠান খোলার কথাও ঘোষণা করেছেন মমতা। ওই সব প্রতিষ্ঠানে পাহাড়ের যুবক-যুবতীরা তিন মাসের কারিগরি শিক্ষা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চাকরির সুযোগ পাবেন। চা-বাগানের শ্রমিকদের আরও বেশি করে পাট্টা দেওয়ার কথাও বলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিটি জেলার ক্ষেত্রেই এক একরের মতো জমি খুঁজতে বলা হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা সম্পূর্ণ হয়েছে। সেখানে পিপিই মডেলে বহুতল গড়ে তোলা হবে। বাজার, পার্কিং, সিনেমা হল থাকবে। স্বনির্ভর গোষ্টীর জন্য দু’টি ফ্লোর থাকবে। তারা সেখানে নিজেদের তৈরি দ্রব্যের পসরা নিয়ে বসবে।’’

বৈঠকের পর অনিত বলেন, ‘‘দিদি পাহাড়ে এলে কিছু নিতে নয়, দিতেই আসেন। তিনি পাহাড়ের উন্নয়ন চান। সেটা পাহাড়বাসী ধীরে ধীরে বুঝতে পারছেন। আমরা সরকারের সঙ্গে মিলে আগামী দিনে আরও উন্নয়নের কাজ করব। আমরা বরাবর রাজ্য সরকারের সঙ্গে রয়েছি। দিদি পাহাড়কে খুব ভালবাসেন। পাহাড়ে উন্নয়নযজ্ঞ নিয়ে আমরা আশাবাদী।’’

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের পাহাড়ে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন স্তিমিত হওয়ার পরেও নির্বাচিত জিটিএ বোর্ড না-থাকায় উন্নয়নের জন্য পৃথক পৃথক বোর্ড গঠন করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন সব মিলিয়ে মোট ১৬টি উন্নয়ন বোর্ড গঠন করা হয়েছে। প্রতি বছর ওই বোর্ডগুলির জন্য ২ কোটি টাকা করে বরাদ্দ করা হত। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ওই সব বোর্ডের কাজ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করে। জিটিএ-র তৎকালীন প্রশাসক এবং বর্তমান চিফ এগ্‌জ়িকিউটিভ অনিত থাপা-সহ জেলা প্রশাসনের কাছে ভূরিভূরি অভিযোগ যায়। সূত্রের খবর, মঙ্গলবারের বৈঠকে সেই সব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেই ওই বোর্ডগুলিকে জিটিএ এবং জেলা প্রশাসনের প্রস্তাব অনুযায়ী পুনর্গঠন করার পাশাপাশি মনিটরিং সেল তৈরির সিদ্ধান্ত নেন মমতা।

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Darjeeling
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy