শিলিগুড়ির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিবেকানন্দ রোডের কাছে এইভাবেই পড়ে ছিল আর্বজনা। ছবি: বিনোদ দাস।
পতঙ্গবিদেরা সতর্ক করার পরেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। ওয়ার্ডে যত্রতত্র পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের পাত্রে, এলাকায় জল জমে মশা জন্মাচ্ছে। এর জেরে, ডেঙ্গিতে ‘কাঁপছে’ শিলিগুড়ি পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড। হাসপাতাল, নার্সিংহোমে ডেঙ্গি নিয়ে ভর্তি ওয়ার্ডের দু’জন। তাঁদের এক জন সম্প্রতি ডেঙ্গি সংক্রমণ নিয়ে মৃত বালিকার আত্মীয়। একই বাড়ির বাসিন্দা।
মৃত বালিকার মা মেয়ের মৃত্যুর পর হাত জোড় করে এলাকা পরিষ্কারের অনুরোধ করেছিলেন পুর কর্তৃপক্ষের কাছে। তার পরেও এলাকায় সাফাইয়ের কাজ না হওয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের স্বামীনগরের বাসিন্দা সাড়ে নয় বছরের বালক উদয় জোয়ারদার ওরফে আরব ডেঙ্গির সংক্রমণ নিয়ে বর্ধমান রোডের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছে। তার পরিস্থিতি সঙ্কটজনক। দু’দিন আগে নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হলে নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। হেমারোজিক ডেঙ্গি বলে সন্দেহ চিকিৎসকদের। আরবদের কয়েকটি বাড়ির পরে থাকেন রফিক হুসেন। ডেঙ্গি নিয়ে শিলিগু়ড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি তিনিও। সম্প্রতি সংক্রমণ নিয়ে মৃত জায়না খাতুনের দাদু তিনি। ওই ওয়ার্ডের স্বামীনগর এলাকায় ডেঙ্গির সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ। এলাকায় শিবির করে বাসিন্দাদের রক্ত পরীক্ষা জরুরি বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশ। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তুলসী প্রামাণিক বলেন, ‘‘ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’
পুরসভার বিরোধী দলনেতা বিজেপি অমিত জৈন বলেন, ‘‘বালিকার মৃত্যুর পরে, তা ডেঙ্গি নয় বলে প্রমাণ করতে পুরসভা স্বাস্থ্য দফতর মরিয়া ছিল। অথচ, এলাকায় সাফাইয়ের কাজ, বাসিন্দাদের বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষা, রক্ত পরীক্ষা— কিছুই করা হচ্ছে না।’’
এলাকায় আরও কয়েক জন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। আরবের মামা কার্তিক মাহাতো বলেন, ‘‘দু’দিন আগে গভীর রাতে ভাগ্নের নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়। তাকে নার্সিংহোম ভর্তি করানো হয়েছে। উদ্বেগে রয়েছি।’’ রফিক হুসেনের আত্মীয় মহম্মদ হানিফ বলেন, ‘‘হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। চিকিৎসা চলছে।’’
এই দু’জনকে ধরে শহরে এক দিনে তিন জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। অপর জন ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তাঁরও চিকিৎসা চলছে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে। কলকাতা থেকে সম্প্রতি পতঙ্গবিদেরা এসে ১, ৫, ৭, ৩৩, ৩৪, ৪৬ ও ৪৭ নম্বরের মতো ওয়ার্ড ‘বিপজ্জনক’ বলে জানান। নিজের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে সচেতনতা প্রচারে বেরিয়ে একাধিক জায়গায় পরিত্যক্ত জমিতে ডোবার মতো জল জমেছে বলে নজরে পড়ে মেয়রের। দ্রুত সেগুলো পরিষ্কারের নির্দেশ দেন। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি পিন্টু ঘোষ বলেন, ‘‘এলাকা সাফাই হচ্ছে। কোথাও সমস্যা হলে দেখা হচ্ছে।’’
সহ প্রতিবেদন: কৌশিক চৌধুরী
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy