Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Higher Secondary Exam 2024

দিদির মোটরবাইকে করেই পরীক্ষাকেন্দ্রে হাজির রিফা

পরীক্ষা সকাল ৯ টা ৪৫ মিনিট থেকে শুরু হবে। পৌঁছতে হবে ৯টার মধ্যে। এলাকার সহপাঠী পরীক্ষার্থীদের সঙ্গেই টোটোতে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার কথা ছিল রিফার।

দিদির মোটরবাইকে করে পরীক্ষাকেন্দ্রের পথে রিফা।

দিদির মোটরবাইকে করে পরীক্ষাকেন্দ্রের পথে রিফা। নিজস্ব চিত্র।

তাপস পাল
মাথাভাঙা শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:২২
Share: Save:

এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন ভাল নয়। যদিও তা বলে বাড়ির মেয়ে মোটরবাইক চালাতে শিখছেন, তা সবার খুব একটা ভাল লাগত না। এ নিয়ে প্রায়শই ‘কটাক্ষ’ শুনতে হয়েছে। বিপদে কাজে লেগে গেল সেই শিক্ষাই। মোটরবাইক চালিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী বোনকে ১২ কিলোমিটার দূরে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দিলেন দিদি।

শুক্রবার, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন সকালে টোটো বেরিয়ে যাওয়ায় চিন্তায় পড়ে যান মাথাভাঙার রিফা তামান্না। সে সময়ে বোনকে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নেন দিদি রেশমা বানু। গাড়ি নেই তো কী, বাবার মোটরবাইক চালিয়েই রওনা হন দুই বোন। কোচবিহারের মাথাভাঙা ১ ব্লকের জোড়পাটকি গ্রাম পঞ্চায়েতের নগর গোপালগঞ্জে থেকে ১২ কিলোমিটার মোটরবাইক চালিয়ে রিফাকে মাথাভাঙা গালর্স স্কুলে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিলেন রেশমা।

পরীক্ষা সকাল ৯ টা ৪৫ মিনিট থেকে শুরু হবে। পৌঁছতে হবে ৯টার মধ্যে। এলাকার সহপাঠী পরীক্ষার্থীদের সঙ্গেই টোটোতে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার কথা ছিল রিফার। কিন্তু তিনি টোটো ‘মিস’ করেন। খবর নিয়ে জানা যায়, তত ক্ষণে চলে গিয়েছে এলাকার ছোটো গাড়িটিও। পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনো নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান রিফা-সহ গোটা পরিবার। রিফার বাবা রাবিউল আলম গ্রামীণ চিকিৎসক। এ দিন সকালে পাশের গ্রামে রোগী দেখায় ব্যস্ত ছিলেন তিনি। ফলে, সে সময়ে বাড়িতে ছিলেন না কোনও পুরুষ। এগিয়ে আসেন দিদি রেশমা। বাবার মোটরবাইক বার করে বোন রিফাকে পিছনে বসিয়ে রওনা হন তিনি। ধরলা নদীর বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে ছোটে মোটরবাইক। ঠিক সময়ে মাথাভাঙা গালর্স স্কুলে পৌঁছেও যান জোড়পাটকি হাই স্কুলের ছাত্রী রিফা।

সদ্য নার্সিং পাশ করা রেশমা বলেছেন, ‘‘যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত না থাকায়, সকালের দিকে আমাদের গ্রামে গাড়িঘোড়া পাওয়া সমস্যার। যে টোটোতে বোনের যাওয়ার কথা ছিল, তা বেরিয়ে যাওয়ায়, বিপদে পড়ে যাই। শেষমেশ, আমাকেই মোটরবাইকে বোনকে পৌঁছে দিতে হয়।’’

রেশমা জানান, উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময়ে বাবা তাঁকে মোটরবাইক চালানো শিখিয়েছিলেন। তা নিয়ে নানা সময়ে টিপ্পনীও শুনতে হয়েছে তাঁদের। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা তিন বোনই মোটরবাইক চালাতে পারি। রয়েছে ড্রাইভিং লাইসেন্সও। সমাজ বদলেছে। মেয়েরা এখন কিছুতেই পিছিয়ে নেই। আজ মোটরবাইক চালানোটা কাজে লেগে গেল। বোনকে ঠিক সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে পেরে, ভাল লাগছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Mathabhanga HS Exam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy