শিকার: মৃত চিতাবাঘটির দেহ। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
মুখের একাংশ থেঁতলে গিয়েছে, রক্তের চাপ চাপ দাগ। গায়ের ডোরাকাটা ঢেকেছে কাদায়। নর্দমা থেকে তোলা চিতাবাঘের নিথর দেহ দেখে বনকর্মীদের ধারণা, চিতাবাঘটিকে পিটিয়েই মারা হয়েছে। মঙ্গলবার চিতাবাঘটির দেহ উদ্ধার হয়েছে ধূপগুড়ির মরাঘাট এবং হলদিবাড়ি চা বাগানের সংযোগস্থল থেকে।
এ দিন একটি নর্দমায় চিতাবাঘটির দেহ দেখতে পেয়ে বন দফতরে খবর দিয়েছিলেন চা শ্রমিকেরা। দফতরের অনুমান, গত সোমবার সন্ধে থেকে রাতের মধ্যে চিতাবাঘটিকে পিটিয়ে খুন করে নর্দমায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল। বনকর্মীদের প্রাথমিক অনুমান, বাঁশ অথবা ভারী কোনও বস্তু দিয়ে চিতাবাঘটির মাথায় আঘাত করা হয়েছিল। যার কারণে নাক-মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ হয় চিতাবাঘটির। এমনকি, শাবকটির মাথার খুলির হাড় ভেঙে ভিতরে ঢুকে গিয়েছে। এর আগে ডুয়ার্সের চা বাগানে বিষ দিয়ে চিতাবাঘ মারা হয়েছে। পিটিয়ে চিতাবাঘ খুনের অভিযোগও রয়েছে।
বন দফতর সরকারি ভাবে এই চিতাবাঘটিকে পিটিয়ে মারার কথা না বললেও দফতরের সকলেই এ ব্যাপারে প্রায় নিশ্চিত। রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন ডুয়ার্সেই ছিলেন। তিনি বলেন, “ঘটনাটি শুনেই খারাপ লাগছে। যদি পিটিয়ে মারা হয়ে থাকে, তাহলে যারা জড়িত সকলকে খুঁজে বের করে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
মরাঘাট এবং হলদিবাড়ি দুই চা বাগানেই মাঝেমধ্যে চিতাবাঘের হানা চলছিল বলে দাবি চা শ্রমিকদের একাংশের। কারও বাড়ি থেকে মুরগি নিয়ে যাওয়া, গবাদি পশু মেরে ফেলা লেগেই ছিল বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। যে চিতাবাঘটির দেহ উদ্ধার হয়েছে সেটি মধ্যবয়স্ক। জলপাইগুড়ির বন্যপ্রাণী বিভাগের ডিএফও নিশা গোস্বামী বলেন, “চিতাবাঘটির মুখের কাছে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শরীরের অন্য অংশে বাইরের দিকে তেমন গুরুতর আঘাত নেই। ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। সেই রিপোর্ট পেলে নিশ্চিত করে বলা যাবে। তবে আমরা কোনও সম্ভাবনাই উড়িয়ে দিচ্ছি না।”
এ দিন প্রথমে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিন্নাগুড়ির বন্যপ্রাণী স্কোয়াড। আসেন জলপাইগুড়ি সাম্মানিক ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন সীমা চৌধুরীও। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় গরুমারা জাতীয় উদ্যানে। সেখানেই লাটাগুড়ি প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে ময়না তদন্ত করার কথা।
সীমা চৌধুরী বলেন, “মনে হচ্ছে ভারী কিছু দিয়ে মারা হয়েছে ওই চিতাবাঘটিকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy