প্রতীকী ছবি।
কামারশালার আড়ালে এ বার বেআইনি অস্ত্র কারখানার হদিস মিলল আলিপুরদুয়ার জেলায়। টোটোপাড়ায় ওই অস্ত্র কারখানার খোঁজ পেয়েছে মাদারিহাট থানার পুলিশ। ওই কামারশালা তথা অস্ত্র কারখানার মালিক-সহ চার জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এক জনের কাছে উদ্ধার হয়েছে একটি একনলা বন্দুক (ওয়ান শাটার), এক রাউন্ড গুলি। কত দিন ধরে এই বেআইনি অস্ত্রের কারবার চলছে বা এই কারবারের জাল কতটা বিস্তার করেছে, তা জানতে ধৃতদের দু’জনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাদারিহাটের রবীন্দ্রনগর এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় সাহা নামে এক ব্যক্তির কাছে আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে বলে গোপন সূত্রে খবর পায় মাদারিহাট থানার পুলিশ। সেই খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতেই সঞ্জয়ের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। উদ্ধার হয় একনলা বন্দুক ও এক রাউন্ড গুলি। সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। ধৃতকে জেরা করে ওই রাতেই খয়েরবাড়ির বাসিন্দা মেঘরাজ তামাং ও লঙ্কাপাড়ার বিকাশ রাইকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, এই দু’জনের হাত বদল হয়েই সঞ্জয়ের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র পৌঁছয়।
তবে তিন জনকে একসঙ্গে জেরার সময় আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য জানতে পারে পুলিশ। মেঘরাজ ও বিকাশ পুলিশকে জানান, তাঁরা টোটোপাড়ার বাসিন্দা রুস্তম বিশ্বকর্মার কাছ থেকে অস্ত্রটি কিনেছিল। আর রুস্তম একটি কামারশালা চালান। এর পরেই সেখানে হানা দেয় পুলিশ। পুলিশের জেরায় রুস্তম একনলা বন্দুকটি তৈরির কথা স্বীকার করে নেন। তাঁকেও গ্রেফতার করে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, এক সময় রুস্তমের বাবা ভুটানে অস্ত্র তৈরির কারখানায় কাজ করতেন। বাবার কাছ থেকেই বন্দুক তৈরি শিখেছিলেন তিনি।
গত কয়েক বছরে মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকে একাধিক অপরাধমূলক ঘটনা ঘটেছে। যার বেশ কয়েকটিতে গুলি চালানো বা গুলিতে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। ওই এলাকায় কী করে এত অস্ত্র পৌঁছচ্ছে, তা নিয়ে বিভিন্ন সময় সরব হয়েছেন অনেকেই। এই পরিস্থিতিতে টোটোপাড়ায় বেআইনি অস্ত্র তৈরির কারখানার হদিশ মেলার ঘটনায় চিন্তায় পুলিশকর্তাদের একাংশও। যদিও তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের কেউ কেউ বলছেন, রুস্তমের হয়তো কাজটা জানা ছিল। তার জন্য কখনও কখনও অস্ত্র তৈরি করত সে। কিন্তু এই কাজে আর কাউকে নিয়োগ করা হয়েছিল কিনা প্রাথমিক তদন্তে সেটা তাঁদের কাছে এখনও স্পষ্ট নয়।
তবে বিষয়টিকে লঘু করে দেখতে নারাজ পুলিশ। আর তাই, এই জাল রুস্তম কতটা বিস্তার করেছে কিংবা তাঁর এই কাজের সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত সেটাও খতিয়ে দেখতে শুরু করেছেন তদন্তকারিরা। জয়গাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ধৃতদের মধ্যে দু’জনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের জেরা করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy